
নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫ | প্রিন্ট
ডেস্ক রিপোর্ট : জুলাই আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা অপরিসীম বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। ৮ মার্চ নারী দিবসে দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে ছাত্রদল। এ আলোচনা সভায় একথা বলেন তিনি।
ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “নির্যাতিত ছাত্রদলের নেত্রীদের, যারা দীর্ঘ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সাড়ে ১৫ বছর ধরে রাজপথে অকুতোভয় চিত্তে লড়াই করেছে, সংগ্রাম করেছে, আমি তাদের সেই দিনের যে ত্যাগ স্বীকার করেছে, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছে, মামলা-হামলার শিকার হয়েছে, তাদের সবাইকে আজকের এই আন্তর্জাতিক নারী দিবসে কৃতজ্ঞার সাথে স্মরণ করছি। ছাত্রদল তাদের অবদানকে কৃতজ্ঞভরে স্মরণ রাখবে।
এবং সেই সাথে আমি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অবদান এবং সর্বশেষ এই জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকলের মনে থাকার কথা, সে আন্দোলনের একটি অন্তিম মুহূর্তে, যেদিন ছাত্রলীগ এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃশংস হামলা চালিয়েছিল সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর, সেদিন আমাদের বোনেরা, এই সাধারণ শিক্ষার্থীরা, এই রোকেয়া হল, শামসুন্নার হল সহ, এই আমাদের বোনেরা, এই রাজু ভাস্কর্য এসে যে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, সারা বাংলাদেশ সেদিন জাগ্রত হয়েছিল।
এবং সত্যিকার অর্থে সেদিন জুলাই-আগস্ট আন্দোলন প্রাণ ফিরে পেয়েছিল। আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি, এই আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই এবং আমাদের স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য সেলিম আপা বলে গিয়েছেন, তাদের সেই ধরনের রাজপথে অবদান, রাজপথে অবস্থান, যখনই বাংলাদেশে কোন অপরাধ সংঘটিত হবে, তাদের সম্মিলিতভাবে সেই প্রয়াস আমরা দেখতে চাই।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে নারীর অধিকার প্রশ্নে, জুলাই-আগস্টে যেভাবে নারীরা রাজপথে ছিল, নারীদের অধিকার আদায় ঠিক সেভাবে রাজপথে থাকবে আমি সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।আমি আজকের এই আন্তর্জাতিক নারী দিবসে, একটি উদযাপন করার মত দিবস কিন্তু এই বাংলাদেশ, এই ২৪ সালের পরবর্তী বাস্তবতায়ও, ২৫ সালে যে বাস্তবতায় উপনীত হয়েছে, বিশেষ করে সর্বশেষ সময়গুলোতে, এই নারীদের প্রতি সহিংসতা-নির্যাতন যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সারা দেশে ধর্ষণসহ যে ধরনের নারীদের প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে, আমরা সত্যিকার অর্থেই ক্ষুব্ধ, আমরা ব্যথিত।
এবং সর্বশেষ এই মাগুড়ায় যে আট মাস আট বছর বয়স, যে শিশুকে অমানবিক পর্যায়ে ধর্ষণ করা হয়েছে, আমরা আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষণ হয়েছে। আমরা শুধু স্পষ্টভাবে বলতে চাই, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। শুধু নিশ্চিত করলেই শেষ হবে না, বাংলাদেশে আর কখনো এই ধরনের জন্য কোন অপরাধ কোথাও সংঘটিত না হয়, সেই ব্যবস্থা, সেই আইন অবশ্যই অবশ্যই জাতীয় সংসদে পাশ করতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “যখনই কোন নারী নির্যাতনের, সহিংসতার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ার ভাইরাল হয় কিংবা আমাদের সম্মুখে আসে, তখন আমরা সবাই সোচ্চার হই এবং প্রতিবাদ জানাই। কিন্তু আপনারা লক্ষ্য করে দেখেন, যদি এই মাগুড়ার ঘটনাটি যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় না আসতো, এক্ষেত্রে আমাদের দলীয় যুব দলের আমি কৃতজ্ঞ স্বীকার করছি, যুবদলের একজন নেতার নেতৃত্বে, তার অবদান রয়েছে, সহ বিএনপির নেতৃবৃন্দ এখানে অবদান রেখেছে, তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা করেছে। এটা সারা বাংলাদেশ এর প্রতি নিন্দা জানিয়েছে, ধিক্কার জানিয়েছে এবং বিচারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছে।
কিন্তু যে শত শত হাজার হাজার ঘটনা আমরা মিডিয়ার চক্ষু অন্তরালে থেকে যাচ্ছে, যেগুলো আমরা ভিডিও কিংবা অডিও কোন ভাবে আমরা পেয়ে থাকি না, এভাবে হাজার হাজার নারীরা, যেভাবে শিশুরা নির্যাতিত হচ্ছে, সে ধরনের আমরা সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করবো ইনশাআল্লাহ। আমাদের জনাব তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা ছাত্রদল, আমরা নিশ্চয়তা দিতে পারি, আজকের এই অনুষ্ঠানে শুধু নয়, আগামীতে এই আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে না শুধুমাত্র, নারীদের জন্য ছাত্রদল পৃথক পৃথক কর্মসূচি পালন করবে।”
ছাত্রদল সভাপতি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, জনাব তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামীতে বাংলাদেশে নারীর প্রতি যে সহিংসতা, শিশুদের প্রতি যে সহিংসতা, তার অবসান ঘটবে ইনশাআল্লাহ। আমরা ছাত্রদল হৃদয় থেকে বিশ্বাস করি, তার যে ধরনের মনোবাসনা এবং তিনি যে ধরনের আমাদের সাথে যখনই সাক্ষাৎ হয়েছে, আমাদের সাথে যখনই স্কাইপি করার সুযোগ হয়েছে, তখনই তিনি এই নারীদের অধিকারের প্রশ্নে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকারের প্রশ্নে, তার আপোসহীন অবস্থান আমাদেরকে বারবার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
আমরা বিশ্বাস করি, আগামীতে দেশের সাধারণ জনগণের ভোটে যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারে, আমরা আরেকজন রাষ্ট্রনায়ককে যাচ্ছি, যার নেতৃত্বে আমরা সাম্যভিত্তিক ও মানবিক বাংলাদেশ বিনিময় করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।”
রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “আজকের এই অনুষ্ঠানের বিশেষভাবে আমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি, বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী, যিনি শুধুমাত্র শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তমের সহধর্মণী হিসেবে অবদান রাখেননি, যিনি তার নিজ মহিমায় আপন শক্তিতে উদ্ভাসিত হয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, আমি শুধুমাত্র বাংলাদেশের রাজনীতি নয়, আপনারা বিভিন্ন আলোচনায় বক্তব্যে শুনেছেন, এই নারীদের অবদান, এই নারীদের অধিকার বাস্তবায়নে, তার একক ভূমিকা আজ নারী সমাজ কৃতজ্ঞ চিত্রে স্মরণ করে।
আমরা আশাবাদ ব্যক্ত করছি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসবেন এবং আবারো তিনি তার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এই নারীদের অধিকার বাস্তবায়নে সর্বাত্মক ভূমিকা পালন করার তৌফিক মহান আল্লাহ দান করবেন ইনশাল্লাহ।”
Posted ১৫:৪০ | শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain