ঢাকা: সাধারণ মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন তারকারা। তাই তারকাদের পর্দা আর পর্দার বাইরের জীবন নিয়ে সাধারণ মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই। সংবাদমাধ্যমগুলো মানুষের এসব কৌতুহল মেটাতেই তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নানা ধরণের সংবাদ প্রচার করে থাকেন। তারকাদের এসব সংবাদের বাণিজ্যিক মূল্য অনেক। তাই অনেক গণমাধ্যমই কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যপ্রবণ হয়ে তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অতি উৎসাহী হয়ে পড়েন। সেখান থেকেই জন্ম হয় গুজব নির্ভর স্ক্যান্ডাল নিউজ। তারকাদের ব্যক্তিগত জীবনের নানা তথ্য সামাজিকভাবে ফাঁস হয়ে গেলে তাও লুফে নেয় এসব সংবাদমাধ্যমগুলো। তাদের দ্বায়িত্বহীন একটি সংবাদ প্রচারের ফলে তারকাদের জীবনে নেমে আসে অন্ধকার।সম্প্রতি দেশে কতিপয় ভুঁইফোড় অনলাইন পত্রিকার মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রতিনিয়ত ছড়িয়ে পড়ছে গুজব নির্ভর সংবাদ আর যৌনতাকেন্দ্রীক স্ক্যান্ডাল নিউজ। মাত্রতিরিক্তভাবে ছড়িয়ে পড়া এসব সংবাদের কারণে তারকারা যেমন সামাজিকভাবে বিব্রত হচ্ছেন, তেমনি পাঠকরাও এসব স্ক্যান্ডাল নিউজের ব্যাপারে চরম বিরক্তি প্রকাশ করছেন।
এ পরিস্থিতিতে সংবাদমাধ্যমের পাঠকপ্রিয়তা অর্জনের এসব অপকৌশল তথা স্ক্যান্ডাল বাণিজ্যের পক্ষে-বিপক্ষে তারকাদের অভিমত জানতে বৃহস্পতিবার কয়েকজন তারকার মুখোমুখি হয় বাংলামেইল।
নিউজ হবে কিন্তু তার সঙ্গে দায়িত্বশীলতা যুক্ত করতে হবে: বাঁধন
তারকাদের যে একটা পারসোনাল লাইফ আছে তা কেউই মানতে চান না। এটা আমার কাছে খুবই অর্ড লাগে। আমার কাছে মনে হয় আর্টিস্টরা সমাজের খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ওদের দেখেই কিন্তু মানুষ বেশি প্রভাবিত হয়। তাই তাদের নামে যে কোনো স্ক্যান্ডাল ছড়ানোর আগে কিছুটা দায়িত্বশীল হওয়া উচিৎ। অন্তত তাদের সঙ্গে কথা বলা উচিৎ। কেবলমাত্র পাঠক ধরার তাগিদে কিংবা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে এমন কোনো সংবাদ প্রচার করলে তা খুবই দুঃখজনক হয়। কেননা ছোট্ট একটা নিউজেই কিন্তু একজনের জীবন ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। তাই বলে আমি বলছি না নিউজ হবে না। নিউজ হবে কিন্তু তার সঙ্গে দায়িত্বশীলতা যুক্ত করতে হবে।
নেতিবাচক নিউজ করা উচিৎ নয়: মম
এবিষয়ে আমি বলতে চাই আমি সত্যের পক্ষে। সত্য যা তাই প্রচার হোক। সাম্প্রতিককালে আমি প্রচুর স্ক্যান্ডাল নিউজ দেখেছি। অতীতেও দেখেছি। কিন্তু আমি কখনো কোনো স্ক্যান্ডাল নিউজ সত্যি হতে দেখিনি । এসব স্ক্যান্ডাল নিউজে তারকাদের সামাজিক অবস্থান ক্ষুন্ন হয়। তাই এসব নেতিবাচক নিউজ করা উচিৎ নয়। স্ক্যান্ডাল নিউজ নয়, বেশি বেশি পজিটিভ নিউজ দেখতে চাই।
যেনতেনভাবে সংবাদ প্রকাশ করা উচিৎ নয়: জেনি
অভিনেত্রী জেনি তারকাদের নিয়ে সংবাদ প্রকাশকে স্বাভাবিকভাবেই দেখেন। কিন্তু মাঝে মাঝে এমন সংবাদও প্রকাশ করা হয় যা তারকার ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব ফেলে। এ সর্ম্পকে তিনি বলেন, ‘আমাকে নিয়ে পজেটিভ কিংবা নেগেটিভ সংবাদ প্রকাশ হতেই পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে তা যেন ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব ফেলেতে না পারে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ভক্ত ও দর্শকরা তারকাদের সর্ম্পকে সব সময়ই কৌতুহলী। তাই বলে যেনতেনভাবে সংবাদ প্রকাশ করা উচিৎ নয়।’
অনুমতি ব্যতীত নেতিবাচক সংবাদ প্রচার করা উচিৎ নয়: স্বাগতা
তারকাদের স্ক্যান্ডেল সংবাদ প্রকাশের আগে তারকার অনুমতি নেয়ার পক্ষপাতি মডেল ও অভিনেত্রী স্বাগতা। এ সর্ম্পকে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি সংবাদ মাধ্যমের একটি অ্যাথিক্স মেনে চলা উচিৎ, তাহলো কোনো তারকার স্ক্যান্ডাল সংবাদ প্রকাশের আগে অবশ্যেই তার অনুমতি নেয়া। কারো অনুমতি ব্যতীত নেতিবাচক সংবাদ প্রচার করা উচিৎ নয়।’ এক্ষেত্রে তিনি দেশের বাইরের তারকাদের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘হলিউড বলিউডের তারকারা যতটুকু ভক্তদের সামনে প্রকাশ করতে চান, ঠিক ততটুকুই সেখানকার সংবাদ মাধ্যমগুলো প্রকাশ করে।’ তাছাড়া নিজের ব্যক্তিগত বিষয়ে তারকাদের আরো সজাগ থাকার পরার্মশ দেন তিনি।
স্ক্যান্ডালের বিষয়ে আমাদের সাংবাদিকদের অনেক সচেতন হওয়া উচিৎ: ফারাহ রুমা
মিডিয়া পারসোনালিটি যারা তাদের পারসোনাল লাইফ নিয়ে অবশ্যই নিউজ হবে। কিন্তু এমন কিছু লেখা উচিত নয় যা তারকাদের পারসোনাল লাইফে ক্ষতি হয়। তাই স্ক্যান্ডালের বিষয়ে আমাদের সাংবাদিকদের অনেক সচেতন হওয়া উচিৎ। যদি এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকে যা সত্য তা প্রকাশ দোষের কিছু নয়। কিন্তু যা সত্য নয় তা প্রচার করে সংবাদবাণিজ্য করা খুবই অন্যায়। দেশের বাইরে অনেকেই স্ক্যান্ডাল করে তা প্রচার করে যাতে সে আরো ফেমাস হয় । কিন্তু আমাদের দেশের পরিস্থিতিতো তেমন নয়। একটা স্ক্যান্ডাল নিউজে একজন আর্টিস্টের লাইফ ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। তাই যা সত্য নয় তা লেখা উচিৎ নয়। লেখা হলে তা খুবই অন্যায়।’
খুবই অন্যায়: র্স্পসীয়া
মডেল ও অভিনেত্রী র্স্পশীয়া মিডিয়াতে তারকারদের নিয়ে এতো মাতামাতি একদমই পছন্দ করেন না। বিশেষ করে তারকাদের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা। এ সর্ম্পকে তিনি বলেন, ‘তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন বলে কি কিছু থাকতে নেই? আমি ব্যক্তিগত জীবনে কি রকম তা সব সময়ই নেতিবাচকভাবে প্রকাশ করা হয়, যা খুবই অন্যায়।’
Like this:
Like Loading...
Related