
| বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০১৭ | প্রিন্ট
আমাদের সার্বভৌমত্ব, জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত রেখে সামরিক, বেসামরিক, বাণিজ্যিক, কূটনৈতিক চুক্তি হতে পারে’- বলেছেন আওয়ামী লীগের ওসাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, আমেরিকা এবং রাশিয়ার সঙ্গে অনেক দেশের সামরিক চুক্তি আছে। গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সাথে চুক্তি আছে। এ নিয়ে অপপ্রচার থেকে দূরে থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁও সড়ক ভবনে সড়ক ও জনপথ ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতির ১৪ তম জাতীয় সম্মেলনে কাদের এ কথা করেন। ওবায়দুল কাদের এই কথাগুলো বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফর নিয়ে।
আগামী ৭ এপ্রিল চার দিনের সফরে ভারত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। এই সফরে বেশ কিছু চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হতে যাচ্ছে বলে আলোচনা আছে। এরই মধ্যে ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, দীর্ঘ প্রতিক্ষীত তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি সই হচ্ছে এই সফরে।
তবে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগে সবচেয়ে বেশি কথা হচ্ছে নিরাপত্তা চুক্তির বিষয়ে। সরকার এ বিষয়ে কিছু না জানালেও বিএনপি নেতারা এ নিয়ে মাঠ গরম করছেন। তারা বলছেন, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিষয়ে কোনো চুক্তি হলে মানবেন না তারা। কথিত এই চুক্তির বিস্তারিত প্রকাশের দাবিও জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির এমন প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে একটি চিরকুট পাঠালে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোন চুক্তিই গোপন থাকবে না। সামরিক হোক, অসামরিক হোক। যেকোন চুক্তি জাতীয় স্বার্থ সার্বভৌমত্ব সমুন্নত রেখে করতে আপত্তি কোথায়?’।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “এটা নিয়ে ‘গেল রে গেল ইন্ডিয়া হয়ে গেল’ এমন অপপ্রচার এবং ভারত ভীতি থেকে সবাইকে দুরে থাকতে হবে।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, “ভারত আমাদের জন্য সংবেদনশীল। ভারত ইস্যু আসলেই আমাদের দেশের একটা মহল ‘গেল রে, গেল’ বলে চিৎকার শুরু করে দেয়। বলে সব ভারত হয়ে গেল। যার বাস্তবের সাথে কোন সঙ্গতি নেই। তারা আমাদের দুঃসময়ের বন্ধু। তাদের সাথে আমরা সমতার ভিত্তিতে বন্ধুত্ব হবে। এতে কেউ বড়, কেউ ছোট নয়।”
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে যেসব চুক্তি হবে তার কোনোটাই গোপন করা হবে না জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তথ্য প্রবাহের বিস্ফোরণে কোন কিছুই গোপন থাকে না। গোপন করার তো আমাদের দরকার নেই। জনগণের কাছে কোন তথ্য গোপন রাখা আমরা সমীচিন মনে করি না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এপ্রিলে মাথা উচু করে বীরে বেশে ভারত যাবেন। সেখানে দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে সার্বভৌমত্ব সমুন্নত রেখে যে চুক্তি জনগণের জন্য প্রয়োজন সেটাই করবেন। এটাতো একতরফা বিষয় নয়, উভয় পক্ষের সম্মতি লাগে।
ভারতের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যেসব অমীমাংসিত নানা সমস্যার সমাধান হয়েছে সেগুলোরও উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার স্বাধীনচেতা নেতৃত্বের কারণে ৪১ বছর পর ছিটমহল বিনিময় হয়েছে। এতে বাংলাদেশের কোন ক্ষতি হয়নি। দেশের মানচিত্রে ১০ হাজার একর যুক্ত হয়েছে। যাতে জাতীয় স্বার্থ বিষর্জন হয়নি।’
১৯৭২ সালে ভারতের সঙ্গে করা ২৫ বছর মেয়াদী নিরাপত্তা চুক্তির বিষয়ে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। বিএনপি এই চু্ক্তিকে গোলামি চুক্তি বলে আসছিল। তবে নয় বছর ক্ষমতায় থাকলেও তারা এই চুক্তি বাতিল করেনি। আর ১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মেয়াদ শেষে তা নবায়ন হয়নি।
এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কেউ কেউ একদিন উঁচু গলায় বলেছিল বঙ্গবন্ধু ভারতের সাথে গোলামির চুক্তি করেছে। যদি গোলামির চুক্তি করতেন, তাহলে ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারে হত্যার পর আমরাই ক্ষমতায় থাকতাম।’
সড়ক ও জনপথ ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতির সভাপতি আবদুন নুমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এম এ এন ছিদ্দিক, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান, ইনস্টিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাপতি এ কে এম এ হামিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Posted ১০:১৫ | বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain