
| বুধবার, ০৩ মে ২০১৭ | প্রিন্ট
রাজধানীর দুঃসহ যানজট কমাতে মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নের দিক থেকে আরও একটু অগ্রগতি হলো। এই প্রকল্পের আটটি প্যাকেজের মধ্যে তিনটির বিষয়ে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে সরকার।
বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে এই চুক্তি হয়। এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘হলি আর্টিজানের (২০১৬ সালের ১ জুলাই) ঘটনার পর মেট্রোরেলের কাজ কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছিল। কারণ এই ঘটনায় মেট্রোরেলের সাতজন কনসালটেন্ট মারা গিয়েছিল। এই কারণে আমরা প্রায় ছয় মাসের মত পিছিয়ে গেছি। কিন্তু এখন পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি কাজে আর কোনো বিঘ্ন ঘটবে না এবং কাজ যথারীতি আমাদের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাবে।’
এই নির্মাণ কাজ চলার সময় রাজধানীতে দুভোগ হবে জানিয়ে তা মেনে নেয়ার আহ্বান জানান সড়ক ও সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ভালো একটা কাজ করতে গেলে একটু দুর্ভোগে পড়তেহই হবে। আর এই দুর্ভোগের প্রধাণ কারণ হল আমাদের দেশের সড়ক খুব একটা প্রশস্ত নয়। যার কারণে যানজট লেগে মানুষের দুর্ভোগে পড়তে হয়।’
দুর্ভোগ হলেও তার ফল ভাল হয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার যখন নতুন তৈরি হচ্ছিল তখন মানুষ দুই থেকে আড়াই ঘন্টার যাজটের ফাঁদে পড়তো। আর এখন দুই মিনিটের মধ্যে পাঁচ ছয় কিলোমিটার দূরত্ব পার হয়ে যাচ্ছে।’
চুক্তি অনুযায়ী প্যাকেজ-২ এর আওতায় ডিপো এলাকায় নির্মাণ কাজ করা হবে। এর আর্থিক মূল্য মোট এক হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা। এই প্যাকেজে যেসব অবকাঠামো নির্মাণ হবে, সেগুলো হল, ১. বিরতির সময় ট্রেন রাখার স্থান, ২. ট্রেন মেরামত ও মালামালের গুদাম ঘর, ৩. ট্রেন মেরামত ও ওভারহল স্থান, ৪. প্রধান ওয়ার্কশপ, ৫. অপারেশন কন্ট্রোল সেন্টার, ৬. ট্রেন ইনস্পেকশন, ৭. জেনারেটর এবং ইলেকট্রিক্যাল ভবন, ৮. ট্রেন ওয়াশ স্থাপনা, ৯. ম্যানুয়াল ট্রেন ওয়াশিং, ১০. বহুতল কার পার্কিং এবং ১১. সবুজ বেষ্টনী।
প্যাকেজ-৩ ও প্যাকেজ-৪ এর আওতায় উত্তরা নর্থ থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ভায়াডাক্ট (যে পথে চলবে রেল) ও স্টেশন নির্মাণ করা হবে। এই চুক্তির আর্থিক মূল্য প্রায় চার হাজার ২৩০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
এই তিন প্যাকেজের নির্মাতা প্রতিষ্ঠানই হল ডিএমটিসিএল। এর সঙ্গে যৌথভাবে ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি এবং সিনোহাইড্রো করপোরেশন।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্যাকেজ-১ এর আওতায় এরই মধ্যে মেট্রোরেলের ডিপো এলাকায় ভূমি উন্নয়নের কাজ ৩৫ শতাংশ শেষ হয়েছে।
২০২১ সালের মধ্যে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চালু হবে মেট্রোরেল। তবে প্রাথমিকভাবে এটি ২০১৯ সালের মধ্যে চালু হবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্যাকেজ-৫ ও ৬ এর আওতায় আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ভায়াডাক্ট ও স্টেশন নির্মাণের জন্য চুক্তি হবে পরে। আর প্যাকেজ-৭ এর আওতায় ইলেকট্রিক ও মেকানিক্যাল সিস্টেমের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আর প্যাকেজ-৮ এর আওতায় রেল কোচ ও ডিপো যন্ত্রপাতির জন্যও দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
দুঃসহ যানজটের এই নগরীতে মেট্রোরেলকে দেখা হচ্ছে পথচারীদের যন্ত্রণামুক্তির পথ হিসেবে। দীর্ঘদিন ধরেই আলোচিত এই প্রকল্পের মোট খরচ ২২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপান দিচ্ছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। বাকি টাকা দেবে সরকার।
এই রুটের দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ২০ কিলোমিটার। উত্তরা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত মোট ১৬টি স্টেশনে যাত্রী উঠানামা করা হবে। ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করতে পারবে এই ট্রেন।
Posted ০৯:৫৬ | বুধবার, ০৩ মে ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain