নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ১২ জুন ২০২৩ | প্রিন্ট
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ‘নিরাপদ প্রস্থান’ চাইলে একটি মাত্র পথ খোলা আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই সরকারকে যেতে হবে। নিরাপদ প্রস্থান? এই সরকারের নিরাপদে প্রস্থান করতে চাইলে একটি মাত্র পথ খোলা আছে। তা হচ্ছে জনগণের মালিকানা জনগণের হাতে ফেরত দিতে হবে, তাদের ভোটাধিকার তাদের কাছে ফেরত দিতে হবে। জনগণের ১০ দফা মেনে নিতে হবে।
সোমবার (১২ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এসব কথা বলেন।
‘শহীদ জিয়া মানেই বাংলাদেশ মহান স্বাধীনতার ঘোষক বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান’র ৪২তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। পরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে গুম হওয়া পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।
সংলাপ প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারের মন্ত্রী-এমপি এবং তাদের নেতারা সংলাপ সংলাপ করছে। সংলাপ হতে পারে। কিন্তু তার আগে ১০ দফা মেনে নিতে হবে। এরপর নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে সংলাপ হতে পারে।
এ সময় সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, গত ২৪ মে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য ভিসানীতি ঘোষণা করেছে। এরপর ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে নানা বক্তব্য গণমাধ্যমে আসছে। গত ১০ মে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে জামায়াতের সমাবেশের অনুমতি দেওয়া নিয়েও নানা কথা-বার্তা আলোচনা হচ্ছে। আসলে ভিসানীতির কারণে সরকার জামায়াতকে সমাবেশ করার অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছে বলে মন্তব্য করেন গয়েশ্বর।
তিনি বলেন, জামায়াত রাজনীতি করবে-এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু এতোদিন জামায়াত কেন রাজনীতি করতে পারেনি, সেটাই তো প্রশ্ন হওয়া উচিত। এখন কেন সরকার অনুমতি দিলো। এই অনুমতি দিয়ে সরকার বুঝাইতে চাইল-সরকারের সাথে তাদের আঁতাত হয়েছে কেউ কেউ এ কথা বলছেন। আসলে সরকার জামায়াতকে অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছে। এক ভিসা নীতির কারণে সরকারের সবাই প্রেসার মাপতেছে; সুগার পরীক্ষা করছে। সবকিছুর তো শেষ আছে।
গয়েশ্বর বলেন, গুম, খুন, হামলা, মামলা এবং দুর্নীতির সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হয়তো ২-৩ শতাংশ সদস্য জড়িত থাকতে পারে। দুর্নীতি অপকর্মের সঙ্গে সচিবালয়ের হয়তো একই অবস্থা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং আমলাদের বেশিরভাগই ভালো; তারা তো সরকারের কোনো অপকর্মের দায়ভার নেবে না।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী তো যুক্তরাষ্ট্র যাওয়া, না যাওয়া নিয়েও কথা বলেছেন। আবার শোনা যায় প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টার নাকি সেখানে একাধিক বাড়ি আছে, আমেরিকা না গেলে ওই বাড়ি কে দেখাশোনা কে করবে, প্রশ্ন রাখেন তিনি।
বাংলাদেশ ডাকাতের খপ্পরে পড়েছে মন্তব্য করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বাংলাদেশকে এই ডাকাতের খপ্পর থেকে রক্ষা করতে হলে শুধু জামায়াত ইসলাম কেন রাজপথে যারাই থাকাবে আমরা মনে করব তারা ন্যায়ের পথে এবং সংগ্রামের পথে আছে।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগেও আমরা সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীদের মুখে শুনেছি জামায়াত ইসলাম নিষিদ্ধ। সে অবস্থার মধ্যে জামায়াতের সঙ্গে এমন কি হলো বা এমন কোন গোপন চুক্তি হলো যে জামায়াতে ইসলামকে কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হলো। যাই হোক আমরা এতে খুশি কারণ ডাকাত তাড়াতে যারাই আমাদের সঙ্গে থাকবে তারাই আমাদের বন্ধু। হোক সেটা জামায়াত, হোক সেটা কমিউনিস্ট বা অন্য কোনো দল। আর জামায়াত লড়াই করছে তাদের অধিকারের জন্য।
সরকার গুম দিবস পালন করতে সংকোচ বোধ করে উল্লেখ করে আলাল বলেন, গুম হওয়া পরিবারগুলোর সামনে সরকার তাদের বিকৃত চেহারা উন্মোচন করতে চায় না। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে এই সরকার কখনো ৩০ আগস্ট গুম দিবস পালন করতে চায় না। এটা ছাড়া সরকার বাকি সব দিবসই পালন করে। অর্থাৎ সরকার জানে তাদের প্রকৃত চেহারা সাধারণ মানুষের উন্মোচন হয়েছে। এ সকল গুম হওয়া পরিবার আর্তনাদের পিছনে যারা জড়িত আছেন তাদের বিচার এই বাংলাদেশের মাটিতে ইনশা আল্লাহ হবে।
স্বাধীনতা ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন— বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ প্রমুখ।
Posted ১২:১২ | সোমবার, ১২ জুন ২০২৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain