
| শনিবার, ০৪ মার্চ ২০১৭ | প্রিন্ট
ক সময়ের আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদুর রহমান মান্নাকে ওই দলটির বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।হস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে মান্নার সমালোচনা করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, “মান্না সাহেব, আপনি জেল থেকে বেরিয়ে এখন এত সুন্দর সুন্দর কথা বলেন, অথচ বের হওয়ার সাথে সাথে কাকে কাকে ফোন করেছেন? কাদের বাসায় দাওয়াত খেয়েছেন? কারা আপনাকে দেখতে এসেছে?
“এগুলো করলে এগোবেন কীভাবে? আপনি কি জানেন না শেখ হাসিনা কত চতুর।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) আয়োজনে পতাকা উত্তোলন দিবসের এই আলোচনা অনুষ্ঠানে জাসদের সাবেক নেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি মান্নাও ছিলেন আলোচক।তিনি রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানালে তার প্রতিক্রিয়ায় তার তৎপরতা নিয়ে সমালোচনা করেন কাদের সিদ্দিকী।জাসদ থেকে বেরিয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়া মান্না এখন নাগরিক ঐক্য নামে একটি সংগঠনের আহ্বায়ক।
বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার সঙ্গে টেলি কথোপকথনে সরকার উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের এক মামলায় কারাগারে থেকে কিছু দিন আগে জামিনে বেরিয়ে আসেন মান্না।
মান্নাকে দেখতে হাসপাতালে ওবায়দুল কাদের মান্নাকে দেখতে হাসপাতালে ওবায়দুল কাদের
কারামুক্ত মান্নার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মান্নার সঙ্গে ডাকসু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরেছিলেন ছাত্রলীগের তখনকার সভাপতি কাদের।
অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ পাওয়া কাদের সিদ্দিকী দুই দশক আগে আওয়ামী লীগ ছেড়ে কৃষক, শ্রমিক, জনতা লীগ গঠন করে রাজনীতির মাঠে সক্রিয়।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, “আরেকটা ৫ জানুয়ারির নির্বাচন দিলে দেশের কী হবে জানি না, তবে শেখ হাসিনার কী হবে তা জানি। আবার ৫ জানুয়ারির নির্বাচন দিলে শেখ হাসিনা হবে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মহিলা স্বৈরাচারী শাসক।”
নিজের জেলা টাঙ্গাইলের এমপি ছানোয়ার হোসেনের ওবায়দুল কাদেরের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার খবরটির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “একজন এমপি সরকারের বহুত উপরের পদমর্যাদার, অথচ সেই এমপিরা এখন চড়, থাপ্পর কিল, ঘুষি খাচ্ছে। দেশে রাজনীতি না থাকলে যা হয়।”
‘বিকল্প ঐক্যে বিকল্প খেলা’
প্রেস ক্লাবের এই আলোচনা সভায় বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন, যাদের আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে নতুন জোট গড়ার আহ্বান জানান কাদের সিদ্দিকী।
রাজনীতিতে ‘বিকল্প খেলা’ দেখাতে সবাইকে এক জোট হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “বিকল্প রাজনৈতিক ধারা গড়ে তুলতে আমি আগ্রহী। জামায়াতে ইসলাম ছাড়া আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে সকল রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলুন, আমি সাথে আছি।”
কাদের সিদ্দিকী (ফাইল ছবি) কাদের সিদ্দিকী (ফাইল ছবি)
সভায় নাগরিক ঐক্যের মান্না ছাড়াও ছিলেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা সুলতান মো. মনসুর, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
ঐক্য গড়ার তাগিদ দিয়ে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মান্না বলেন, “প্রয়োজনে তিনশ আসনের একটিতেও আমি প্রার্থী দিব না। তবুও ঐক্য দরকার, ঐক্য গড়ে তুলুন।”
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল বলেন, “সকল অসাম্প্রদায়িক শক্তি এক সাথে হয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে তৃতীয় শক্তি গড়ে তুলতে হবে। চলুন একসাথে রাস্তায় নামি।”
ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মনসুর, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেকও।
বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, “কথা বলার জন্য এক জোট হয়ে কাজ করা দরকার। যারা জনগণের পাশে থাকতে চান, আসেন দাঁড়াই। এইভাবেই সকল গণতান্ত্রিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হলে রাজনৈতিক দৃশ্যপট পরিবর্তন করা সম্ভব।”
আলোচকরা সবাই আওয়ামী লীগের দেশ পরিচালনা ও ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
জেএসডি সভাপতি রব বলেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যদি সুষ্ঠু না হয়, দেশের মানুষ যদি নিজের ভোট নিজে দিতে না পারে, তবে দেশের প্রত্যেকটা মানুষ রাস্তায় নামবে।”
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল বলেন, “আরেকটা ৫ জানুয়ারির নির্বাচন দেশের মানুষ হজম করতে পারবে না।”
একাদশ জাতীয় নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন জাফরুল্লাহ।মান্না বলেন, “কথা বললে আবার আদালত অবমাননা হয়ে যাবে, দেশের কোনো নিম্ন আদালত সরকারের ইশারার বাইরে চলে না।”
Posted ১০:১৩ | শনিবার, ০৪ মার্চ ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain