সেনা জিপের সামনে বাম্পারে টায়ার বসিয়ে তার ওপর রশি দিয়ে এক তরুণকে বেঁধে নিয়ে যাচ্ছে ভারতের সেনাবাহিনীর কিছু সমস্য। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় তুমুল প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে দেশজুড়ে।

সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের বুদগাম জেলায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় বেশ কয়েকজন নিহতও হয়েছে। জেলার বিরওয়া নামক এলাকায় ভোট হয়েছে রবিবার, কিছু এলাকায় ভোট পুনগণনা হয়েছে বৃহস্পতিবার। এই ভোটকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছে। প্রতিবাদও হয় ব্যাপকভাবে।

নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়ি দেখলেই ইট পাথর নিক্ষেপ করছিলো বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে বাঁচতে ওই ব্যক্তিকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে নিরাপত্তা বাহিনী, এমন একটি ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে তারা ভিডিওর বিষয়বস্তু পরীক্ষা করে দেখছে।

ভিডিওটি দেখে আপাতভাবে মনে হচ্ছে, উন্মত্ত জনতা যাতে জিপে পাথর ছুড়তে না পারে, তাই ওই যুবককে জীবন্ত ঢাল বানিয়ে ব্যবহার করেছে সেনারা। ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পরে নতুন তোলপাড় শুরু হয়েছে।

কাশ্মির উপত্যকায় সামরিক বাহিনীর এক গাড়িতে ওই তরুণকে বেধে নেয়ার সময় একজন সৈন্যকে বলতে শোনা গেছে ‘যে পাথর মারবে তার একই পরিণতি হবে’। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, গাড়ির লাইসেন্স নাম্বার ৩৩৯ লেখা রয়েছে। যুবকের নাম ফারুক দার। বাদগামের সিতাহরন গ্রামের বাসিন্দা তিনি।

রাজ্য প্রশাসনের তদন্তে জানা যায়, ৫৩ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের জওয়ানরাই এ ঘটনায় জড়িত। তদন্তকারীদের ফারুক জানিয়েছেন, তিনি ভোট দিতে বেরিয়েছিলেন। তার পরে বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে জওয়ানেরা তাকে আটক করে। সেনা ইউনিটটি নির্বাচন কর্মীদের সঙ্গে গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করছিল।

ফারুকের দাবি, তাকে জিপে বেঁধে প্রায় ১০-১২টি গ্রামে ঘোরানো হয়েছে। আবার সেনা সূত্রের দাবি, ১০০ মিটার পরেই ফারুককে ছেড়ে দেওয়া হয়

ভিডিও পোস্ট করেছে জম্মু ও কাশ্মির ন্যাশনাল কনফারেন্সের মুখপাত্র জুনায়েদ আজিম মাত্তু। তিনি বলেন, পোস্ট টুইটারেও দেয়া হয়েছে। তবে কোথায় কিভাবে ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে তা জানা যায়নি। তা সত্ত্বেও আর্মির একটি জিপের সামনে এভাবে একজন তরুণকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহারের ১১ সেকেন্ডের ওই ভিডিও আলোড়ন তুলেছে সর্বত্রই।

কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি পুলিশকে বিষয়টির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, তিনি এই বিষয়টি সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত কিছু জানেন না। তবে এমন ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কাশ্মিরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা টুইটারে লিখেছেন, ‘পাথর থেকে বাঁচতে বাহিনী একটি মানুষকে ঢাল বানাল কী করে? আমি হতবাক।’ ঘটনার পূর্ণ তদন্তের দাবিও করেছেন তিনি।

https://youtu.be/A09SY7Zc77Y?t=1