
| শনিবার, ০৮ এপ্রিল ২০১৭ | প্রিন্ট
স্বাধীনদেশ অনলাইন : ক্ষমতা ও সম্পদ বানানোর লোভে আওয়ামী লীগে ঢুকে অনেকেই অপকর্ম করছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলে প্যারাসাইটস ঢুকে গেছে। এরা নিজেদের ক্ষতি করার পাশাপাশি সুযোগ বুঝে মাইনরিটির ওপরও হামলা করছে।
শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটউটে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাদের এসব কথা বলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায় এবং গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের ওপর নির্যাতনে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের সম্পৃক্ততার অভিযোগের মধ্যেই এমন বক্তব্য এল।
কাদের বলেন, ‘গোবিন্দগঞ্জের ঘটনা, নাসিরনগরের ঘটনা, আরও কিছু ঘটনা আছে। এগুলো মিথ্যা নয়। কীভাবে ঘটেছে তা ক্ষতিয়ে দেখলে ভয়াবহ কিছু চিত্র আছে।’ তিনি বলেন, ‘এরা খারাপ লোক। খারাপ লোককে খারাপভাবে চিহ্নিত করবেন। এটা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোনো নীতি নয় এটি আমি আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের চেতনা যারা ধারণ করে। অসাম্প্রদায়িক চেতনা। পোড় খাওয়া আওয়ামী লীগাররা এই সব ঘটনার সেঙ্গ জড়িত নয়। জড়িত তারা যারা আওয়ামী লীগের নামে ক্ষমতাসীন দলের ক্ষমতা অপব্যাহার করে বাড়ি দখল করে সম্পদ দখল করে এবং নিজেদের আরও বিত্তবান বানানোর পায়তারা করে সেই সব লোকদের স্থানে স্থানে স্বার্থ আছে। তাদের খারাপ মোটিভ আছে। তারা অপকর্মকারী।’
এই পরজীবীরা কেবল সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন করছে না মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শুধু হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিষ্টানদের ওপর নয় তারা মুসলমানদের উপরও অত্যাচার করে। এটা শুধু মাইনরিটি ব্যাপার হিসেবে দেখবেন না। এই সব ঘটনা আজকে একটা সুবিধাভোগী লোক রাজনীতির নামে এদেশে কিছু নেতা আছে যাদের নীতি নৈতিকতার বালাই নেই। ক্ষমতার জন্য তারা যেকোন অপকর্ম করতে দ্বিধা করে না।’
আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার দেশের ৪৬ বছরের ইতিহাসে যখনই ক্ষমতায় ছিল তখনই সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় কাজ করেছে। কিন্তু যখন অন্যরা ক্ষমতায় এসেছে তখনই সংখ্যালঘুদের উপর অমানসিক নির্যাতন হয়েছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনাদেরকে আমি সংখ্যালঘু বলতে রাজি নয়। এই শব্দটি আমি পছন্দ করি না। আপনি কেন মাইনরিটি। এই দেশের সংবিধানে আপনার অধিকার আছে। আপনার ভোটাধিকার আছে। মুসলমানের যে অধিকার সমান অধিকার আপনারও। আপনারা এটা বলে নিজেদের দুর্বল করে দেন। লড়াইয়ের আগেই হেরে যান।’
সম্মেলনে সাত দফা দাবি তুলে ধরেন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্যপরিষদের নেতারা। এসব দাবির বিষয়ে কাদের বলেন, ‘আমি আপনাদের দাবির বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবো। তবে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাটা আমি জানি। উনি নারী এবং মাইনরিটি নেতৃত্ব বেশি পছন্দ করেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়ে বিএনপির সমালোচনারও জবাব দেন কাদের। তিনি বলেন, ‘চুক্তি না হওয়ার আগেই আপনি (মির্জা ফখরুল) বলছেন এটা দেশবিরোধী চুক্তি। চুক্তিই হল না আর আপনি বলছেন দেশবেরোধী। অন্ধকারে কেন ঢিল ছুড়ছেন। এমওইউ হবে। সেটা দেখুন। এরপর যুক্তিতর্ক দিয়ে কথা বলুন।’
কাদের বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে চুক্তি হলে তো মানুষ জানবে। দেশের মানুষকে অন্ধকারে রেখে কোনো চুক্তি করবে না শেখ হাসিনা।’
ভারতের কাছ থেকে তিস্তাসহ অভিন্ন সব নদীর হিস্যা বুঝে নেওয়া সময়ের ব্যাপার বলেও মন্তব্য করেন কাদের। তিনি বলেন, ‘রাজ্য সরকারকে সঙ্গে নিয়েই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার করতে চায়। কারণ নদীটা রাজ্যের। এটা সংবিধানে লেখা আছে। আবার আন্তর্জাতিক চুক্তির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার চাইলে এককভাবে করতে পারে। কিন্তু এটা গণতান্ত্রিক নয়। ভারত গণতান্ত্রিকভাবেই কাজ করতে চায়। এটা নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। সব কিছুই হবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব.) সি আর দত্ত। নবম জাতীয় সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন তুলে ধরেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশ গুপ্ত।
Posted ১০:১৫ | শনিবার, ০৮ এপ্রিল ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain