ঢাকা: প্রয়াত নন্দিত কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদ আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তার স্মৃতির স্মারক রেখে গেছেন তার অমূল্য সৃষ্টি আর তার স্ত্রী সন্তানদের। আজ ১২ ডিসেম্বর হুমায়ূন আহমেদ ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী শাওনের বিয়েবার্ষিকী। হুমায়ূনহীন শাওন একাই পালন করছেন এ দিনটি। কিন্তু তার একাকীত্বকে খুব একটা অনুভব করতে দিচ্ছে না তার দুই সন্তান নিষাদ এবং নিনিত। বাবা মার বিয়ে বার্ষিকীতে নিষাদ তার মাকে উপহার দিয়েছে নিজের হাতে আঁকা শুভেচ্ছা কার্ড।তবু শাওনের মনে বিষাদের ছায়া।শাওন তবু মজা করে ঘোষনা দিলেন নিষাদের বিয়ে দিবেন তিনি। তারপর নিষাদের বউয়ের সাথে তিনি বাকি জীবন হুমায়ূনের গল্প করেই কাটিয়ে দিবেন।
নিজের বিয়ে বার্ষিকীর দিনে হুমায়ূনকে স্মরণ করে ফেসবুকে শাওন লিখেছেন-
ডিসেম্বর ১২, ২০০৪।
আমার বিয়ে।
অদ্ভুত এক কারনে আমাকে বিয়ে করার জন্য এই দিনটিই বেছে নিলেন হুমায়ূন আহমেদ। বললেন
“২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর খুব ধুমধাম করে আমরা দিনটা পালন করবো…”
………
কাল রাত ১২ টা ১ মিনিটে লাজুক ভঙ্গিতে নিষাদ নিজের তৈরি করা কার্ড আমার হাতে দিল। সঙ্গে তার বেস্ট ফ্রেন্ড অন্বয় এবং অন্বয়ের বড় ভাই অমিয়।
অন্বয় অমিয়’র মা নিষাদের স্বর্ণা চাচীমনি তাকে জিজ্ঞেস করল
“বলতো বাবা আজকের দিনে কি হয়েছিল..?”
নিষাদ লাজুক হাসি দিয়ে বলল
“আমার বাবার সাথে আমার মা’র বিয়ে হয়েছিল।”
তারপর দেখি আমার ট্যানটা বাবা লজ্জায় আর আমার দিকে তাকাচ্ছে না।
“শাওন-পুত্র নিষাদ একদিন বড় হবে। সে অবশ্যই ভালবেসে অতি রূপবতী কোনো তরুণীকে বিয়ে করবে। প্রকৃতির অমোঘ বিধানে সেই বিয়েতে আমি উপস্থিত থাকব না। তবে আমি চাই খুব ধুমধাম করে সেই বিয়ে হোক। যেন ছেলের বিয়ের আনন্দ দেখে শাওন তার নিজের আয়োজনহীন নিঃসঙ্গ বিয়ের স্মৃতি পুরোপুরি ভুলে যায়।” — বলপয়েন্ট, হুমায়ূন আহমেদ।
ভাবছি বড় পুত্র নিষাদের বিয়ে দিয়ে দিব। তারপর ছেলের বউয়ের সাথে তার শ্বশুরের ভালবাসার পাগলামির গল্প করবো…
উল্লেখ্য, হুমায়ূন আহমেদের প্রথম স্ত্রীর নাম গুলতেকিন আহমেদ। তাঁদের বিয়ে হয় ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে। এই দম্পতির তিন মেয়ে এবং দুই ছেলে। তিন মেয়ের নাম বিপাশা আহমেদ, নোভা আহমেদ,শীলা আহমেদ এবং ছেলের নাম নুহাশ আহমেদ। অন্য আরেকটি ছেলে অকালে মারা যায়। ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যভাগ থেকে শীলার বান্ধবী এবং তার বেশ কিছু নাটক-চলচ্চিত্রে অভিনয় করা অভিনেত্রী শাওন সাথে হুমায়ূন আহমেদের ঘনিষ্ঠতা জন্মে। এর ফলে সৃষ্ট পারিবারিক অশান্তির অবসানকল্পে ২০০৪-এ গুলতেকিনের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ হয় এবং ঐ বছরই শাওনকে বিয়ে করেন। এ ঘরে তাদের তিন ছেলে-মেয়ে জন্মগ্রহণ করে। প্রথম ভূমিষ্ঠ কন্যাটি মারা যায়। ছেলেদের নাম নিষাদ হুমায়ূন ও নিনিত হুমায়ূন