
নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫ | প্রিন্ট
ডেস্ক রিপোর্ট : মসজিদের নগরী বাগেরহাটে দু’টি মসজিদে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও তারাবির নামাজ আদায় করছেন। পুরুষের পাশাপাশি নারীদের মসজিদে নামাজ পড়ার বিধান থাকলেও, নানা কারণে বাংলাদেশের সেই প্রচলন নেই। তবে ১৫ বছর আগে থেকে বাগেরহাট শহরের সোনাতলা এলাকার আউলিয়াবাদ জামে মসজিদে নিয়মিত তারাবির নামাজ আদায় করছেন নারীরা। মসজিদে এসে নামাজ আদায়ের ফলে নারীরা আরও বেশি আমলদার হতে পারছেন বলে দাবি মসজিদ কর্তৃপক্ষের।
খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়কের পাশে সোনাতলা মোড় এলাকায় তিনতলাবিশিষ্ট এই মসজিদের দোতলায় নামাজ আদায় করেন নারীরা। আলাদা সিঁড়ি দিয়ে নামাজের জন্য ওঠেন তারা। পুরুষেরা যে ইমামের পেছনে নামাজ আদায় করেন, নারীরাও একই ইমামের পেছনে নামাজ আদায় করেন। ১৫ বছর ধরে নারীরা এই মসজিদে কোনো প্রকার বিতর্ক ও অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শরিয়ত সম্মতভাবে তারাবির নামাজ আদায় করছেন। ভবিষ্যতে জুমা ও ওয়াক্তের নামাজ আদায়ের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল মতিন হাওলাদার।
মো. আব্দুল মতিন হাওলাদার জানান, মসজিদের মুসল্লিদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ১৫ বছর আগে মসজিদে নারীদের নামাজের ব্যবস্থা করি। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত নিয়মিত নারীরা তারাবিহ নামাজ পড়ছেন।
মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা হারুনুর রশিদ পিরোজপুরীহাফেজ কারি মো. মোবারক হোসেন বলেন, দেশের অর্ধেক মানুষ নারী। কিন্তু নারীদের মসজিদে আসার সুযোগ না থাকায় তারা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান থেকে দূরে রয়েছে। মসজিদে আসলে নারীরা ইসলাম সম্পর্কে আরও বেশি জানতে পারবে। কারণ, মসজিদে জুমার খুতবাসহ বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। এ ছাড়া নবীজির আমলেও মসজিদে নারীরা নামাজ পড়তেন। মসজিদে নারীদের নামাজ পড়ায় শরিয়তের কোনো বাধা নেই। অন্য মসজিদেও এভাবে নারীদের মসজিদে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রাখা উচিত।
বাগেরহাটে আওলিয়াবাদ জামে মসজিদের নারীরা তারাবির নামাজ আদায় করতে পারেন মসজিদের এ বিষয়টি দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে পার্শ্ববর্তী দশানী এলাকায় ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠিত বায়তুন নাজাত জামে মসজিদেও পাঁচ বছর ধরে নারীরা নিয়মিত তারাবিহর নামাজ আদায় করছেন। সেই সঙ্গে নারীদের জুমার নামাজ আদায়েরও ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। পথচারী নারীদের জন্য ওয়াক্তের নামাজের ব্যবস্থাও রয়েছে এই মসজিদে।
বায়তুন নাজাত জামে মসজিদে মায়ের সঙ্গে জুম্মার নামাজ পড়তে আসা ৮ বছর বয়সী উম্মে খাদিজা বলেন, মায়ের সঙ্গে প্রতি শুক্রবার জুম্মার নামাজ আদায় করতে আসি। এছাড়াও এবছর প্রথমবারের মতো মসজিদে এসে তারাবির নামাজ পড়ি। এতে আমার খুব ভালো লাগছে। মসজিদের দোতলায় আমরা নামাজ পড়ি। আলাদা সিঁড়িতে ওঠানামার ব্যবস্থা আছে, কোনো সমস্যা হয় না।
নামাজ পড়তে আসা বিলকিস আক্তার ছন্ধ নামের এক নারী বলেন, মসজিদের নারীদের তারাবিহ করার ব্যবস্থাটা খুবই ভালো হয়েছে। তবে শহরের মসজিদগুলোতে যাতে নারীরা ওয়াক্তের নামাজ আদায় করতে পারে, সেই ধরনের ব্যবস্থা রাখলে খুব ভালো হতো।
বায়তুন নাজাত জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মো. বশিরুল ইসলাম বলেন, মহান আল্লাহ তাআলা ইবাদতের জন্য নারী ও পুরুষকে সমান অধিকার দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। যে যেমন ভালো কাজ করবেন, আল্লাহ তেমন প্রতিদান দেবেন। মক্কা-মদিনা ও বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রে নারীরা মসজিদে নামাজ আদায় করেন। আমাদের দেশেও এটা শুরু হয়েছে। আমাদের এই মসজিদে শতাধিক নারী তারাবিহ ও জুমার নামাজ আদায় করেন।
নারীদের আরও বেশি বেশি মসজিদে আসা উচিত মন্তব্য করে বশির উদ্দিন আরও বলেন, পুরুষেরা জুমা ও ওয়াক্তের নামাজে মসজিদে আসেন। বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল ও ইসলামিক আলোচনায় হরহামেশাই যায়। যেখানে তারা ইসলামিক আলোচনা শুনতে পারেন। কিন্তু নারীদের এই সুযোগ খুব সীমিত। তাই নারীদের মসজিদে আসা উচিত বলে মনে করেন তিনি। সূএ: ঢাকা মেইল ডটকম
Posted ০৬:৫০ | শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain