| মঙ্গলবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | প্রিন্ট
দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের ওপর শুনানি ফের পিছিয়েছে। আবেদনটির ওপর ‘নট টু ডে’ আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।
এর আগে সোমবার খালেদা জিয়ার আবেদনটি হাইকোর্টের কার্যতালিকায় রাখা হয়েছিলো। তবে শুনানির প্রস্তুতির জন্য আরও সময় প্রয়োজন উল্লেখ করে হাইকোর্টে সময় চেয়েছিলেন তার আইনজীবীরা। এরপর মামলাটি মঙ্গলবারের কার্যতালিকায় এলে তার ওপর শুনানি না করে পুনরায় সময় নেন তার আইনজীবীরা।
পরে কায়সার কামাল বলেন, সরকার বেআইনীভাবে খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক রেখেছেন। তিনি সেখানে বিনা চিকিৎসায় রয়েছেন। চিকিৎসা পাওয়া তার সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার। সেই অধিকার থেকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সরকার তাকে বারবার বঞ্চিত করছে। এর প্রতিকার চেয়ে আমরা হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করি।
সেই রিট আবেদনটি আজ হাইকোর্টের কার্যতালিকায় ছিলো। আমরা আজকে আদালতকে জানিয়েছি, আজকের জন্য আমরা আবেদনটি পরিচালনা করতে চাই না। তখন আদালত এর কারণ জানতে চাইলেন। তখন সরকার পক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছু উন্নতি হয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য ইতিমধ্যে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তখন আমি বললাম, আমাদের বিএনপির প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সেটার প্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে পাঁচজন ডাক্তারের নাম চাওয়া হয়েছিলো। সেই তালিকাও দেয়া হয়েছে।
কায়সার বলেন, যেহেতু সরকার এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে তাই আমরা আশা করছি, অন্যান্য অধিকার ক্ষুন্ন হলেও উনাকে সরকার চিকিৎসা দিবেন। সেই প্রত্যাশায় সরকারের পদক্ষেপ আমরা পর্যবেক্ষণ করছি এবং সময় নিচ্ছি। তবে আদালতকে জানিয়েছি, সরকার যদি খালেদা জিয়ার পর্যাপ্ত চিকিৎসা দেন সেক্ষেত্রে হয়ত আমাদের এ মামলা পরিচালনা না করাও হতে পারে। তখন আদালত বলেন, আপনারা তো ইউনাইটেড হাসপাতালে তার চিকিৎসা করতে চাচ্ছেন বলে পত্র-পত্রিকায় দেখছি। জবাবে আমরা বলি, তার উপযুক্ত চিকিৎসা যেখানে নিশ্চিত হবে সেখানেই তার চিকিৎসার দাবি করছি। তার অসুস্থতা অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট যেখানে হবে সে ধরণের হাসপাতালেই তার চিকিৎসা চাচ্ছি।
এ পর্যায়ে আদালত খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, যেহেতু আপনারা বিষয়টি পদক্ষেপগুলো পর্যবেক্ষণ করছেন সেক্ষেত্রে নট টু ডে থাকলো। তবে পরবর্তিতে মামলাটি কার্যতালিকায় থাকবে।
দেশের বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চেয়ে হাইকোর্টের রিট আবেদন জানায় তার আইনজীবীরা। গত ৯ সেপ্টেম্বর রিটটি দায়েরের পর ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, রিটে বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার নির্দেশ এবং এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
খালেদা জিয়ার বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়ে তার চিকিৎসা দাবি করে আসছে তার আইনজীবীরা। কিন্তু সেখানে কোনো প্রতিকার না পেয়ে তারা এ রিট দায়ের করেন বলেও তার আইনজীবীরা জানান।
প্রসঙ্গত, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই আছেন।
Posted ১৫:০৬ | মঙ্গলবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain