| সোমবার, ০৪ জানুয়ারি ২০২১ | প্রিন্ট
বিএম. মাহবুব, মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি:
১৯৭০ সাল, ঢাকা পল্টন ময়দানে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় নেতা আসবে। কোন এক সময় প্রতিক্ষিত সেই কালজয়ী পুরুষ জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
অনেক কাছ থেকে তার ভাষন শুনে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। দল থেকে কখনও কিছু চাইনি, পেতেও চাইনা। আজও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর আদর্শ বুকে ধারন করে বেঁচে আছি।
দীর্ঘদিন পরে হলেও আজকের প্রধানমন্ত্রী মমতাময়ী মা বাংলার জননী জননেত্রী শেখ হাসিনা দলের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়নে বুনিয়াদি আওয়ামী লীগ কর্মীদের খোঁজার তাগিদ। সেলুট নেত্রী শেখ হাসিনা আপনাকে।
কথাগুলো বল্লেন বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার জিউধরা ইউনিয়নের অজোপাড়া গা লক্ষিখালী গ্রামের আওয়ামী লীগের প্রবীন ও ত্যাগী নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইসমাইল হোসেন মৃধা (৭৮)।
স্বাধীনতার যুদ্ধে দেশ মাতৃকার টানে সেদিন ৯নং সেক্টরের সুন্দরবন সাব সেক্টরে বৈদ্যমারী ক্যাম্পের একজন সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধা সদস্য হিসেবে যুদ্ধে অংশ গ্রহন করে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে। কিন্তু দুর্ভাগ্য যুদ্ধে অংশ গ্রহন করেও তালিকাভূক্ত মুক্তিযোদ্ধা হতে পারেনি তিনি। মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই তালিকায় একাধিকবার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিলেও কাজে আসেনি তা। সাবেক মন্ত্রী মরহুম শেখ আব্দুল আজিজের হাত ধরে আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে পদার্পণ করেন ইসমাইল হোসেন মৃধা। পরবর্তীতে ডা. মোজাম্মেল হোসেন এমপি, বর্তমান এমপি এ্যাড. আমিরুল আলম মিলন তাকে দলের একজন ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতা হিসেবে চিনেন ও জানেন।
সংবাদকর্মীদের কাছে এ কথাগুলো বলতে গিয়ে দু’নয়ন থেকে অশ্রæ ঝরছিলো দলের এ ত্যাগী নেতার । পুরোনো স্মৃতি বলতে গিয়ে একপর্যায়ে নিজেকে আর সামলে রাখতে পারেননি। মাঝের মধ্যে ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলায় থেমে গিয়ে নিস্তৃব্দভাবে কি যেনো ভাবছেন। অনেক সময় পর পর সংবাদ কর্মীদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন তিনি।
স্বাধীনতার পরবর্তী থেকে জিউধরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন, বর্তমানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ১৯৭২ সালে রিলিফ কমিটির ভিলেজ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন ৩ বছর। ৭৫’র বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে ১৯৮০ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পরে তার ওপর নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন। হত্যা মামলা, ব্যাংকের টাকা ছিনতাইসহ একাধিক মিথ্যা মামলায় কারাগারের অন্তরালে দিন কাটতে হয়েছে অসংখ্যবার।
তৎকালীন মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছিলো সে আওয়ামী লীগ করে বিধায় হত্যা মামলার সাথে জড়িত সন্দেহ হয় তাকে। সাবেক সররাষ্টমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের নির্দেশনায় দলীয় নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তিনিসহ তার পরিবারের সদস্যদের। পৈত্রিক ১৭ বিঘা সম্পত্তি বিক্রি করতে হয়েছে মামলা মোকাবেলায়। গোয়াল ভরা ২৬টি গরু, ৯টি মহিষ লুট করে নিয়েছিলো সেদিনের প্রতিপক্ষ লুটকারীরা। পুলিশী নির্যাতনে মারপিটে ডান হাতের একটি আঙ্গুল ভেঙ্গে যায় তার। আজও সেই হাত থেকে ভারী কোন কিছু বহন করতে পারেননা আওয়ামী লীগ নেতা মো. ইসমাইল হোসেন মৃধা। জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও প্রত্যান্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষের কথা ভাবছেন তিনি। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রতিটি গ্রাম হবে শহর এ স্বপ্ন দেখছেন তিনি। সাধারণ মানুষের পাশে থেকে এলাকার উন্নয়ন করতে চান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইসমাইল হোসেন।বর্তমানে তার পরিবারে স্ত্রী, ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। ছোট ছেলে এলএলবি পাশ ও মেঝো ছেলে ডিগ্রী পাশ করে বেকার জীবন যাপন করছে।
Posted ১০:১৬ | সোমবার, ০৪ জানুয়ারি ২০২১
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Rafiq Masum