নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট
পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে আওয়ামী লীগ সারাদেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক দল যখন পাল্টা কর্মসূচি দেয় তখন বুঝতে হবে তারা একেবারেই দেউলিয়া হয়ে গেছে। তাদের শক্তি আজকে শূন্যের কোটায়। ভীত হয়ে তারা পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে। তাদের এই ধরনের পাল্টা কর্মসূচি সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে কেউ গ্রহণ করে না। আমরা যেদিন কর্মসূচি দিয়ে থাকি সেদিন তারা পাল্টা কর্মসূচি দেয়। এর মাধ্যমেই প্রমাণিত হয় তারা দিশেহারা হয়ে দেশে একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে।
আজ (১২ ফেব্রুয়ারি) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, গ্যাস-বিদ্যুতসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গতকাল ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা কর্মসূচিতে বিপুলসংখ্যক জনগণ অংশগ্রহণ করেছে। গত কয়েকদিন গ্রেফতর ভয়ভীতির পরেও দেশবাসী কর্মসূচি পালন করেছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, চলমান আন্দোলন কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করতে বর্তমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রাকে বানচাল করতে দলীয় সন্ত্রাসী এবং কিছু সংখ্যক পুলিশ লেলিয়ে দিয়েছে। গতকাল দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির পদযাত্রায় আওয়ামী সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলা ও গুলিবর্ষণ করে।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, নরসিংদীর পলাশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেকমন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খানের মিছিল থেকে ব্যানার ছিনিয়ে নেয়। এছাড়া যশোরে ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ অমিত-এর ওপর ডিবি পুলিশ বর্বরচিত হামলা চালায়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলায় হামলা হয়েছে। পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় প্রায় ৫০০ শতাধিক নেতার্মীদের আহত হয়েছে। প্রায় শতাধিক বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠা ভাঙচুর এবং লুটপাট চালিয়েছে তারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ২০০ শতাধিক বিএনপি’র নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, বিএনপি জনগণের দাবি নিয়ে যখনি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিচ্ছে ঠিক সেই মূহুর্তে একই স্থানে বর্তমান ফ্যাসিবাদী শাসকগোষ্ঠি পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে সন্ত্রাসকে উসকে দিয়ে দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে চায়।
জনগণের রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থ ব্যয় করে পুলিশ পাহারায় শান্তি সমাবেশের নামে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানানোর সকল প্রক্রিয়া চলছে দাবি করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, গতকাল সারাদেশে বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের এমপিদের প্রত্যক্ষ নির্দেশে কোথাও কোথাও সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিএনপিসহ নিরীহ জনগোষ্ঠীর ঘরবাড়ি, জানমালের ওপরে হামলা করেছে, যার দৃশ্য আপনার নিজেরাই অবলোকন করেছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশি হামলা সত্বেও গণতন্ত্রকামী জনতা দানবীয় সরকারের রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে রাজপথে এসে কর্মসূচি সফল করে প্রমাণ করেছে, এ সরকার জনবিচ্ছিন্ন। যুগে যুগে কোন অত্যাচারী সরকার জুলুম, নির্যাতন করে টিকে থাকতে পারেনি, এই সরকারও পারবে না।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, গত ১৪ বছর ৫০ লক্ষ নেতা-কর্মীদের বানোয়াট নামে মামলা করে এবং সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে খুন-গুম করেও বিএনপি’র নেতাকর্মীসহ দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণকে এই সরকার দমাতে পারেনি। তাই ভোটারবিহীন সরকারের বিদায় এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। নির্যাতনের মাত্রা যত বাড়বে, সরকারের বিদায় ঘণ্টা ততই ত্বরান্বিত হবে। এখনও সময় আছে জনগণের ভাষা বুঝে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিয়ে অবিলম্বে সংসদ বাতিল করে পদত্যাগ করুন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, নিরীহ, নিরাপরাধ জনগণের ওপর নির্যাতন, নিপীড়ন বন্ধ করুন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু ও সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স প্রমুখ।
Posted ০৭:৩৭ | রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain