
| সোমবার, ০৩ এপ্রিল ২০১৭ | প্রিন্ট
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আপিলে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা রিভিউ আবেদন ও খালাস চেয়ে করা সাঈদীর রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য কার্যতালিকায় এসেছে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চের সোমবারের কার্যতালিকায় মামলাটি ১৪৭ নম্বরে রয়েছে।
২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন। রায় ঘোষণার এক বছর পর ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ হয়। ২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ড থেকে বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড চেয়ে রিভিউ আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষের ৩০ পৃষ্ঠার মূল আবেদনে পাঁচটি যুক্তি দেখানো হয়। এর পাঁচ দিন পর ওই বছরের ১৭ জানুয়ারি এ রায় থেকে খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন করেন সাঈদী। মোট ৯০ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে আমৃত্যু কারাদণ্ড থেকে খালাস পেতে ১৬টি যুক্তি দেখানো হয়েছে।
আপিল বিভাগ রায়ে ১০ নম্বর অভিযোগ বিসাবালিকে হত্যা, ১৬ নম্বর অভিযোগ তিন নারীকে অপহরণ করে আটকে রেখে ধর্ষণ এবং ১৯ নম্বর অভিযোগ প্রভাব খাটিয়ে একশ থেকে দেড়শ হিন্দুকে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ৬ নম্বর অভিযোগ লুণ্ঠনের, ১১ নম্বর হামলা ও লুণ্ঠনের এবং ১৪ নম্বর অভিযোগ ধর্ষণের অভিযোগ থেকে খালাস দেয়া হয়। এছাড়া হত্যা ও অগ্নিসংযোগের ৮ নম্বর অভিযোগের অংশবিশেষে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে সাঈদীকে খালাস দেওয়া হয়। একই অভিযোগের অংশ বিশেষে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে তাকে ১২ বছর কারাদণ্ড দেয় আপিল বিভাগ।
নির্যাতন ও বাড়ি লুণ্ঠনের পর অগ্নিসংযোগে ৭ নম্বর অভিযোগে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে সাঈদীকে ১০ বছর কারাদণ্ড দেয় আপিল বিভাগ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ট্রাইব্যুনালে সাঈদীর বিরুদ্ধে গঠিত ২০টি অভিযোগের মধ্যে আটটি প্রমাণিত হয়।
ট্রাইব্যুনালের রায়ে ইব্রাহিম কুট্টিকে হত্যায় আট নম্বর অভিযোগ ও বিসাবলী হত্যায় ১০ নম্বর অভিযোগ মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আনা ৬, ৭, ১১, ১৪, ১৬ ও ১৯ নম্বর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হলেও এসব অভিযোগে তার ৮ ও ১০ নম্বর অপরাধের তুলনায় কম দণ্ড হয়। যেহেতু তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে তাই ৬, ৭, ১১, ১৪, ১৬ ও ১৯ নম্বর অপরাধের কারণে তাকে অন্য কোনো শাস্তি দেয়া থেকে ট্রাইব্যুনাল বিরত থেকেছে। এছাড়া সাঈদীর বিরুদ্ধে আনা ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৯, ১২, ১৩, ১৫, ১৭, ১৮ ও ২০ তম অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
Posted ০৬:০০ | সোমবার, ০৩ এপ্রিল ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain