
| শুক্রবার, ০৭ এপ্রিল ২০১৭ | প্রিন্ট
সফররত পবিত্র কাবা শরিফ মসজিদুল হারামের ইমাম, খতিব ও ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. মুহম্মদ বিন নাসির আল খুজাইম এবং পবিত্র মসজিদে নববির সিনিয়র ইমাম ও খতিব শায়খ ড. আবদুল মহসিন বিন মহাম্মদ আল কাসিম জাতীয় সংসদের স্পিকার ও সিপিএ নির্বাহী কমিটি’র চেয়ারপারসন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সাথে শুক্রবার তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেছেন।
সাক্ষাৎকালে তাঁরা বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি, সৌদি আরবের প্রতি আস্থা, বাংলাদেশে ইসলাম ধর্মের চর্চা, বাংলাদেশ বিনির্মাণে সৌদি সরকারের অবদান, সৌদিতে বাংলাদেশি কর্মীদের অবদান, হজ ব্যবস্থাপনা, দুই দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা করেন।
স্পিকার পবিত্র কাবা শরিফ মসজিদুল হারামের ইমাম এবং মদিনার পবিত্র মসজিদে নববির সিনিয়র ইমাম ও খতিব এক সঙ্গে বাংলাদেশ সফর এবং সংসদে আগমন করায় জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে তাদেরকে ধন্যবাদ জানান।
এসময় স্পিকার বাংলাদেশ থেকে হজ মৌসুমে ও উমরাহ পালনের সময় বাংলাদেশি হাজিদের সহযোগিতা করায় সৌদি সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং হাজির সংখ্যা আরও বাড়াতে অনুরোধ জানান। তিনি সৌদিতে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের সহযোগিতা দেয়ার আহ্বান জানান।
স্পিকার বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই। ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনে লাখো মুসল্লির উপস্থিতিতে মসজিদুল হারামের ইমাম ও মসজিদে নববির খতিবের দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য মুসলিম সমাজ তথা বাংলাদেশের জনগণকে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে উৎসাহিত করবে- যা বিশ্বের দরবারে শান্তির বার্তা বহন করবে।
শিরীন শারমিন বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন গঠন করেছিলেন। তাঁরই কন্যা ও সুযোগ্য উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসলামি সংস্কৃতিকে শক্তিশালী করার জন্য ইসলামিক স্টাডিজ, ইসলামিক ইতিহাসসহ বিভিন্ন কারিকুলাম উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
স্পিকার বলেন, বাংলাদেশ মসজিদের শহর। এছাড়া বাংলাদেশে ইসলামের ব্যাপক চর্চা রয়েছে এবং সরকারও ইসলাম ধর্মের প্রসারে মসজিদ, মাদ্রাসা এমনকি আরবি বিশ্বদ্যিালয় ও নির্মাণের মাধ্যমে ধর্মীয় চর্চার প্রসারে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫৬০টি উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করেছেন, যেখানে সৌদি সরকারের অনুদান রয়েছে।
মসজিদুল হারামের ইমাম বলেন, ওলামা মাশায়েখ সম্মেলন এবং বায়তুল মোকাররম মসজিদে লাখো মুসল্লির আগমন প্রমাণ করে ইসলাম ধর্মের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আমাদেরকে একনজর দেখার জন্য যেভাবে সমবেত হয়েছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এটি পবিত্র কাবা শরিফের প্রতি এদেশের মুসলমানদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। তিনি সৌদি বাদশাহকে এসব বিষয়ে অবহিত করবেন বলে আশ্বাস দেন। এসময় তিনি গতবছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৌদি আরব সফরের বিষয়টি স্মরণ করেন এবং স্পিকারকে সৌদি আরব সফরের আমন্ত্রণ জানান।
স্পিকার আশা প্রকাশ করেন, নিকট ভবিষ্যতেই সৌদি আরবের বাদশাহ বাংলাদেশ সফর করবেন। তিনি সৌদি আরবের মজলিসে শুরার স্পিকারকে ও বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। সফর বিনিময়ের মাধ্যমে দুই দেশের ভ্রাতৃত্ববন্ধন ভবিষ্যতে আরও সুদৃঢ় হবে এবং উন্মোচিত হবে সম্ভাবনার নব দিগন্ত।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বি মিয়া, ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মো. মতিউর রহমান, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, হুইপ ইকবালুর রহিম, শহিদুজ্জামান সরকার, মোছা. মাহবুব আরা গিনি, মো. ইমরান আহমেদ এমপি, মো. বজলুল হক হারুন এমপি।
এছাড়া জাতীয় সংসদের সিনিয়র সচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত এবং সৌদিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত উপস্থিত ছিলেন।
পরে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া প্রার্থনা করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন মসজিদে নববির খতিব।
মক্কা ও মদিনার এই দুই খতিব বুধবার ভোরে ঢাকায় আসেন। গতকাল ওলামা সম্মেলনে ভাষণ দেন। আজ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে খুতবা দিয়েছেন মসজিদে নববির খতিব। আজ রাতেই তাদের দেশে ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।
Posted ১২:৪৬ | শুক্রবার, ০৭ এপ্রিল ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain