| মঙ্গলবার, ২৮ জুন ২০২২ | প্রিন্ট
স্বাধীনদেশ অনলাইন : সিলেটে এবারের বন্যায় ধান-চালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় বাড়িঘর ডুবে যাওয়ার পাশাপাশি সরকারি অনেক খাদ্যগুদামও ডুবে যায়। ফলে ব্যক্তি পর্যায়ে যেমন ধান-চাল ভেসে গেছে ও পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে, তেমনি সরকারি সংগ্রহের ধান-চালও নষ্ট হয়েছে। বন্যায় ধান-চাল নষ্ট হওয়াকে বাজারে চালের দাম বাড়তির একটি কারণ বলা হচ্ছে। সরকারিভাবে এই ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এখনো করা হয়নি বলে জানান কর্মকর্তারা। তবে বন্যাকবলিত বিভিন্ন উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিলেটে বন্যায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ধান-চাল নষ্ট হয়েছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জে মোট ১৯টি খাদ্যগুদামে বন্যার পানি ঢুকেছিল।
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের পিরিজপুর গ্রামের বাসিন্দা ও সাবেক তিনবারের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মঈনুল হক বলেন, আমার প্রায় ২০০ মণ ধান ছিল। এর মধ্যে ৯০ মণ ধান নষ্ট হয়েছে। অনেকের এর চেয়ে বেশি পরিমাণে নষ্ট হয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়নের টুকেরগাঁওয়ের কৃষক বাছির মিয়া বলেন, ঘরে ১০০ মণের মতো ধান ছিল। এর মধ্যে ৬০ মণের মতো ধান বন্যার পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু ভেসে গেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেটের উপপরিচালক মোহাম্মদ খয়ের উদ্দিন মোল্লা বলেন, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার ধানের উৎপাদন বেশি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মে মাসে প্রথম দফা বন্যায় দুই হাজার ২৬৯ হেক্টর জমির ধান ক্ষতির মুখে পড়ায় সেটা সম্ভব হয়নি। তিনি জানান, এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পাঁচ হাজার ৪৬৯ মেট্রিক টন কমে ধান উৎপাদিত হয়েছে তিন লাখ ২৭ হাজার ৩৭৮ মেট্রিক টন।
এদিকে সিলেট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের উৎপাদিত তিন লাখ ২৭ হাজার ৩৭৮ মেট্রিক টন ধানের মধ্যে তিন হাজার মেট্রিক টন কিনেছিল সরকার। সিলেটে সাতটি সরকারি গুদামে এসব ধান সংরক্ষণ করা ছিল। বন্যার কারণে সিলেট জেলার এসব গুদামে কমবেশি ধানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সিলেট সদর, কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাটের খাদ্যগুদামে।
সিলেট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নয়ন জ্যোতি চাকমা বলেন, আমরা তিন হাজার মেট্রিক টন চাল কিনেছিলাম। বন্যায় আমাদের সাত গুদামের মধ্যে সদর উপজেলা, কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ’ কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এখনো পুরোপুরি হিসাব করা সম্ভব হয়নি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা, ১০ থেকে ১৫ মেট্রিক টন ক্ষতি হয়েছে।
সরকারিভাবে কেনা তিন হাজার টন ধান বাদ দিলে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের কাছে রয়ে গেছে তিন লাখ ২৪ হাজার ৩৭৮ মেট্রিক টন চাল। অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে দুই দফা আকস্মিক বন্যায় প্লাবিত হয় সিলেটের ১৩টি জেলা। এসব এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশির ভাগ মানুষের সংরক্ষণ করা ধানের বড় অংশ পানিতে ভেসে গেছে অথবা পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে।
Posted ০৭:৪১ | মঙ্গলবার, ২৮ জুন ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Fokhrul Islam