
| বুধবার, ০১ মার্চ ২০১৭ | প্রিন্ট
বিদেশ থেকে আমদানি করা তরল গ্যাস এলএনজির দাম বেশি পড়বে বলে সমন্বয়ের জন্য গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কথা জানিয়ছে সরকার। তবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনে করেন, সরকারের নিজের লোকেরা যেন এই ব্যবসা করতে পারে সে জন্যই এই দাম বাড়ানো হয়েছে।
বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব এক আলোচনায় মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির (সে সময় নাম ছিল বিডিআর) সদরদপ্তর পিলখানায় নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণে এই আলোচনার আয়োজন করে বিএনপি। আলোচনায় সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের পাশাপাশি গ্যাসের দাম বৃদ্ধি, পরিবহন ধর্মঘটসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন ফখরুল।
এরই মধ্যে গ্যাসের বর্ধিত মূল্য কার্যকর হয়েছে। আগামী জুনে আরেক দফা গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হলেও উচ্চ আদালত ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছে এই সিদ্ধান্ত। বিএনপি এরই মধ্যে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে।
সরকার বলছে, দেশে উৎপাদিত গ্যাসের দাম ইউনিটপ্রতি ২.২৪ ডলার হলেও আমদানি করা এলএনজির দাম বড়বে ৮ থেকে ৯ ডলার। এ জন্যই আগেই দাম বাড়িয়ে রাখা হয়েছে। ভবিষ্যতে দাম বাড়ও বাড়বে বলেও ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে।
তবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা (গ্যাসের দাম বৃদ্ধি) সম্পূর্ণ অনৈতিক ও অযৌক্তিক। এর উদ্দেশ্য একটিই। এলএনজির আমদানি করে তাদের লোকেরা বিক্রি করবে।’
দেশজুড়ে পরিবহন ধর্মঘটের ভোগান্তির জন্য একজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীকে দায়ী করেন ফখরুল। কোনো নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘পরিবহণ ধর্মঘটের সঙ্গে পেছনে যিনি মদদ যোগাচ্ছেন তিনি সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী। আজকে এইভাবে একটি অরাজক পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে। সম্পূর্ণ ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থে দেশব্যাপী পরিবহণ ধর্মঘটের মাধ্যমে গোটা দেশকে ধ্বংস করেছে। সরকার এই সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে।’
২০০৯ সালে পিলখানায় বিদ্রোহ নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ভেঙে দেয়ার জন্য সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে পিলখানা হত্যাকা- সংগঠিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের উপর বারবার আঘাত এসেছে। আমাদের গর্বিত সেনাবাহিনী তা প্রতিহত করেছে। কিন্তু প্রথম তাদের উপর আঘাত এসেছে সেদিন তাদের পক্ষে কোনো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি। আমরা মনে করি এরজন্য দায়ী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।’
বিডিআর বিদ্রোহের মামলায় প্রকৃত অপরাধীরা সাজা পায়নি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভবিষ্যতে পিলখানা হত্যাকা-ের প্রকৃত অপরাধী যারা তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হবে।’
বর্তমান সরকার অগণতান্ত্রিক শাসন চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল। বলেন, ‘আজকে বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মিডিয়া সব নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। উদ্দেশ্য একটাই একদলীয় শাসন কায়েম করবে। বিচারের নামে সরকার মিথ্যা মামলা দিয়ে গোটা দেশকে কারাগারে পরিণত করেছে। বেগম খালেদা জিয়া প্রতি সপ্তাহে কখনো একবার, কখনো দুইবার আদালতে যেতে হচ্ছে। তারা খালেদা জিয়াসহ বিএনপিকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায়।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘দেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করেছে। মানুষ আগামীতেও গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করবে।’
আগামী সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন সম্পর্কে বিএনপির বক্তব্য স্পষ্ট। আমরা নির্বাচন চাই। কারণ বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। কিন্তু সেটা অবশ্যই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে।’
সাবেক সেনাপ্রধান ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান রুহুল আলম চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল আলম চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিজান প্রমুখ বক্তব্যে রাখেন।
Posted ০৮:১৯ | বুধবার, ০১ মার্চ ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain