| বুধবার, ০৮ মার্চ ২০১৭ | প্রিন্ট
সিলেটের তরুণী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি বদরুল আলমের সাজা ঘোষণা হয়েছে। তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে সিলেটের একটি আদালত। এছাড়া রায়ে বদরুলের পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, আনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বুধবার বেলা ১২টার দিকে সিলেটের মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আকবর হোসেন মৃধা এই রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় বদরুল আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রায় ঘোষণার জন্য সকাল ১০টার আগে বদরুলকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে তাকে আদালতের কাঠগড়ায় নেয়া হয়।
সাড়ে ১১টার পর চাঞ্চল্যকর এই মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য আদালতকক্ষে আসেন বিচারক। এরপর মামলার একমাত্র আসামি বদরুলের উপস্থিতিতে তিনি রায় পড়া শুরু করেন।
গত বছরের ৩ অক্টোবর সিলেটের এমসি কলেজ কেন্দ্রে স্নাতক পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে আসার সময় হামলার শিকার হন খাদিজা। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সম্পাদক বদরুল আলম তাকে কোপান। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার মাথার খুলি ভেদে করে মস্তিষ্কও জখম হয়।
আশপাশে থাকা অনেকে তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। এবং বদরুলকে আটক করে পুলিশে দেয়।
সিলেটে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে খাদিজাকে নেয়া হয় ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে। সেখানে তিন দফা অস্ত্রোপচারের পর অনেকটা সুস্থ হন খাদিজা। শরীরের বাঁ পাশ স্বাভাবিক না হওয়ায় খাদিজাকে পাঠানো হয় সাভারের সিআরপিতে। সেখানে তিন মাসের চিকিৎসা শেষে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সিলেটের গ্রামের বাড়ি ফেরেন খাদিজা।
হামলার এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। বদরুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা মানববন্ধন, ক্লাস বর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।
ঘটনার পরদিন খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুস বদরুলকে আসামি করে মামলা করেন। গত ৫ অক্টোবর বদরুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠায় আদালত।
গত বছরের ৮ নভেম্বর খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট নগরীর শাহপরান থানার এসআই হারুনুর রশীদ আদালতে অভিযোগপত্র দেন। পরে ১৫ নভেম্বর আদালত তা গ্রহণ করে। গত ২৯ নভেম্বর আদালত বদরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয়।
গত ৫ ডিসেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের প্রথম দিন বদরুল আলমের বিরুদ্ধে আদালতে ১৭ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন। পরে ১১ ডিসেম্বর ১৫ জন এবং ১৫ ডিসেম্বর সাক্ষ্য দেন আরও একজন। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে সাক্ষ্য দেন খাদিজা। মামলায় ৩৭ সাক্ষীর মধ্যে ৩৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
গত ১ মার্চ সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরোর আদালত থেকে মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়। ওই আদালতে আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানে সীমাবদ্ধতা থাকায় মামলাটি দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়।
Posted ০৭:১৪ | বুধবার, ০৮ মার্চ ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain