নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ১৪ জুন ২০২৩ | প্রিন্ট
উত্তর-পূর্ব আরব সাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় উপকূলের দিকে তীব্র গতিতে এগোচ্ছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে এটি ভারতের গুজরাটের সৌরাষ্ট্র এবং সংলগ্ন পাকিস্তান উপকূলে আঘাত হানতে পারে আবহাওয়া দফতর সূত্রে বলা হয়েছে। ঝড়টি বর্তমানে পোরবন্দর থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে পূর্ব-মধ্য আরব সাগরে অবস্থান করছে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) বুধবার সকালে গুজরাটের সৌরাষ্ট্র, কচ্ছ উপকূলে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। ঘূর্ণিঝড়টি গুজরাট ও পাকিস্তানের দেশের বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানবে বলে ধারণা করছেন তারা। এরইমধ্যে দেশ দুটি বিভিন্ন স্তরে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। বুধবার সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আঘাত হানার সময় ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৯৫ কিমি প্রতি ঘণ্টা হতে পারে। আগামীকাল সন্ধ্যার দিকে এটি গুজরাটের সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছের ওপর দিয়ে বয়ে যাবে। গুজরাটের জাখাউ বন্দরের ওপর দিয়ে ভূ-ভাগে আছড়ে পড়বে বিপর্যয়।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় এর পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। ঘূর্ণিঝড়ে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য সকলকে নির্দেশ দিয়েছেন।
গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল এবং রাজ্যের আটটি সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত জেলার সাংসদরা একটি বৈঠক করেছেন।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে এরইমধ্যে ব্যাপক সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। গুজরাটের উপকূলীয় এলাকার প্রায় ৩৫ হাজার মানুষকে ইতোমধ্যেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে পাকিস্তানও। দেশটির সিন্ধু প্রদেশের করাচীর উপকূলীয় এলাকাগুলো থেকে ইতোমধ্যেই ১ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক সালমান শাহ জানিয়েছেন, পাকিস্তানের উপকূলীয় এলাকা থেকে ৩৫ হাজারের বেশি লোককে ইতোমধ্যেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আরও ৬৫ হাজার লোককে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে।
ভারতীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ এর বেশ কয়েকটি দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া ভারতীয় সেনাবাহিনীও ত্রাণ প্রচেষ্টায় সহায়তা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে এবং কৌশলগত বিভিন্ন স্থানে ত্রাণ মজুদও রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে বেসামরিক প্রশাসন এবং এনডিআরএফের সঙ্গে নিজের পরিকল্পনাগুলোর সমন্বয় করছে সেনাবাহিনী।
দুই ধাপে চলছে উদ্ধারকাজ। প্রথম পর্যায়ে সমুদ্র উপকূলের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারী লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে, উপকূলের ৫ থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারী লোকদের সরিয়ে নেওয়া হবে।
এছাড়া মহারাষ্ট্রের উপকূলবর্তী বহু জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঝোড়ো হাওয়ার জেরে সমুদ্র উত্তাল হয়েছে। মুম্বাই বিমানবন্দরের রানওয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ট্রেন যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং ট্রেন চলাচল নিশ্চিত করতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে দেশটির পশ্চিম রেলওয়ে। ফলে ৬৯টি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে এবং ৩২টি ট্রেনের গন্তব্যস্থল তথা যাত্রাপথ কমিয়ে আনা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের প্রভাবে উত্তাল ভারতের মুম্বাইয়ের উপকূলে নেমে ডুবে গেছে চার কিশোর। আর গুজরাটে প্রবল বৃষ্টি ও তীব্র বাতাসে ধসে যাওয়া দেয়ালের নিচে চাপা পড়ে নিহত হয়েছেন আরও তিনজন। সূএ : ডেইলি-বাংলাদেশ
Posted ০৮:৫৫ | বুধবার, ১৪ জুন ২০২৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain