
| শনিবার, ২১ জানুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সুষ্ঠু নির্বাচন কমিশন গঠনে যে ১৩ দফা দিয়েছেন আ.লীগের নেতারা সেটাকে অন্ত:স্বারশূন্য বললেও রাষ্ট্রপতি এই প্রস্তাবকে ইতিবাচক হিসেবে দেখেছেন এবং অন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনাও করেছেন। পাশাপাশি জনগনের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটানোর জন্য রাষ্ট্রপতি একটি নিরপেক্ষ ইসি গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখবেন বলে আশা প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জিয়া পরিষদের প্রতিনিধি সম্মেলনে এ কথা বলেন ফখরুল।
ফখরুল বলেন, এ সরকার রাষ্ট্রের কাঠামো ও গণতন্ত্র ধ্বংস করে দিচ্ছে, পাশাপাশি বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করে নিয়েছে।
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সরকার বলছে দেশে উন্নয়নের নহর বয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সে উন্নয়ন কোথায়? তথাকথিত উন্নয়ন দিয়ে দেশের কোন উপকারে আসবে না।
তিনি বলেন, আগামী মাসের শুরুতেই শেষ হচ্ছে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ। তার আগেই নতুন নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। আর এই সিদ্ধান্তের আগে গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ৩১টি দলের সঙ্গে কথা বলেছেন। দলগুলো রাষ্ট্রপ্রধানকে আলাদা আলাদা প্রস্তাব দিয়েছে। এসব প্রস্তাবের আলোকে সবার কাছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে আশার কথা বলেছেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতির এই আলোচনা শুরুর এক মাস আগে নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে ১৮ নভেম্বর ১৩ দফা প্রস্তাব দেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এতে তিনি সব দলের মধ্যে ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তা সম্ভব নয়। কারণ তার নাম মানুষের মনে গেঁথে আছে।’
নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দিতে জনগণের চোখের ভাষা বুঝে সার্চ কমিটি করার আহ্বানও জানান বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রত্যাশা করবো রাষ্ট্রপতি একটি নিরপেক্ষ ও যৌগ্য সার্চ কমিটি গঠন করবেন এবং এর মাধ্যমে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন হবে।’
ভোট নিতে ডিজিটাল ভোটিং মেশিন-ডিভিএম চালুর বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদের পরিকল্পনায় ষড়যন্ত্র দেখছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি একে দেখছেন কারচুপি করে আওয়ামী লীগকে চিরদিন ক্ষমতায় রাখার ষড়যন্ত্র হিসেবে।
এর আগে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে আগামী সংসদ নির্বাচনে ই ভোটিং চালুর প্রস্তাব দেয় আওয়ামী লীগ। দলটি মনে করে, এই পদ্ধতি জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে আরও কার্যকর হবে।
তবে মির্জা ফখরুল বলছেন, এই পদ্ধতি কারচুপিকে নতুন মাত্রা দেবে। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনেই ই-ভোটিং নিয়ে ঝামেলা তৈরি হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘সিইসি এখন বলছেন ইভিএম নয়, ডিজিটাল ভোট করবেন। অর্থাৎ আওয়ামী লীগকে চীরদিন ক্ষমতায় রাখতে যা যা করতে হবে তা করবে এই নির্বাচন কমিশন।’
শুক্রবার কুমিল্লায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, তার আমলে সব কটি নির্বাচন সফল হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে বর্তমানে নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে না। কিন্তু আমরা এ পর্যন্ত যতগুলো নির্বাচন করেছি, সবগুলোই সফল হয়েছি।’
সিইসির এই বক্তব্যের জবাব দেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘৫ (২০১৪ সালের) জানুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচন, পাঁচ ভাগ ভোটকে ৪০ ভাগ দেখানো, প্রথম দুই দফা উপজেলা নির্বাচনে ফলাফল সরকারের পক্ষে না যাওয়ায় পরের তিন দফায় কারচুপি করা, পৌর ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কারচুপি করায় নির্বাচন কমিশন সফল হয়েছে।’
আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান কবির মুরাদের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, উপদেষ্টা আব্দুল কুদ্দুস প্রমুখ।
Posted ০৭:৫৩ | শনিবার, ২১ জানুয়ারি ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain