
| মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল ২০১৭ | প্রিন্ট
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে হাওর এলাকার সর্বনাশের কথা জানিয়েছি। তিনি বলেছেন, চিন্তা না করতে। হাওর এলাকার কোনো মানুষ না খেয়ে থাকবে না বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন।
সোমবার রাতে সুনামগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত হাওর এলাকা পরিদর্শন শেষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা, সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন। জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাসন রাজা মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, হাওরাঞ্চল রক্ষা করতে হলে নদী খননের বিকল্প নেই। এ নিয়ে স্থায়ীভাবে কাজ করতে হবে। ভারতে থেকে যেসব নদ-নদী দিয়ে পানি বাংলাদেশে প্রবেশ করে, সেসব নদী ওই সীমানা থেকে ভৈরব পর্যন্ত গভীরভাবে খনন করতে হবে। যদিও এ প্রকল্পে সরকারের অনেক টাকা খরচ হবে। কিন্তু তারপরও সরকারকেই এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি শুধু সরকারের রাষ্ট্রপতি নই। আমি বাংলাদেশের সবার রাষ্ট্রপতি। তাই সবার কথা শুনব, জানব।’ তিনি বলেন, হাওর অঞ্চলে অতীতে এভাবে কখনো কাঁচা ধান তলিয়ে যায়নি। হাওর এলাকায় দুই-তিন বছর পরপর ফসলহানি ঘটে। তবে সেই ধান থাকে পাকা। মানুষ কিছু হলেও ফসল গোলায় তুলতে পারে। কিন্তু চৈত্র মাসে কখনো এভাবে সব কাঁচা ধান তলিয়ে যায়নি, যা এ বছর হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সুনামগঞ্জের কান্না কিশোরগঞ্জে গিয়ে শেষ হয়। কারণ, যে পাহাড়ি ঢল কিংবা বন্যার পানি সুনামগঞ্জে হয়, তা ২৪ ঘণ্টা পরে কিশোরগঞ্জে গিয়ে পড়ে। এ সময় রাষ্ট্রপতি ১০ টাকা কেজি মূল্যের চালের মেয়াদ আগামী চৈত্র মাস পর্যন্ত বৃদ্ধির কথা বলেন। সেই সঙ্গে হাওরাঞ্চলের সমস্যা নিয়ে সংসদে বেশি বেশি কথা বলার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ৫ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এলাকায় আর আসা হয়নি। এর আগে বহুবার সুনামগঞ্জে আসতে চেয়েছিলেন, কিন্তু অনেক কারণে তাঁর আসা হয়নি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সুনামগঞ্জের এমন খারাপ সময়ে আসতে হবে, তা জানতাম না। আমি কৃষকের সন্তান, তাই কৃষকদের কথা ভেবে সুনামগঞ্জ সফরে এসেছি। এবার হাওরাঞ্চলের এমন পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে যদি ফসলহারা মানুষের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে এই এলাকার মানুষ কাজের জন্য ঢাকায় ছুটবে। ঢাকায় যেতে মানুষের লাইন পড়ে যাবে।’
স্থানীয় রাজনীতিবিদ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আপনারা যেভাবে এত সুন্দর করে হাওরাঞ্চলের নানান সমস্যা ও দুর্নীতির কথা বললেন, সত্যিই যদি আপনারা মন থেকে বলেন, যদি সত্যিই মন থেকে চান, তাহলে অবশ্যই সুনামগঞ্জে দুর্নীতি প্রতিহত হবে। আর দুর্নীতি হবে না।’
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সুনামগঞ্জ সার্কিট হাউসে রাতযাপন করেন। মঙ্গলবার আবার সুনামগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত হাওর এলাকা পরিদর্শন করার কথা রয়েছে তার। দুপুরে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন রাষ্ট্রপতি।
Posted ০৭:৫৩ | মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain