সানিউর রহমান তালুকদার, নবীগঞ্জ প্রতিনিধি : নবীগঞ্জের দালালদের খপ্পড়ে পড়ে লেবানল গিয়ে স্বপ্না নামের এক যুবতি ৩ বছর ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। মিলছেনা যুবতির কোন খোঁজ খবর। কেমন আছে বা কি করছে এই খবরটুকুও কেউই দিতে পারছেনা। সে উপজেলার কান্দিগাঁও গ্রামের নুর ইসলামের কন্যা। এনিয়ে চরম হতাশায় পোহাতে হচ্ছে যুবতির স্বজন-পরিজনদের। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রেক্ষিতে দুই দালালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সুত্রে জানা যায়, সুন্দর ভবিষ্যত ও সোনালি দিনের স্বপ্ন এবং দরিদ্র পিতা-মাতার মুখে হাসি ফুটাতে ৩ বছর আগে স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে সূদুর লেবানলে পাড়ি জমান নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের কান্দিগাঁও গ্রামের নুর ইসলামের ২১ বছর বয়সী যুবতি কন্যা স্বপ্না বেগম। সেখানে তাকে গৃহকর্মীর চাকুরী দিবেন এবং প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকা রোজি করার প্রলোভন দেখিয়ে ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে স্বপ্না’কে সাথে করে নিয়ে যায় একই ইউনিয়নের সাতাইহাল গ্রামের হারুন মিয়ার পুত্র লেবানল প্রবাসী জিলু মিয়া। ৭০ হাজার টাকা গ্রহন করে তার পিতা হারুন মিয়া।
সেখানে যাওয়ার পর তার মা-বাবার সাথে ১ দিন মোবাইল ফোনে কথা বলেছিল স্বপ্না। এর পর থেকেই যোগযোগ নেই। এভাবেই একে একে তিন বছর পেরিয়ে গেলেও তার কোন হদিছ মিলছেনা। সে বেছে আছে কিনা কোন কিছু হয়েছে তাও জানেন না কেউ। দালালদের ধারে গেলে দালালরা শুধু আশ্বস্থ করেন স্বপ্না ভালো আছে, কয়েক দিনের মধ্যেই দেশে ফিরে আসবে। কিন্তু তিন বছর ধরে দালালদের এমন আশার বাণী শুনে আসলেও তার কোন সন্ধান মিলেনি বলে জানান স্বপ্নার মা সুফিয়া বিবি এদিকে, গত ২০ দিন পূর্বে দালাল জিলু দেশে আসার খবর পেয়ে স্বপ্নার স্বজনরা খোঁজ খবর নিতে দালাল জিলুর বাড়িতে যান। এ সময় দালাল জিলু মিয়া স্বপ্না বেগমের মা-বাবাকে তার মেয়ের আশা বাদ দিয়ে দিতে বলেন। এমটাই কান্না জরিত কন্ঠে জানান স্বপ্নার মা সুফিয়া বিবি।
তিনি আরো জানান, দালাল জিলুর এহেন কথাবার্তায় তাদের সন্ধেহ হলে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকাবাসীকে অবগত করেন। অবশেষে কোন রাস্তা না পেয়ে গত শুক্রবার রাতে নবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন স্বপ্নার মা সুফিয়া বিবি। এরই প্রেক্ষিতে গতকাল শনিবার সকালে দালাল জিলু ও তার পিতা হারুন মিয়াকে গ্রেফতার করে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ। নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এস.এম আতাউর রহমান জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে মানবপাচারকারী হিসাবে জিলু মিয়া ও তার পিতা হারুন মিয়াকে গ্রেফতার করে হবিগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।