| বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট
হালিম মোহাম্মদ ও ইসমাঈল হুসাইন ইমু
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরের সময়ে কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে জেল সুপারের সাথে গোয়েন্দা কর্মকর্তা পরিচয়ে বহিরাগত এক সন্ত্রাসীর প্রবেশ নিয়ে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
জেল কোডে কারাগারের ভেতরে প্রবেশে কঠোর বিধি নিষেধের মাঝেও খুবই স্পর্শকাতর একটি ফাঁসি কার্যকরের সময়ে সর্বোচ্চ সতর্কতাবস্থায় জঙ্গি নামের এক বহিরাগতর তৎপরতায় অন্যান্য কারা কর্মকর্তারাও চমকে যান।
সর্বত্রই আলোচনায় আসে কে এই জঙ্গি।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১মিনিটে ফাঁসী কার্যকরের পর কারাগারের সামনে অপেক্ষমান শত শত সাংবাদিক ও ক্যামেরার দৃস্টি ছিল কারগারের প্রধান ফটকের দিকে। সাড়ে ১০টার পর কারাগারের প্রধান ফটক খুলে প্রথম বেরিয়ে আসেন জেল সুপার ফরমান আলীসহ কয়েকজন কর্মকর্তা।
অন্যন্য কর্মকর্তাদের চেনা গেলেও জেল সুপারের সাথে বের হওয়া গোয়েন্দা কর্মকর্তার পরিচয়ে জঙ্গিকে অনেকেই চিনতে পারেননি। তবে কারা সংশ্লিষ্ট সকলেই তাকে চেনেন জঙ্গি মামা হিসেবে।
পুরো নাম আপ্তাবুর রহমান জঙ্গি।
নব্বইয়ের দশকের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও হত্যা মামলার আসামী হিসেবে দীর্ঘদিন জেল খাটেন। তিনি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছের লোক। জেল সুপার ফরমান আলীর বন্ধু হলেও সবাই ডাকেন জঙ্গি মামা নামে। তাই কারাগারে জঙ্গি মামা নামে পরিচিতি পান।
টিভি ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ অনুসন্ধানে দেখা যায় ফাঁসি কার্যকরের পর সিনিয়র জেল সুপারের সাথে কেন্দ্রীয় কারাগরের প্রধান ফটক দিয়ে জঙ্গি বের হয়ে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিতে থাকে।
জেল সুপার, পুলিশ ও র্যাব কর্মকর্তাদের সাথে প্রধান ফটকের সামনে দাড়িয়ে তাদেরকে নানা তৎপরতা দেখায়। তবে কারাগারের ভেতরে ফাঁসি কার্যকরের জঙ্গির প্রবেশ ছিল না বলে জানান সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী।
তিনি জানান, মনা হত্যার আসামী হিসেবে জেলখানায় তার সাথে পরিচিতি হলে সে ভেতরে প্রবেশ করেনি। তবে কারাগারের অন্যান্য কর্মকর্তারা জানান ফাঁসী কার্যকরের সময়ে শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথেও জঙ্গি ভেতরে ছিল।
অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছের লোক হিসেবে কারা বিভাগে এই জঙ্গির বিশেষ কদর রয়েছে। কারা কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বদলী, পদোন্নতি, ঠিকাদারী ব্যবসাসহ কর্মকান্ডে রয়েছে তার প্রভাব।
শীর্ষ সন্ত্রাসী বিকাশের মুক্তিও হয়েছে তার মধ্যস্থতায়। সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মহিউদ্দিন খাল আলমগীরের বাসা ও অফিসে তার ছিল অবাধ যাতায়াত।
তদুপরি চাঞ্চল্যকর ফাঁসি কার্যকরের সময়ে কঠোর বিধি নিষেধের মাঝে বহিরাগত এই জঙ্গির প্রবেশের উদ্দেশ্য কি ছিল তা নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
[লেখক: সিনিয়র রিপোর্টার, আমাদের সময়।]
Posted ০০:৪৪ | বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin