| বুধবার, ২৮ মে ২০১৪ | প্রিন্ট
স্টাফ রিপোর্টার : আমার দেশ এর মজলুম সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের নামে দায়ে করা দুদকের মামলাটিকে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হিসেবে উল্লেখ করে আইনজীবীরা বলেন, এ মামলাটি কোন অবস্থায় চলতে পারে না। অথচ আদালত এ মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য তারিখ ধার্য্য করেছেন। আমরা আদালতের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি আবেদন করেছি। সেখানে এ মামলাটি বাতিলের আবেদন করেছি। আমাদের ওই আবেদন হাইকোর্টে বিচারাধীন। এই অবস্থায় নিম্ম আদালতে মামলার কার্যক্রম চলতে পারে না। আমরা আশা করছি হাইকোর্টে এ মামলাটি বাতিল হয়ে যাবে। আইনজীবীরা বলেন, মাহমুদুর রহমান এমন একজন ব্যক্তি, যিনি দেশের সর্বস্তরের মানুষের মনের গভীরে স্থান করে নিয়েছেন।
মাহমুদুর রহমানের আইনজীবীদের এ বক্তব্যের জবাবে দুদকের আইনজীবীরা বলেন, এ মামলায় সময় মঞ্জুরের কোন সুযোগ নেই। হাইকোর্টে যে আবেদন বিচারাধীন রয়েছে, তার কোন আদেশ হয়নি। ফলে এ আদালতে শুনানি শুরু করতে ও সাক্ষ্য গ্রহণে কোন বাধা নেই।
শুনানির শুরুতে মাহমুদুর রহমান নিজেও আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, দুদক সরকারের হয়ে হয়রানির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। অবৈধ সরকারের আমলে ন্যায় বিচারপাওয়ার অলিক আকাঙ্কা আমার নেই। এই মামলার ফ্যাক্ট হলো, স্বয়ং অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দলবাজ, অসৎ কর্মকর্তাদের উর্বর মস্তিষ্কজাত বানোয়াট ও নির্লজ্জভাবে অসত্য তথ্য বেআইনীভাবে আমলে নিয়ে দুদক জালিয়াতির মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে উপরের নির্দেশ পালন করেছে।
তিনি বলেন, আমি ন্যায়বিচার প্রাপ্তির কোন অলীক আকাঙ্খা থেকে আপনার আদালতে বক্তব্য দিচ্ছি না। বাংলাদেশে ন্যায়বিচার থাকলে চার্জ গঠনের দিনেই মামলা খারিজ হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে আইনী কার্যক্রম আরম্ভ হতো। মাননীয় আদালত, আমি কেবল এটুকুই আশা করব যে, বিচারিক কার্যক্রম চলাকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সংশ্লিষ্টতা এবং স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার অপব্যবহার প্রমাণিত হতে থাকলে ধামাচাপা দেয়ার কোন চেষ্টা করা হবে না। উপরের নির্দেশে রায় শেষ পর্যন্ত যাই হোক না কেন, সত্য প্রকাশে বাধা সৃষ্টি করা হবে না।
হাইকোর্টে বিচারাধীন আবেদনটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নিম্ম আদালতে এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখার প্রার্থনা জানিয়ে করা আবেদনের ওপর শুনানিতে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয়। এক পর্যায়ে মাহমুদুর রহমানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার আদালতে বলেন, আপনারা আজ সরকার পক্ষে অন্যায্যভাবে লড়াই করছেন। গনেশ উল্টে গেলে আপনাদের টিকিটিও পাওয়াও যাবে না। দুদককে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করে বিশিষ্ট নাগরিকদের হয়রানি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন অ্যাডভোকেট মাসুদ তালুকদার। আডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, কেবল বিচার হয়েছে সেটা নয়, ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়েছে সেটাও যেন প্রতীয়মান হয় তা নিশ্চিত করা আদালতের দায়িত্ব। সেটা নিশ্চিত করতে তিনি উচ্চ আদালতের শনানি ও সিদ্দান্ত নাহওয়া পর্যন্ত মামলাল কার্যক্রমস্থগিত রেখে সময়ের আবেদন জানান।
উভয় পক্ষের আইনজীবীদের দীর্ঘ শুনানি শেষে বিশেষ দায়রা জজ আদলতের বিচারক বাসু দেব রায় এর আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামি ৯ জুন মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন। মাহমুদুর রহমানের পক্ষে শুনানিতে আরও অংশ নেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মিজানুর রহমান, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন মেজবাহ, অ্যাডভোকেট সুলতান আহমেদ প্রমুখ। সরকার পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল। শুনানির সময় আমার দেশ এর বার্তা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরীসহ আমার দেশ পরিবারের সদস্যরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম রিজুসহ আমার দেশ এর বিপুল সংখ্যক শুভাকাঙ্খি উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলেন সজিব ওয়াজেদ জয় ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক ই এলাহী চৌধুরীর ঘুষ কেলেঙ্কারী নিয়ে আমার দেশ-এ রিপোর্ট প্রকাশের পর থেকেই রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায় থেকে মাহমুদুর রহমানকে হয়রানি করা হয়। এরই এক পর্যায়ে দুদক তার কাছে সম্পদের হিসেব চেয়ে চিঠি দেয়। তিনি এ চিঠির জবাবে নিজের অবস্থান তুলে ধরে দুদককে পাল্টা চিঠি দেন। পরে সম্পদরে হিসেব না দেয়ার অভিযোগে দুদক তার বিরুদ্ধে ননসাবমিশন মামলা দায়ের করে।
Posted ১২:২৮ | বুধবার, ২৮ মে ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin