শনিবার ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

সবজির দাম চড়া

  |   শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০ | প্রিন্ট

সবজির দাম চড়া

চাল, ডাল, পেঁয়াজ, রসুনের সঙ্গে রাজধানীর বাজারগুলোতে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। আলু, পটল, বেগুন বরবটি, ঢেঁড়স, ধুন্দল, ঝিঙ্গা, করলা, পেঁপেসহ প্রায় সব ধরনের সবজির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট আরও বেড়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের পর প্রথম দিকে সবজি চাহিদা কম ছিল। তবে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি তুলে নেয়ার পর থেকেই সবজির দাম বাড়তে থাকে। কয়েক দফা দাম বেড়ে এখন বেশিরভাগ সবজির কেজি ৫০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। একাধিক সবজির কেজি একশ টাকাও ছুঁয়েছে।

সবজির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, মহামারি করোনার প্রেক্ষিতে ২৬ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত টানা ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এ সময় সবজির চাহিদা তুলনামূলক কম ছিল। তবে সাধারণ ছুটি তুলে নেয়ার পর সবজির চাহিদা বেড়েছে। অন্যদিকে বৃষ্টির কারণে অনেক সবজি ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। এসব কারণেই সবজির দাম বেড়েছে।

শুক্রবার (১৯ জুন) বিভিন্ন কাঁচাবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মান ও বাজার ভেদে বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-১০০ টাকা। রোজার শুরুতেও বেগুনের কেজি একশ টাকা ছুঁয়েছিল। তবে ঈদের পর কয়েক দফা দাম কমে বেগুনের কেজি ৩০-৪০ টাকার মধ্যে চলে আসে।

একশ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া আর এক সবজি গাজর। করোনার শুরুতে গাজরের কেজি ছিল ১০-২০ টাকার মধ্যে। এমনকি রোজার মধ্যেও গাজরের কেজি ১০-২০ টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু ঈদের পর থেকেই গাজরের দাম বাড়তে থাকে। কয়েক দফা দাম বেড়ে এখন গাজরের কেজি মানভেদে ৮০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঈদের পর অস্বাভাবিক দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে পাকা টমেটোও। গাজরের মতো করোনার শুরুতে এবং রোজায় পাকা টমেটোর কেজি ছিল ১০-১৫ টাকার মধ্যে। এখন পাকা টমেটোর দাম বেড়ে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা।

একশ টাকা কেজি ছুঁই ছুঁই করছে বরবটিও। বাজার ভেদে বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা। অবশ্য দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে বরবটির কেজি ৫০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। সে হিসেবে সবজির চড়া বাজারে বরবটির দাম তুলনামূলক কম বেড়েছে।

শুধু বেগুন, গাজর, টমেটো, বরবটি নয় চিচিংগার কেজি বেড়ে হয়েছে ৫০-৬০ টাকা, পেঁপে, ঝিঙা ও পটল ৫০-৬০ টাকা, করলা ৫০-৭০ টাকা, কচুর লতি ৪০-৬০ টাকা, কচুর মুখী ৬০-৭০ টাকা, কাকরোল ৬০-৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আলুর দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজি।

রামপুরার বাসিন্দা আশরাফুল বলেন, কিছুদিন আগে নতুন ধান উঠেছে। এরপরও বেড়েছে চালের দাম। এর সঙ্গে ডাল, আলু, পেঁয়াজ, রসুনসহ প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। আর এখন সবজির দামে তো রিতিমত আগুন লেগেছে। পরিস্থিতি এমন সবজিতে হাত দেয়ার অবস্থা নেই। করোনার কারণে এমনিতেই কষ্টে আছি, এখন সবজির যে দাম তাতে আমাদের অবস্থান খারাপ।

রিকশা চালক মতিন বলেন, পেটের দায়ে লকডাউনের মধ্যেও রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। কিন্তু আয় তেমন হয়নি। জমানো যে টাকা ছিল তা শেষ। এখন লকডাউন উঠলেও ভাড়া তেমন হচ্ছে না। আমরা কী কষ্টে আছি বলে বোঝানো যাবে না। একদিকে আয় নেই, অন্যদিকে সব কিছুর দাম চড়া। আস্তে আস্তে অবস্থা এমন দাঁড়াচ্ছে করোনায় না মরলেও, না খেয়ে মরতে হবে।

তিনি বলেন, পরিবার নিয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছি। বেশিরভাগ দিন দুপুরে ভাত খাই না। সকাল রাতেও ঠিকমতো খাওয়া হয় না। চিন্তায় চিন্তায় রাতে ঠিকমতো ঘুমাতেও পারি না। সংসারেও নানা অশান্তি লেগে আছে।

সবজির দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী আলামিন বলেন, গত এক সপ্তাহে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। সাধারণ ছুটি তুলে নেয়ায় রাজধানীতে মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে কেনাকাটাও। আবার বৃষ্টির কারণে অনেক সবজি খেতে নষ্ট হয়েছে। সব মিলিয়ে সবজির দাম বেড়েছে। আমাদের ধারণা সামনে সবজির দাম আরও বাড়বে।

রামপুরার ব্যবসায়ী খায়রুল বলেন, এখন গাজর, টমেটোর মৌসুম না। এ দুটি পণ্যের দাম বাড়া এখন স্বাভাবিক। তবে এখন যেসব সবজির মৌসুম তার দামও বাড়তি। এর কারণ বৃষ্টিতে সবজি ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। আবার ঢাকায় সবজি ঠিক মতো আসছে না।

এদিকে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগি, গরু ও খাসির মাংস। বয়লার মুরগির কেজি ১৬০- ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাল লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৩০ টাকা। পাকিস্তানি কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৬০ টাকা কেজি। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৫০০ টাকা কেজি। গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৮০-৬০০ টাকা। আর খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকা।

পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দামও কিছুটা বেড়েছে। দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫- ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৪৫ টাকা। দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ১০০-১২০ টাকার মধ্যে ছিল।

আদার দাম বেড়ে ১৫০-১৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০- ১৫০ টাকার মধ্যে।

মাছ বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগের মতোই রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০-৫০০ টাকা। নলা (ছোট রুই) মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬০-২০০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া ১৩০-১৭০, পাঙাশ ১৪০-১৮০, শিং ৩০০-৪৫০, শোল মাছ ৪০০-৭৫০, পাবদা ৪৫০-৬০০, বোয়াল ৫০০-৮০০, টেংরা ৪৫০-৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে মিনিকেট ও নাজিরশাল চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬-৬৫ টাকা কেজি, মাঝারি মানের পইজাম ও লতা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা, গরিবের মোটা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪৫ টাকা।জাগোনিউজ

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১২:৫৫ | শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com