বৃহস্পতিবার ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আরপিও সংশোধনীর মাধ্যমে ইসির হাত-পা বেঁধে ফেলেছে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ০৮ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট

আরপিও সংশোধনীর মাধ্যমে ইসির হাত-পা বেঁধে ফেলেছে সরকার

আরপিও সংশোধনীর মাধ্যমে সরকার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) হাত-পা বেঁধে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। অবিলম্বে মঞ্চের নেতারা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন।

শনিবার (৮ জুলাই) রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়। ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী বিল ও সরকারের নীলনকশা’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান।

সাইফুল হক বলেন, সরকারি দল আরও একটি একতরফা নির্বাচন করার পাঁয়তারা করছে। এ কারণে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নানান দিক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ। আরপিও সংশোধনী এ ঝুঁকি আরও বাড়িয়েছে। সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে সুষ্ঠু নির্বাচন করার যে দায়িত্ব দিয়েছে, আইপিও সংশোধনী তার স্পষ্ট পরিপন্থী। মূলত এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের হাত-পা বেঁধে ফেলা হলো।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আরপিও এর ধারা অনুযায়ী- আগে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সাতদিন আগে সব ধরনের বকেয়া বিল পরিশোধের বাধ্যবাধকতা ছিল। এখন ক্ষুদ্রঋণ, টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির বকেয়া বিল একদিন আগে জমা দিলেও চলবে। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচনে ঋণ ও বিল খেলাপিদের দৌরাত্ম্য আরও বাড়বে। এসব কারণে এ সংশোধনী কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা অনতিবিলম্বে এ সংশোধনী প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি। তা না হলে এ সংশোধনী প্রত্যাহারসহ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিপন্থী সব ধারা ও তৎপরতা বাতিলে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার দাবি আদায় করা হবে।

‘গত ৪ জুলাই সংসদে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী বিল পাস করে ভোট বন্ধে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা কমিয়ে আনা হলো। এ সংশোধনীর মাধ্যমে যে কোনো অনিয়মের কারণে ভোট বন্ধ রাখতে প্রতিষ্ঠান হিসাবে নির্বাচন কমিশনের যে ক্ষমতা ছিল, বাস্তবে তা কেড়ে নেওয়া হল। আরপিওর ৯১(ক) অনুযায়ী- নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে যে, তারা আইনানুগভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সক্ষম হবে না, তাহলে তারা নির্বাচনের যে কোনো পর্যায়ে ভোট বন্ধ রাখতে পারে। অর্থাৎ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পরিস্থিতি অনুকূল না হলে নির্বাচন কমিশন ভোটগ্রহণের আগেই নির্বাচন বন্ধ করতে পারতো।’

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, এখন এ ক্ষমতা সীমিত করে কেবল ভোটের দিন সংসদীয় আসনের কতিপয় কেন্দ্রের ভোট স্থগিত রাখতে পারবে, পুরো সংসদীয় আসনের নয়। সংশোধিত আরপিও অনুযায়ী, নির্বাচনের পরিবর্তে ‘ভোটগ্রহণ’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।

সাইফুল হক বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের আসল ক্ষমতা ছিল আরপিও’র ৯১(ক) ধারা। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী বিল পাস করে এখন নির্বাচন কমিশনকে প্রকারান্তরে ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করা হলো। এ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা আরও সংকুচিত করা হলো। এটা অত্যন্ত স্পষ্ট যে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে বাড়তি সুবিধা দিতে এবং জাতীয় নির্বাচনে সরকারি দলের নিয়ন্ত্রণ আরও জোরদার করতেই এ সংশোধনী আনা হয়েছে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির এ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বর্তমান নিবাচন কমিশনের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা গুরুতর প্রশ্নবিদ্ধ, পুরো নির্বাচনী ব্যবস্থা যেখানে ভেঙে দেওয়া হয়েছে- সেখানে নির্বাচন কমিশনের অবশিষ্ট ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার এ তৎপরতা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারি দলের স্বেচ্ছাচারিতা, আধিপত্য ও কর্তৃত্ব আরও বাড়িয়ে তুলবে। ক্ষমতাসীন সরকার যখন আরও একটি সাজানো একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে, তখন ভোট বাতিলে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা কমানো যে পুরোপুরি দুরভিসন্ধিমূলক তাও স্পষ্ট। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরকার ও সরকারি দলের নীলনকশা বাস্তবায়ন করতেই যে এ সংশোধনী আনা হয়েছে তাও অত্যন্ত পরিষ্কার।

‘নির্বাচন কমিশন যেভাবে উপযাচিত হয়ে নিজেদের ক্ষমতা কমানোর সংশোধনী হাজির করে সরকারি দলের ভোট কারচুপির রাস্তা প্রশস্ত করে দিয়েছে, তা বিস্ময়কর আপত্তিকর। কারচুপি, জালিয়াতি ও সন্ত্রাসসহ নানা কারণে একটি নির্বাচনী এলাকার সমগ্র নির্বাচন বাতিলে নির্বাচন কমিশনের যে ক্ষমতা ছিল, এখন তা না থাকায় নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীনদের নয়-ছয় করার সুযোগ আরও বাড়লো। এর মধ্যদিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সরকারি দলের কুমতলবও বেরিয়ে এসেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১০:৫৯ | শনিবার, ০৮ জুলাই ২০২৩

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১৩১৫১৬১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭৩০৩১  
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com