| বৃহস্পতিবার, ০৫ জুলাই ২০১৮ | প্রিন্ট
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দিন ১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন পালন এবং চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদেরকে মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দেয়ার মানহানির মামলায় জামিন পাননি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশিবাজারের অস্থায়ী এজলাসে ঢাকা মহানগর হাকিম খুরশিদ আলম ভুয়া জন্মদিনের মামলায় এবং মহানগর হাকিম আহসান হাবীব যুদ্ধাপরাধীদের মদদের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জামিন আবেদন ফিরিয়ে দেন।
গত ২১ জুন দুই আদালতে জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদেশের জন্য ৫ জুলাই দিন নির্ধারণ করা হয়।
২৫ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে ওই দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোসহ জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। ওইদিন আদালত শুনানি শেষে আদেশের জন্য ১৭ মে দিন ধার্য করেন।
এরপর ওই আদেশের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা হাইকোর্টে আবেদন করেন। আর নি¤œ আদালতকে জামিনের আবেদন নিষ্পত্তির আদেশ দেয় উচ্চ আদালত। সে অনুযায়ী গত ১৪ জুন বিচারিক আদালতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন।
২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম ভুয়া জন্ম দিনের মামলাটি করেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ৯০ দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন শুরু করেন। অথচ ১৯৯১ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে তার যে জীবনী পাঠানো হয়, তাতে জন্মদিন হিসেবে অন্য একটি তারিখ উল্লেখ আছে। আর তার পাসপোর্টেও জন্মদিন ১৫ আগস্ট নয়।
মামলার বাদীর অভিযোগ, জাতির পিতার মৃত্যু দিবসে নিজের কর্মী সমর্থকদেরকে নিয়ে উল্লাস করতেই এই দিনটিতে তিনি জন্মদিন হিসেবে পালন করেন।
অবশ্য সমালোচনার মুখে গত দুই বছর ধরে ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়া ঘটা করে কেক কেটে জন্মদিন পালন করেননি। যদিও দলীয় কার্যালয়ে সেদিন মিলাদ মাহফিলের আয়োজন কর হয় তাদের নেত্রীর জন্মদিন পালনের অংশ হিসেবে।
এই মামলায় ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
অন্যদিকে যুদ্ধাপরাধীদের মদদের মামলাটি করা হয় ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর। বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকীর করা এই মামলায় ২০০১ সালে ÿমতায় আসার পর একাত্তরের খুনি বাহিনী আলবদরের দুই শীর্ষ নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে মন্ত্রী বানিয়ে ৩০ লাখ শহীদকে অপমানের অভিযোগ আনা হয়।
২০১৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এবিএম মশিউর রহমান খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই বছর ১২ অক্টোবর সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
কিন্তু পুলিশ যেমন এই দুটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল করেনি, তেমনি খালেদা জিয়া বা তার আইনজীবীরাও সে সময় এই মামলাটি নিয়ে গুরুত্ব দেননি।
তবে গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় কারাগারে যাওয়ার পর বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া মামলাগুলো তার মুক্তিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যে মামলায় সাজার পর খালেদা জিয়া কারাগারে গেছেন, সেই মামলায় এরই মধ্যে তিনি জামিন পেয়েছেন। কিন্তু ঢাকায় মাহহানির দুই মামলা ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের অভিযোগে নড়াইল আদালতে করা মানহানির মামলার পাশাপাশি ২০১৫ সালে বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় কুমিলøায় বাসে পেট্রল বোমায় আট জনকে হত্যার ঘটনায় করা দুইটি মামলা এবং পুলিশ ভ্যানে হামলা মামলাতেও তার জামিনের চেষ্টা করছেন আইনজীবীরা। এসব মামলায় জামিন না হলে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুক্তি সম্ভব নয়।
Posted ১২:৪৮ | বৃহস্পতিবার, ০৫ জুলাই ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain