এদিকে অধিকাংশ বাজারে সবজি ভেদে পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত দাম কমলেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে শাক। সবজির সঙ্গে দাম কমেছে পেঁয়াজ, রসুন ও আদার। অপরিবর্তিত রয়েছে চাল, ডাল ও ভোজ্যতেলের দাম।শুক্রবার (২৬ জুন) রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, মালিবাগ রেলগেট, মগবাজার, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা ও খিলগাঁও, খিলগাঁও মৈত্রী মাঠের কাঁচা বাজার ঘুরে এসব চিত্র উঠে এসেছে।
এসব বাজারে কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা কমে বর্তমানে প্রতিকেজি টমেটো আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পটল ৩০ থেকে ৪৫ টাকা, ঝিঙা-চিচিঙা-ধুন্দল ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, কাঁকরোল ৪০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ও উস্তা ৩০ থেকে ৫০ টাকা, কচুর ছড়া ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কচুর লতি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, আলু ৩০ টাকা কেজি দরে।
দাম অপরিবর্তিত আছে কলা, বড় কচু, লেবু, পুদিনা পাতা, লাউ, জালি কুমড়ার দাম। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে তিন থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বাড়তি রয়েছে শাকের বাজারে। বর্তমানে এসব বাজারে প্রতি আঁটি (মোড়া) কচু শাক বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা, লাল শাক ১৫ টাকা, মূলা ১৫ থেকে ২০ টাকা, পালং শাক ২০ টাকা, লাউ ও কুমড়া শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পুঁই শাক ২০ টাকা মোড়া বিক্রি হতে দেখা গেছে।
আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে গরু ও খাসির মাংস। এসব বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা, মহিষের মাংস ৬০০ টাকা, খাসির মাংস ৮০০ টাকা, বকরি ৭৫০ টাকা কেজি দরে।
গরু-খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে মুরগির বাজার। গত দুই/তিন দিন আগে মুররির বাজারে দাম কমলেও হঠাৎ আবার বাড়তি মুরগির বাজার। তিন দিনের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বর্তমানে প্রতিকেজি বয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা কেজি দরে, কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি লেয়ার ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা, সাদা লেয়ার ২০০ থেকে ২১০ টাকা কেজিদরে। কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতিকেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৯০ টাকা, প্রতিকেজি দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজিদরে।
দাম বাড়তি রয়েছে ডিমের বাজারে। বর্তমানে প্রতিডজন লাল ডিম (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা, দেশি মুরগি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, সোনালী মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০, হাঁস ১২৫ টাকা, কোয়েল প্রতি ১০০ পিস ২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
ছোট মাছ ও ইলিশের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও বাড়তি রয়েছে বড় মাছের দাম। এসব বাজারে দাম বেড়ে বর্তমানে প্রতিকেজি কাঁচকি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, কেজিদরে, মলা ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, ছোট পুঁটি (তাজা) ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, ছোট পুঁটি ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, টেংরা মাছ (তাজা) প্রতিকেজি ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা, দেশি টেংরা ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজিদরে।
কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে প্রতিকেজি শিং (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৫৫০ টাকা, পাবদা ৩২০ থেকে ৫০০ টাকা, চিংড়ি (গলদা) ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকা, বাগদা ৫৫০ থেকে ৯৫০ টাকা, হরিণা ৩৮০ থেকে ৫০০ টাকা, দেশি চিংড়ি ৩২০ থেকে ৫০০ টাকা, রুই (আকারভেদে) ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, মৃগেল ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, পাঙাস ১৪০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা, কৈ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, কাতল ২২০ থেকে ৩২০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। বর্তমানে এসব বাজারে প্রতি এককেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে ১০৫০ টাকা, ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, ছোট ইলিশ আকারভেদে ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দাম। এসব বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে (মানভেদে) ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা, প্রতিকেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে, প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে (মানভেদে) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজিদরে। অপরিবর্তিত আছে ভোজ্যতেলের বাজার। বাজারে খোলা সয়াবিন (লাল) বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০৫ টাকা লিটার, খোলা (সাদা) সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা লিটার। খোলা সরিষার তেল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা লিটার।
বর্তমানে প্রতিকেজি মিনিকেট (নতুন) চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা কেজি, মিনিকেট পুরান ৬০ টাকা, বাসমতী ৬০ থেকে ৬২ টাকা, প্রতিকেজি আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা, এক সিদ্দ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, পাইজাম ৪০ টাকা, প্রতিকেজি পোলাও বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা কেজিদরে। প্রতিকেজি ডাবরি ডাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা, অ্যাংকার ৫০ টাকা, প্রতিকেজি দেশি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, মসুর (মোটা) ৮০ টাকা কেজিদরে। বাজারে ডিম-মুরগির বাড়তি দাম নিয়ে ক্রেতার মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
আলমগীর হোসেন নামে রামপুরা বাজারের এক ক্রেতা বলেন, ডিম ও মুরগির দাম দফায়-দফায় বাড়ছে, বিক্রেতারা ইচ্ছে মতো দাম বাড়ালেও দেখার কেউ নেই। তিন দিন আগে বয়লারের কেজি ১৫০ টাকা ছিল আজ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের মাংসের ভরসা ফার্মের মুরগি ও ডিমের। বর্তমানে মানুষের আয় কমেছে। এখন এভাবে একের পর এক মাছ-ডিম, মুরগির দাম বাড়া কিসের লক্ষণ?
মুরগির দাম বাড়ার বিষয়ে বোরহান নামে এক মুরগির বিক্রেতা বলেন, পাইকারি বাজারে মুরগির সরবরাহ বেশি থাকলে দাম কমে যায়। কিন্তু এখন কাপ্তান বাজারে মুরগি সংকট। এ পাইকারি বাজার থেকে রাজধানীতে মুরগি সরবরাহ করা হয়। এ কারণে সেখানে দাম বাড়তি থাকায় খুচরাতেও দাম বেড়েছে। খিলগাঁও বাজারের ডিম বিক্রেতা মামুন বলেন, হ্যাচারিতেই বাড়তি ডিমের দাম। এ কারণে বাজারে ডিম ডজনে কিছুটা বাড়তি রয়েছে।