| শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি ২০২০ | প্রিন্ট
মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম মাসুম:
বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনের সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি, পাঁচবারের নির্বাচিত এমপি ও সাবেক মন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা ডা. মোজাম্মেল হোসেন আর নেই। শুক্রবার রাত পৌনে ১টায় ঢাকা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)।
তার মৃত্যুর খবর শুক্রবার সকালে বাগেরহাটে পৌঁছলে সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে আসে।
ডা. মোজাম্মেল হোসেন ১৯৪০ সালের ১ অক্টোবর মোরেলগঞ্জ উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের কচুবুনিয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম হাজী রহমত আলী ও মায়ের নাম ময়ফুল বিবি। মৃত্যুকালে তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মাহমুদ হোসেন নামে একমাত্র পুত্রসন্তান, আত্মীয়-স্বজনসহ বহুগুণ গ্রাহী রেখে গেছেন।
বর্ষীয়ান জননেতা ডা. মোজাম্মেল হোসেন বাগেরহাটের খুবই জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচীত হন।
১৯৫৮ সালে তিনি এসএসসি, ১৯৬১ সালে এইচএসসি, ‘৬৪ সালে চিটাগং মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। চিটাগং মেডিকেলে পড়াকালীন তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।
১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭৩ সালে মোড়েলগজ্ঞ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। পর পর দুবার তিনি সভাপতি দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৯ সালে বর্ষীয়ান এই নেতা বাগেরহাট মহাকুমা (বর্তমান জেলা) আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে আমৃত্যু তিনি ওই পদে ছিলেন। দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর ধরে তিনি সুনামের সাথে বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্ষীয়ান এই নেতা সর্বশেষ গত ৯ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে পুনরায় জেলা সভাপতি নির্বাচিত হন।
আলহাজ্ব ডা. মোজাম্মেল হোসেন ১৯৯১ সালে বাগেরহাট-১ (মোল্লাহরাট- ফকিরহাট ও চিতলমারী) আসন থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচিত হয়ে প্রথমবারের মত জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন। এরপর ১৯৯৬,২০০৮,২০১৪ ও ২০১৮ সালে বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসন থেকে আওয়ামী লীগের টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বচিত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করলে ডা. মোজাম্মেল হোসেন আওয়ামী লীগ সরকারের মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্র¿ী দায়িত্ব পালন করেন। তার সময়েই বিধবাভাতা, দারিদ্র্য ভাতা, বয়স্কভাতাসহ দেশের সাধারণ মানুষের কল্যাণকর অনেক সুযোগ-সুবিধা প্রদান শুরু হয়। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে তিনি জোট প্রার্থী জামায়াত নেতা মুফতি মাওলানা আব্দুস সাত্তার আকনের কাছে পরাজিত হন।
ত্যাগী এই নেতা বারবার এমপি নির্বাচিত হয়ে মোরেলগঞ্জ-শরণখোলার জনসাধারণের শিক্ষা, চিকিৎসা, নিরাপত্তা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন। আজ শুক্রবার বাদ জুমা বাগেরহাট স্টেডিয়ামে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে এরপর বিকেল সাড়ে ৩টায় মোরেলগঞ্জ এসএম কলেজ মাঠে এবং বাদ আসর তার গ্রামের বাড়ি কচুবুনিয়ায় শেষ জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।#
Posted ১৩:৩৫ | শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি ২০২০
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Rafiq Masum