| রবিবার, ০৮ জানুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের রাডার ক্রয় সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় পুনরায় সাক্ষ্যগ্রহণ ও আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে নিস্পত্তির নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষের করা আপিলের নিস্পত্তি করে রোববার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এর ফলে মামলাটি বিচারিক আদালতে যেভাবে চলমান ছিল সেভাবেই চলবে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে মামলার আরেক আসামি সাবেক বিমান বাহিনীর প্রধান সুলতান মাহমুদের আপিলের প্রেক্ষিতে অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি নিজামুল হক ২ জানুয়ারি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির দিন ধার্য্য করেন। সেই ধারাবাহিকতায় রোববার (০৮ জানুয়ারি) মামলাটি শুনানির জন্য আসলে হাইকোর্টের আদেশ বাতিল করে দেন আপিল বিভাগ।
এর আগে ২৪ নভেম্বর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রায় দিয়েছিলেন। রায়ে মামলাটি যুক্তিতর্কের পর্যায় থেকে প্রত্যাহার করে প্রসিকিউশনের সাক্ষীদের পুনরায় জেরার সুযোগ দিতে বলা হয়। একইসঙ্গে মামলার কার্যক্রম ৩১ মার্চের মধ্যে শুনানি শেষ করতে বলা হয়।
চলতি বছর ৭ নভেম্বর এরশাদের বিরুদ্ধে রাডার কেনায় দুর্নীতির মামলাটিতে পুনরায় সাক্ষ্যগ্রহণের দুদকের আবেদন খারিজ করে দেন ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কামরুল হোসেন মোল্লা। নিম্ন আদালতের এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করে দুদক।
দুই যুগ আগের করা এই মামলাটি বিচারের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছানোর পর ২০১৪ সালে ঢাকার তৎকালীন বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবদুর রশীদ শুনানিতে বিব্রত বোধ করেন। এরপর মামলাটি কামরুল হোসেন মোল্লার আদালতে আসে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মামলাটি এখন যুক্তিতর্কের পর্যায়ে রয়েছে।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ১৯৯২ সালের ৪ মে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো মামলাটি দায়ের করে। ১৯৯৪ সালের ২৭ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। ১৯৯৫ সালের ১২ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এই মামলায় ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষী নিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে যুক্তিতর্কের পর্যায়ে রয়েছে। তবে দুদক ন্যায়বিচারের স্বার্থে বাকি সাক্ষীদের সাক্ষ্য নেওয়া প্রয়োজন বলে দুদক আবেদন করে।
অভিযোগে বলা হয়, তৎকালীন বিমান বাহিনী প্রধান সদর উদ্দিন আহমেদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কাছে বাহিনীর জন্য যুগোপযোগী রাডার ক্রয়ের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপতির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় ফ্রান্সের থমসন সিএসএফ কোম্পানি নির্মিত অত্যাধুনিক একটি হাই পাওয়ার রাডার ও দুটি লো লেভেল রাডার ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।
তৎকালীন সেনাবাহিনী প্রধান এরশাদসহ অপর আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে আর্থিক সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে থমসন সিএসএফ কোম্পানির রাডার না কিনে বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্টিং কোম্পানির রাডার কেনে। এতে সরকারের ৬৪ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯১৮ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়।
এরশাদ ও সুলতান মাহমুদ ছাড়া এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বিমান বাহিনীর সাবেক সহকারী প্রধান মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ও ইউনাইটেড ট্রেডার্সের পরিচালক এ কে এম মুসা। মামলার শুরু থেকে মুসা পলাতক রয়েছেন।
Posted ০৯:১২ | রবিবার, ০৮ জানুয়ারি ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain