বৃহস্পতিবার ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

মান্দায় আদালতে মামলা করায় বাদী বিপাকে ॥ মামলা তুলে নিতে রান্নাঘর ভাংচুর করে মাকে জিম্মি

  |   শনিবার, ২১ জানুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট

মান্দায় আদালতে মামলা করায় বাদী বিপাকে ॥ মামলা তুলে নিতে রান্নাঘর ভাংচুর করে মাকে জিম্মি

Mamla
এম এম হারুন আল রশীদ হীরা, মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মান্দায় আদালতে মামলা করায় বাদী বিপাকে পড়েছেন। মামলা তুলে না নেওয়ায় আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে রান্নাঘর ভাংচুর করে ২টি চুলা মাটির সাথে গুড়িয়ে দিয়েছে। বাদী ও তার মা আয়েশা বেগম (৬৫) কে জিম্মি করে রেখেছে। ঘটনাটি গতকাল সকালে উপজেলার প্রসাদপুর ইউপি’র প্রসাদপুর গ্রামে ঘটেছে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। ঘটনায় হারুন আল রশীদ হীরা ১০জনের নাম উল্লেখ করে মান্দা থানায় একটি লিখিত এজাহার দাখিল করেছেন। উপ-পরিদর্শক আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কিন্তু মামলা নথিভূক্ত না হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বর্তমানে বাদী বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

মান্দা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক হারুন আল রশীদ হীরা জানান, ঘটনার দিন গতকাল বেলা অনুমান সাড়ে ১১টার দিকে সন্ত্রাসী আফছার, আবদুস সালাম, আবদুল মতিন.নাদিম অন্যান্য আসামীদের পরোচনায় ও সহযোগিতায় রান্না ঘরের টিনের ছাউনী খুলে ফেলে ২টি চুলা ভেঙ্গে মাটির সাথে গুড়িয়ে দেয়। পরে আসামীরা বাদীর অংশের মধ্যে বসবাসরত মা আয়েশা বেগমের ঘরে প্রবেশ করে তান্ডবলীলা চালিয়ে ২টি চাল ভর্তি ডাম, কাচা তরিতরকারী, হাড়ি.পাতিল, থালা বাসনসহ অন্যান্য জিনিসপত্র সন্ত্রাসী কায়দায় লুট করে নিয়ে যায় এবং তছনছ করে ।

বাড়ি ফিরলে মারপিট করে খুন-জখমের হুমকী দেয়। গত ১৯/০১/২০১৭ তারিখে আসামীরা আদালতে উপস্থিত না হয়ে উল্টো মামলা তুলে নিতে নানা রকম হুমকী-ধামকী দিচ্ছে। ব্যর্থ হয়ে মামলা তুলে নিতে বাদী হীরাকে ও তার মা আয়েশা বেগমকে জিম্মি করে ভয়-ভীতি দেখিয়ে মামলা তুলে নিতে বেআইনীভাবে প্রবল চাপ অব্যহত রেখেছে। মামলা তুলে নিতে মা আয়েশা বেগমকে বাড়ি থেকে বের হতে না দিয়ে জিম্মি করে আঁটকিয়ে রেখে দাবী আদায়ের জঘন্য পথ বেছে নিচ্ছে বলে ও বাদী হীরা জানান।

মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিছুর রহমান জানান, ঘটনায় সাংবাদিক হারুন আল রশীদ হীরার লিখিত এজাহার পেয়ে তদন্তের জন্য উপ-পরিদর্শক আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

থানায় এজাহার দাখিল সূত্রে জানা গেছে, পিতা আজিম উদ্দিনের ছেড়ে দেওয়া ঘরে হারুন আল রশীদ হীরা ২০০১ সাল থেকে বসবাস করে আসছিল। পিতার মৃত্যুর পর থেকে ঐ ঘরসহ তার ২.৮২৫৯ শতাংশ বাড়ি ভিটার অংশে আসামী মামুনুর রশিদ মামুন ২০১২ সালে জোর পূর্বক অন্যান্য আসামীদের যোগসাজসে দখলে নেয়ার চেষ্ঠা করে। হীরা বাড়ি ভিটার অংশের মধ্যে নানা রকমের চারা গাছ রোপণ করে। কিন্তু প্রায় ২৫ বছর ধরে শত্র“তা করে আসা আসামী আমিনুল ইসলাম আফছার সহ্য করতে না পেরে রাতের অন্ধকারে শত্র“তাবশতঃ হিংসা ও জিঘাংসামূলকভাবে জালের বেড়াসহ কাঁঠাল, আম গাছ ভেঙ্গে দেয় এবং পেঁপের গাছ উঁপড়ে ফেলে প্রায় এক হাজার টাকার ক্ষতি করে। পরে আবারো বেড়া দিয়ে আম.নারকেল সুপারি রোপণ করে।

এছাড়া পেঁপেসহ লাউ,মিষ্টি কুমড়া,শীম, শসা রোপণ করে মাচা তৈরি করে দেয়। কিন্তু আমিনুল ইসলাম (আফসার) (৫০),আব্দুস সালাম (৪৭), মামুনুর রশিদ মামুন (৩৩), এম এ মতিন (৩০),আলমগীর কবির (২৮) ,নুরুন্নাহার বেগম (৩৫),নইম সিদ্দিকী নাদিম (২২),মাহমুদা বেগম (৩০), আমিনা বেগম (২৩)এবং সুমী আক্তার (২২) গণ সহ এলাকার কতিপয় কুচক্রিদের সহযোগিতায় নানা সময়ে অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে আসছে। প্রায়ই সময় তারা একজোটবদ্ধ হয়ে হীরাকে মারপিট করে জখম করে। নিরুপায় ও সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি হওয়ায় এবং পরিবারে শান্তি কামনায় এলাকাবাসির পরামর্শে কোন আইনী ব্যবস্থা না নেয়ায় আসামীরা আস্কারা পেয়ে বারবার সব অন্যায়-অত্যাচার নির্যাতন করে আসছে।

দীর্ঘদিন ধরে সব অন্যায় কার্যক্রম মুখ-বুজে সহ্য করে চলার পর অবশেষে আইনী প্রতিকার পেতে গত ২০/১১/২০১৬ খ্রিঃ তারিখে মান্দা থানায় একটি লিখিত এজাহার দাখিল করে। উপ-পরিদর্শক মজিবর রহমান ঘটনাস্থলে তদন্ত করতে গেলে আসামীরা প্রচন্ড রেগে মারপিটসহ নানা হুমকী দেয়। ঘটনায় নওগাঁ আদালতে ০৪/১২/২০১৬ খ্রি তারিখে ৬৭০ নম্বরে একটি মিস কেস করে। গত ৩১/১২/২০১৬ খ্রিঃ তারিখে দু’জন লোক আদালত থেকে জারি হওয়া উক্ত মিস কেসের নোটিশ নিয়ে বাড়িতে এলে আসামীরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে প্রকাশ্যেই বলে হাত-পা ভেঙ্গে ঘরে পঙ্গু করে ফেলে রাখবে। ঘটনার পেক্ষাপটে হীরার মা আয়েশা বেগম বাড়ি থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে দেন।

আদালতের লোকজন চলে যাওয়ায় এবং হীরাকে না পেয়ে বেলা সাড়ে অনুমান ১২টার দিকে আসামী আবদুস সালাম ও নাদিম তার ঘরের জানালা ভেঙ্গে দেয়। বাঁশ ও জালের বেড়া ভেঙ্গে তিনটি আম গাছ, দুটি পেঁপে, দুটি সুপারিগাছ সহ নানা রকম ফুলের গাছ ভেঙ্গে ও কেটে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়। এতে প্রায় পাঁচ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। বর্তমানে হীরা তাদের মারপিটসহ নানা হুমকী ও প্রাণনাশের আশংকায় বাড়ি ফিরতে পারছেন না। আসামীরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তাকে বাঁচতে দিতে চায় না। ঘটনায় থানায় অভিযোগ করলে উপ-পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঐ ঘর থেকে উচ্ছেদ করার জন্য নানা পাঁয়তারা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে বর্তমানে কিছুদিন পরপর নানা অজুহাতে গোন্ডগোলের সৃষ্টি করে চলেছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৩:৫৬ | শনিবার, ২১ জানুয়ারি ২০১৭

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১৩১৫১৬১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭৩০৩১  
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com