
| মঙ্গলবার, ০৯ জানুয়ারি ২০১৮ | প্রিন্ট
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে হতাশাজনক দাবি করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, এই হতাশার কারণেই তরুণরা ব্যাপকভাবে মাদকে ঝুঁকে পড়ছে। আর এই পরিস্থিতিতে জাতীয় পার্টিই একমাত্র আশা বলে মনে করেন গণঅভ্যুত্থানে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হারানো সেনা শাসক।
মঙ্গলবার রাজধানীতে দলের এক যৌথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব দাবি করেন জাপা চেয়ারম্যান।
এরশাদ বলেন, ‘দেখলাম দোকানে দোকানে মাদক, ইয়াবা, গাঁজা সবই পাওয়া যায়। রুটির চেয়ে গাঁজা বেশি পাওয়া যায়।’
এই পরিস্থিতির কারণ কী- এই প্রশ্ন তুলে নিজেই তার জবাব দেন এরশাদ। বলেন, ‘কোনো কাজ নাই। তারা হতাশাগ্রস্ত, বাপ-মায়ের বোঝা, সমাজের বোঝা, ছেলের সামনে কোনো ভবিষ্যত নাই। তখন সে মাদকের আশ্রয় নেয়। দারিদ্র্যের দুঃখ ভুলে যেতে চায়। একমাত্র উপায় হিসেবে মাদককে বেছে নেয়।’
দেশে শিক্ষিত যুবক-নারীর সংখ্যা কত এবং শিক্ষিত যুবকদের অবস্থা কী- সরকারের কাছে এই প্রশ্নেরও জবাব চান এরশাদ।
মধ্যম আয়ের দেশের সুবিধা কেবল ক্ষমতাসীন দল পাচ্ছে অভিযোগ করে এরশাদ বলেন, ‘প্রতিদিন ঢাকায় হাজার হাজার মানুষ আসে কাজের জন্য। কোনো কাজ নাই। মানুষ ফুটপাতে শুয়ে থাকে। আমাদের নাকি মধ্যম আয়ের দেশ। মধ্যম আয় শুধু আওয়ামী লীগের মধ্যে।’
নারীদের জন্য বাংলাদেশ অনিরাপদ হয়ে উঠেছে বলেও মনে করেন এরশাদ। বলেন, ‘কোনো মেয়েই আজকে নিরাপদ নয়। গ্রামেগঞ্জের বাবারা মেয়েকে ১৫ বছরের আগেই বিয়ে দিয়ে দেয়।’
‘বাল্যবিবাহ বন্ধকরণসহ যত আইন করেন এটা বন্ধ করতে পারবেন না। কারণ এরা বড় হলেই বাবা-মার বিপদ। ধর্ষণের কথা প্রতিদিন তো শুনছেনই।’
সামনে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে যাচ্ছে বলে পূর্বাভাসও দেন এরশাদ। তবে এর মধ্যে জাতীয় পার্টি আরও শক্তিশালী হবে বলেও মনে করেন তিনি।
বয়স ‘কমে যাচ্ছে’ এরশাদের
জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে দলের চেয়ারম্যান বলেন, বিভিন্ন কর্মসূচিতে মানুষের উপস্থিতি দেখে এখন নিজেকে ৪০ বছর বয়সীর মতো শক্তিশালী মনে হয় তার।
‘আমি মনে করি আমার বয়স চল্লিশ বছর। যখন আমি দেখি আমার জনসভায় লোক বেশি তখন আমার বয়স কমে। আর যদি লোক কম দেখি তখন আমার বয়স বাড়ে।’
রংপুরের ভোটে বিজয়ের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির মনে প্রাণ সঞ্চার হয়েছে। বলেও মনে করেন এরশাদ। বলেন, দেশের প্রতিটি আসনে এখন প্রার্থী দেয়ার মতো পরিস্থিতি হয়েছে।
আগামী সংসদ নির্বাচনকে জীবনের শেষ ভোট জানিয়ে এরশাদ বলেন, ভোটে জিতে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় দেখেই মরতে চান তিনি।
দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির প্রতি মানুষ বীতশ্রত বলেও দাবি করেন এরশাদ। বলেন, ‘গ্রামে গঞ্জের মানুষ এখন আওয়ামী লীগ-বিএনপির কখা বলে না। মনে করে জাতীয় পার্টির কথা। তারা মনে করে, আকেরবার যদি এরশাদ আসতেন, তাহলে ভালো হয়।’
এরশাদ বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগের কাছে বিএনপি নিরাপদ নয়, আবার বিএনপির কাছে আওয়ামী লীগ নিরাপদ নয়। কিন্তু আমাদের কাছে সবাই নিরাপদ।’
খালেদার বিরুদ্ধে ৩৭ মামলা, আবার বিরুদ্ধে ৪২
এরশাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা অন্য কোনো অভিযোগ নিয়ে বেশি কথা না বলতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে পরামর্শ দেন এরশাদ। তিনি বলেন, ‘খালেদার বিরুদ্ধে তো ৩৭ টা মামলা রয়েছে। আর আমার বিরুদ্ধে ৪২ টা। আরো পাঁচাটা বাকি আছে। সেটাই মনে করিয়ে দিলাম।
Posted ১০:০৬ | মঙ্গলবার, ০৯ জানুয়ারি ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain