| রবিবার, ২৪ জুন ২০১৮ | প্রিন্ট
কুমিল্লায় বাসে পেট্রলবোমা হামলার যে ঘটনায় বেগম খালেদা জিয়াকে আসামি করা হয়েছে, সেটি কারা ঘটিয়েছে তা খুঁজে বের করবেন বিএনপি নেত্রীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবী অবশ্য নিজেই বলে দিয়েছেন, সরকারের এজেন্সি এই ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপির ওপর দায় চাপিয়েছে।
দুর্নীতির এক মামলায় কারদণ্ড হওয়ার পর সেই মামলায় জামিন পাওয়া খালেদা জিয়া যেসব মামলার কারণে কারাগারে বন্দী তার দুটি হয়েছে ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি বাসে পেট্রলবোমা হামলার ঘটনায়।
গত ২৮ মে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ কুমিল্লার এই দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে জামিন দেন। সেদিনই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। আর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ওপর শুনানি করে ২ জুলাই আদেশের দিন নির্ধারণ করেছে আপিল বিভাগ।
রবিবার আপিল বিভাগ সিদ্ধান্ত জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব প্রতিক্রিয়া জানান সাংবাদিকদের কাছে।
বিএনপির এই আইনজীবী নেতা বলেন, ‘এই ঘটনার সঙ্গে (কুমিল্লায় বাসে পেট্রলবোমা) সরকারের একটি এজেন্সি জড়িত। হরতাল অবরোধ চলার সময় বিরোধীদলকে নসাৎ করতে এবং জনগণ ও দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করার জন্য সরকারের এজেন্টরা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।’
২০১৩ থেকে ২০১৪ সালের জানুয়ারির ১২ তারিখ অবধি এবং ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে বিএনপি-জামায়াতের সরকারবিরোধী আন্দোলনে ব্যাপকহারে গণপরিবহনে পেট্রলবোমা হামলার ঘটনা ঘটে, পুড়ে মারা যায় পাঁচ শতাধিক মানুষ।
বিএনপি নেতারা অবশ্য এসব হামলার দায় অস্বীকার করেন। তাদের দাবি, তাদের আন্দোলনের বদনাম করতে অন্তর্ঘাতমূলক ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে সরকারই। যদিও আন্দোলন চলাকালে বিএনপির এক নেতা বলেছিলেন, যুদ্ধের সময় কিছু মানুষের প্রাণহানি ঘটেই।
কুমিল্লায় বাসে পেট্রলবোমা হামলাতেও বিএনপি জড়িত নয় অভিযোগ করে খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা সত্যিই হয়েছে, সরকারি এজেন্ট, হিটলারী কায়দার পেট্রোলবোমা এনে জনগণকে মেরেছে।’
‘পেট্রোলবোমা মেরে মানুষ হত্যা করে বিরোধীদলের ওপর দোষ চাপিয়ে জনগণকে বিভ্রান্তি করতে এরকম করেছে সরকার। আমরা দেখিয়ে দেবো যে কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’
‘আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে নসাৎ করতে সরকারের এজেন্টরা পেট্রোলবোমা মেরে নাশকতা করেছে। তার দায় দায়িত্ব বেগম খালেদা জিয়ার ওপর নয়।’
এই দাবি আদালতে প্রমাণ করার ঘোষণাও দেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী। বলেন, ‘আমরা আশা করি যখন এটার বিচার হবে, সাক্ষ্যপ্রমাণ দিয়ে আমরা প্রমাণ করব।’
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পেট্রলবোমা হামলা মামলার বিষয়ে মাহবুব বলেন, ‘এফআইআরএ ৫৬ জনের নাম ছিল। সেখানে খালেদা জিয়ার নাম ছিল না। পরবর্তী পর্যায়ে দ্বিতীয়বারের অভিযোগপত্রে তার নাম ঢুকানো হয়েছে।’
এই মামলায় হাইকোর্ট বিএনপি প্রধানকে জামিন দেয়ার পর অ্যাটর্নি জেনারেলের তৎপরতা নিয়েও সমালোচনা করেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘দীর্ঘ সময় পর আমরা হাইকোর্ট থেকে খালেদা জিয়ার জামিন নিয়েছি। সরকার আপিল করে। আজকে অ্যাটর্নি জেনারেল সাহেব বিরোধিতা করেন।… এ মামলায় অ্যাটর্নি জেনারেল ইচ্ছাকৃতভাবে বেইলের ব্যাপারে দেরি করছেন।’
‘আমরা এই ব্যাপারে ক্ষুব্ধ, লজ্জিত, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের কাছ থেকে, দেশের বিজ্ঞ অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছ থেকে এরকম আচরণ আশা করিনি।’
আদালতে কী যুক্তি দিয়েছেন, সেটাও জানান বিএনপির আইনজীবী নেতা। বলেন, ‘আমরা বার বার কোর্টকে বলেছিলাম খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ, বৃদ্ধা মহিলা, বয়ষ্ক মহিলা। মানবিক কারণে বেইল অ্যাপলিকেশন (জামিন আবেদন) করেছি।’
আগামীকাল নাশকতার অভিযোগে করা মামলার জামিনের বিষয়ে শুনানি শুরু হবে জানিয়ে সেই মামলাতেও জামিন পাওয়ার আশা করেন খালেদা জিয়ার উকিল।
Posted ১৩:৫১ | রবিবার, ২৪ জুন ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain