| শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২২ | প্রিন্ট
বিএম.এ আবদুল্লাহ:
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের জিউধরা ইউনিয়নের ৯৬ নম্বর বটতলা চন্দনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল হালদারের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার জেরে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে পঞ্চম শ্রেনির ছাত্রীরা।
জানা গেছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল হালদার ওই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেনির একাধিক ছাত্রীকে নিয়মিত যৌন হয়রানি করে আসছেন। এর মধ্যে গত ৫ জানুয়ারি পশ্চিম জিউধরা গ্রামের এক শিক্ষার্থী ননী গোপালের যৌন হয়রানির শিকার হলে ওই ছাত্রী বিষয়টি তার পরিবারকে জানায়। সে আর ওই বিদ্যালয়ে যাবে না এবং জোর করে পাঠালে আত্মহত্যা করবে বলেও হুমকি দেয়। ওই ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর একে একে অন্য ছাত্রীদের ঘটনাও সামনে আসে।
এ ঘটনায় যৌন হয়রানির শিকার ওই ছাত্রীর নানা গত মঙ্গলবার ইউএনও এবং মোরেলগঞ্জ থানার ওসি তুহিন মন্ডলের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীরা জানায়, প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল হালদার বিভিন্ন সময় তার কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন হয়রানি করতেন তাদের। পরে ছাত্রীরা বিষয়টি বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ময়না রানী শিকদারকে জানালেও তিনি এ ব্যাপারে কোনো সহায়তা করেননি বলে অভিযোগে জানা যায়। ঘটনার পর থেকে ওই বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেনির ছাত্রীদের অভিভাবকরা তাদের মেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন। গত বুধবার সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে পঞ্চম শ্রেনির ২৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র পাঁচজন ছাত্রকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।
স্থানীয় লোকজন জানান, ননী গোপাল হালদার এর আগে জয়বাংলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাকাকালে এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে স্থানীয়দের মার খেয়ে পরে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে বর্তমান বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে আসেন। এ ছাড়া এলাকাতেও বিভিন্ন সময় তার এ ধরনের আচরণের অভিযোগ রয়েছে।
তারা আরও জানায়, প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল তার প্রতিবেশী এক গৃহবধূকে জাপটে ধরলে ওই গৃহবধূ তাকে ঝাড়ূপেটা করেন। স্থানীয় আরেক বাসিন্দার মেয়ে সন্ধ্যায় মাঠ থেকে গরু নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মাঠে বসে ওই মেয়েকে জাপটে ধরেন প্রধান শিক্ষক। মেয়েটি বাড়িতে ফিরে ঘটনা জানালে মেয়ের বাবা ননী গোপালকে রাস্তায় ফেলে মারপিট করেন।
প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল হালদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং রাজনৈতিক কারণে তিনি হয়রানির শিকার বলে দাবি করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ব্যস্ত থাকায় অভিযোগ দেখতে পারিনি। অভিযোগ দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’
অভিযোগ সম্পর্কে ওসি তুহিন মন্ডল জানান, অভিযোগ পেয়েছেন। তাদের সংশ্নিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার জালাল উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। তবে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার সজল মহলীর সঙ্গে কথা বলার জন্য তার মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
Posted ০৮:৩২ | শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Rafiq Masum