এডভোকেট রাশেদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে তিনি অফিসের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়ে যান। দুপুরে অফিস থেকে সাংগঠনিক কাজে সিনিয়র আইনজীবি ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের সাথে দেখা করতে পল্টনের সিটি হার্ট বিল্ডিংয়ে গেলে তাকে অনুসরণ করে সাদা পোশাকধারী পুলিশ। ব্যারিস্টার রাজ্জাকের সাথে প্রায় এক ঘন্টা বৈঠক শেষে এডভোকেট রাশেদ নিজের অফিসের দিকে রওয়ানা দেন। এসময় কয়েকজন যুবক আবারো তাকে অনুসরণ করে। এডভোকেট রাশেদ হেটে বাস স্টেশনের দিকে যাওয়ার সময় সাদা পোশাকের পুলিশরা তাকে থামতে বলে। কিন্তু তিনি তাদের কথা না শুনে বাস স্টেশনের দিকে হাটতে থাকে। পরে সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যরা দৌড়ে এডভোকেট রাশেদকে ধরে পুলিশ ভ্যানে নিয়ে যায়। এডভোকেট রাশেদ তাদের পরিচয় জিজ্ঞাস করলে তারা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্য হিসেবে পরিচয় দেয়। কি কারনে তাকে পুলিশ ভ্যানে উঠানো হলো এবং তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জিজ্ঞাস করলে তারা জানান, রাশেদের বিরুদ্ধে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে। এ কারনে তাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এডভোকেট রাশেদের স্ত্রী সাবিহা সুলতানা জানান, রাশেদ সাধারনত সন্ধ্যার পরই বাসায় ফিরে আসে। কিন্তু সোমবার রাত ৯টায় ফিরে না আসায় তার মোবাইলে ফোন দিয়ে বন্ধ পাই। পরে তার অফিসের সহকারী মামুন বাসায় ফোন দিয়ে জানান, রাশেদ অফিসে ফোন করে শুধু জানিয়েছেন তাকে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা আটক করেছে। রাত সাড়ে এগারটার দিকে রাশেদের স্ত্রী তার এক আত্নীয়কে নিয়ে গোয়েন্দা কার্যালয়ে যান। অনেকক্ষন অপেক্ষার পর তার সাথে দেখা না করতে পারলেও গোয়েন্দা সদস্যরা নিশ্চিত করেছে রাশেদ সেখানে আছে। ওই রাতে বাসায় চলে আসেন তার স্ত্রী। পরের দিন মঙ্গলবার রাশেদের স্ত্রী তার আত্নীয়দের নিয়ে স্থানীয় থানায় গিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে কিনা জানতে চান। কিন্তু সেখানেও মামলার কোন খবর না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পরে তার পরিবার ।
দীর্ঘ প্রায় ১২২ ঘন্টা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যদের অধীনে রেখে তাকে জেরা করা হয়। জেরার সময় এডভোকেট রাশেদকে নানা ধরনের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এডভোকেট রাশেদের মুখ থেকে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সাথে জামায়াত জড়িত প্রমান করতে ব্যর্থ হয়ে এক পর্যায়ে তাকে ছেড়ে দেয়। তবে ছাড়ার আগে তার নিজ হাতে লেখা কাগজে প্রমান রাখে তিনি আর কখনো জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত হবে না। ৫ দিনের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনে তিনি ভীষন অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।