নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ২১ জুন ২০২৪ | প্রিন্ট
নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন থামছেই না। এখনো ঈদের আমেজ থাকলেও কমেনি নিত্যপণ্যের দাম। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ, মুরগি। প্রধান সবজি আলুর বাজারও চড়া। কাঁচা মরিচের দামও সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে দ্বিগুণ। ষাটের নিচে মিলছে না তেমন কোনো সবজি। মাছ ও মাংসের বাজারেও আছে অস্বস্তি।
শুক্রবার (২১ জুন) কারওয়ান বাজার, মালিবাগ-মধুবাগসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এসব বাজারে ঈদের অনেকটা আমেজ দেখা গেছে। অন্যান্য শুক্রবার সকালে এসব বাজারে ভিড় থাকলেও আজ তেমনটা চোখে পড়েনি। ঈদে রাজধানী ছেড়ে যাওয়া মানুষের একটা অংশ এখনো ঢাকায় না ফেরায় বাজারগুলোতে এখনো ভালোভাবে বেচাকেনা শুরু হয়নি। অনেক দোকান এখনো বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি ক্রেতার উপস্থিতিও ছিল অনেক কম। কিন্তু তারপরেও নিত্যপণ্যের দাম কমেনি।
কারণ হিসেবে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা জানান, ঈদের বন্ধের মধ্যে বাজারে নিত্যপণ্যের সরবরাহ কম। এ কারণে কাঁচা মরিচসহ বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে দু-এক দিনের মধ্যে বাজারে পণ্য সরবরাহ আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে বলে জানান তারা।
কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, দেশের মানুষের প্রধান সবজি আলু পাইকারিতে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজও। ঈদের আগে পাইকারিতে যে পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি দেশি বিক্রি হয়েছিল আজ পাইকারিতে তা ৮০-৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
দাম বাড়ার তালিকায় আছে ব্রয়লার মুরগিও। ঈদের আগে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০-১৯০ টাকা বিক্রি হয়েছিল। আজ বিভিন্ন বাজারে তা ১৯০-২১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ থেকে ৩৬০ টাকা কেজি। এছাড়া লেয়ার মুরগি লাল ৩০০-৩২০ দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকার ওপরে।
সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচের। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ২০০ টাকার মতো বেড়েছে। বাজারে সরবরাহ কম থাকায় রান্নাঘরের নিত্যদিনের এই পণ্যটির দাম বেড়ে গেছে বলে বিক্রেতারা জানান।
আজ বিভিন্ন বাজারে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগেও কাঁচা মরিচের কেজি ছিল ২০০ থেকে ২২০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের সময় বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম থাকে। এ ছাড়া বৃষ্টিসহ বিভিন্ন কারণে সরবরাহ খরচ বেড়েছে। তাই মরিচের দাম বাড়তি।
কমেছে ডিমের দাম
মুরগির দাম বাড়লেও কমেছে বাদামি ডিমের দাম। ডজনপ্রতি ১০ টাকা কমেছে ডিমের দাম। কারওয়ান বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা। তবে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এখনো ঈদের আগের দাম অর্থাৎ প্রতি ডজন ডিম ১৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে রসুনের দাম কমলেও বেড়েছে শসা ও টমেটোর দাম।
সবজির বাজারে লম্বা বেগুন প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। এছাড়া গোল বেগুন ৮০-৯০ টাকা, পটল ৫০-৬০, চিচিঙ্গা ৭০-৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০-৬০ টাকা, মান ও সাইজভেদে লাউ ৬০-৮০ টাকা, ছোট সাইজের মিষ্টি কুমড়া ১০০-১২০ টাকা, জালি ৫০-৬০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০, কাঁচা কলা ৯০ টাকা ডজন বিক্রি হতে দেখা গেছে, যা গেল সপ্তাহে ১০-২০ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে।
এছাড়াও শাকের মধ্যে পাট শাকের আঁটি ১৫-২০, কলমি শাক ১০-১৫, পালং ১০-১৫ টাকা, লাউ শাক ৩০-৪০, লাল শাক ১৫ টাকা, পুঁই শাক ৩০-৪০ টাকা আঁটি বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে দোকানের তুলনায় ভ্যানে কিংবা ফুটপাতের দোকানগুলোতে প্রত্যেক সবজির দাম ৫-১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে দেখা গেছে, ২০০ টাকার নিচে তেমন কোনো মাছ নেই। সাইজভেদে তেলাপিয়া ২০০-২৩০ ও পাঙাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকা, যা গেল সপ্তাহেও প্রায় একই দামে বিক্রি হয়েছে। অন্য মাছের মধ্যে মাঝারি ও বড় আকারের চাষের রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছের দাম প্রতি কেজি ২৮০ থেকে শুরু করে সাইজভেদে ৪০০-৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ৬০০ টাকার নিচে নেই পাবদা, টেংরা, কই, বোয়াল, চিতল, আইড় ও ইলিশ মাছ। চাষের কই বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩০০, চাষের শিং মাছ ৩৫০-৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
Posted ০৭:২১ | শুক্রবার, ২১ জুন ২০২৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain