| শনিবার, ১৭ মে ২০১৪ | প্রিন্ট
১৭ মে: নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাবের চাকরিচ্যুত দুই সেনা কর্মকর্তার পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চাঁদনী রূপমের আদালতে মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় পুলিশ দুই কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করলে পাঁচ দিন করে মঞ্জুর করেন আদালত। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে এ রিমান্ড শুনানি চলে।
শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে লে. কর্নেল তারেক সাঈদ নিজেই নিজের সাফাই গান। তাদের পক্ষে এ সময় কোন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। এ সময় গণমাধ্যমকে দোষারোপ করেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাই তারেক সাঈদ।
তিনি বলেন, ছয় কোটি টাকা নেয়ার যে অভিযোগ উঠেছে তা সম্পূর্ণভাবে গণমাধ্যম তৈরি করেছে। এর কোন সত্যতা নেই। নিহত নজরুলের শ্বশুরের কথার ওপর ভিত্তি করে মিডিয়া ঢালাওভাবে আমাদের অভিযুক্ত ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করছে, যা সঠিক ও সত্য নয়। এ সময় তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বক্তব্য দেন। তবে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে র্যাবের আরেক কর্মকর্তা মেজর আরিফ কোন ধরনের বক্তব্য দেননি।
তারেক সাঈদ বলেন, আমাকে ১০ দিন না আরো বেশি দিন রিমান্ড দেয়া হোক, কোনো আপত্তি নেই আমার। আমরাও চাই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হোক।
আদালত চলকালীন আইনজীবীরা তারেক সাঈদের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। জনাকীর্ণ আদালতে পুলিশি বেষ্টনির মধ্যে তারেক সাঈদ ও আরিফুল হোসেনের দিকে অনেককে থুথুও ছুড়তে দেখা যায়।
আইনজীবীদের ক্ষোভ প্রকাশের মধ্যে তারেক সাঈদ বক্তব্যের শুরুতেই চন্দন সরকারের জন্য শোক প্রকাশ করেন এবং বলেন, একজন আইনজীবীকে খুন করা হলো। এতে সব আইজীবী ক্ষুব্ধ হবে এটাই স্বাভাবিক।
‘র্যাবকে ঢালাওভাবে দোষী করা হচ্ছে’ তারেক সাঈদের এমন বক্তব্যে আদালতে থাকা আইনজীবীদের মধ্য থেকে বলা হয়, আমরা বলিনি র্যাব জড়িত। আপনার মতো গুটিকয়েক কর্মকর্তা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। আপনারাই এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।
র্যাবের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের চেষ্টা চলছে দাবি করে এ সময় তারেক সাঈদ বলেন, সাত খুন ছাড়াও আরো অপহরণের অভিযোগ তোলা হচ্ছে র্যাবের বিরুদ্ধে।
তবে আদালতে দুই র্যাব কর্মকর্তা নিজেদের নির্দোষ দাবি করলেও রাষ্ট্রপক্ষে ১০ দিনের রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন আইনজীবীরা। শুনানি শেষে বিচারক দুই কর্মকর্তাকে ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন আইনজীবীরা। তারা বিচারিক কক্ষের ভেতরেই তুমুল হৈ চৈ শুরু করেন এবং বিচারকের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন।
৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর শেষে আদালত থেকে অভিযুক্ত র্যাবের দুই কর্মকর্তাকে শহরের মাসদাইরে জেলা পুলিশ লাইনে নেয়া হয়। সেখানেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এর আগে, সাবেক এ দুই র্যাব কর্মকর্তাকে হাতকড়া না পরিয়ে আদালতে আনায় আইনজীবীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তখন বিচারকের নির্দেশে আদালতের ভেতর দুজনকে হাতকড়া পরানো হয়।
র্যাবের দুই কর্মকর্তার রিমান্ড শুনানি উপলক্ষ্যে এর আগে সকাল থেকেই নারায়ণগঞ্জ আদালত পাড়ায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়।
এর মধ্যে দুই কর্মকর্তার ১০দিন করে ও কামালের সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন সাত খুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ মন্ডল। প্রায় ৪০ মিনিট রিমান্ড শুনানি চলে। শেষে বিচারক দুই কর্মকর্তার ৫ দিন করে ও কামালকে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
Posted ১২:৫৩ | শনিবার, ১৭ মে ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin