| বুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০১৪ | প্রিন্ট
নিজস্ব প্রতিনিধি, লন্ডন : গত ৮ই এপ্রিল মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনের ওয়েষ্ট মিনিষ্টার হলে তারেক রহমান, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবি, পেশাজীবি ও বিশিষ্ট্য ব্যক্তিদের সাথে এক মতবিনিময় সভা মিলিত হন ।
যুক্তরাজ্য বিএনপি’র সভাপতি শাইয়স্তা চৌধুরী কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী কয়সর এম আহমদের পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান । সভার শুরুতেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন এনাম চৌধুরী ।
তারেক রহমান বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তার প্রমাণ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ এবং বুদ্ধিজীবীদের বক্তব্য ও লেখা বইতেও রয়েছে। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, সেক্টর কমাণ্ডার কেএম শফিউল্লাহ, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনসহ আওয়ামী’লীগ নেতা ও বুদ্ধিজীবীদের লেখা বই থেকে বিভিন্ন তথ্য ও দলিল সমাবেশে উপস্থাপন করেন।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও স্বাধীনতার ঘোষক উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, রাজনীতি করতে হলে ইতিহাস জানতে হবে। জিয়াউর রহমানকে প্রথম রাষ্ট্রপতি দাবি করায় আওয়ামী লীগের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করে তারেক বলেন, শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের নেতারা পার্লামেন্টসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন তা খুবই ন্যাক্কারজনক।
মুক্তিযুদ্ধের সময় জিয়াউর রহমান চারশ টাকার বেতনভোগী কর্মচারী ছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার করা মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে তারেক বলেন, শেখ হাসিনা এমন মন্তব্য করে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করেছেন। এই মন্তব্য প্রত্যাহার করে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমা প্রার্থনার পরামর্শ দেন তিনি।
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এসময় প্রজেক্টরের মাধ্যমে ফ্রান্স টিভিকে দেয়া সাক্ষাতকারের ভিডিওটি সমাবেশে প্রর্দশন করেন। এছাড়া জিয়াউর রহমানই যে প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন এর স্বপক্ষে দেশি-বিদেশি ঐতিহাসিক, রাজনীতিবিদ ও লেখকদের বিভিন্ন প্রামাণ্য দলিল সমাবেশে উপস্থাপন করেন।
তারেক রহমান তার বক্তব্যে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে মুজিব নগরে যে সরকার গঠিত হয়েছিল শেখ মুজিবুর রহমানকে করা হয়েছেল রাষ্ট্রপতি এবং সৈয়দ নজরুল ইসলামকে করা হয়েছিল উপ রাষ্ট্রপতি এবং তাজ উদ্দিন ছিলেন প্রধানমন্ত্রী । সেই মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী সরকারের পক্ষ থেকে দেশের সংবিধান তৈরির পর সরকার গঠনের কথা বলা হয়। সবকিছুই ঠিক ছিল ।
তারেক রহমান প্রশ্ন রেখে বলেন, শেখ মুজিব যদি প্রথম রাষ্ট্রপতি হন, তাহলে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি কেন আবার প্রধানমন্ত্রী হলেন? পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে শেখ মুজিব স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সমালোচনা করে তারেক বলেন, পাকিস্তানি পাসপোর্ট ছাড়া কি দেশে ফেরা যেত না? শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি বলেও মন্তব্য করেন তারেক। শেখ মুজিব ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম অবৈধ প্রধানমন্ত্রী; আর তাঁর কন্যা হলেন আজকের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী।
তিনি স্বাধীনতার ঘোষনার সম্পর্কে বলেন, ৭ ই মার্চের আগে ফ্রান্স টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে শেখ মুজিবুর রহমান ঐ সাংবাদিককে বলেছিলেন তিনি দেশের স্বাধীনতা চান না, তিনি স্বায়ত্তশাসন চান। এছাড়া তাজউদ্দিন আহমদও শেখ মুজিবুর রহমানকে ৭ মার্চের আগে স্বাধীনতার একটি ঘোষণাপত্র পাঠের কথা বলেছিলেন কিন্তু তিনি তা ঘোষণায় অস্বীকৃতি জানান। শেখ মুজিব তাজউদ্দিনকে বলেন এটা করা হলে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হতে পারে।
তিনি স্বাধীনতার ঘোষনা এবং বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি সম্পর্কিত বহু তথ্য-উপাথ্য উপস্থাপন করেন এবং ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে তা সবার সামনে প্রদর্শন করেন ।
আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান, নিউহাম কাউন্সিলের কাউন্সিলর আয়েশা চৌধুরী, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র অহিদ আহমদ, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক ডা: ফিরোজ মাহবুব কামাল, বৃটিশ বাংলাদেশি সাবেক সিনিয়র সিভিল সার্জেন্ট লুৎফুর রহমান আলী, বিশিষ্ট শিড়্গাবিদ ড. হাসনাত হোসেইন (এমডিই), বৃটিশ বাংলাদেশ চেম্বারের সাবেক সভাপতি মুকিম আহমেদ, বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা ও সাংবাদিক কে এম আবু তাহের চৌধুরী, কার্ডিফ ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন অধ্যাপক ড. একেএমএ মানিক, বৃটিশ বাংলাদেশ চেম্বারের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক শাহগীর ভক্ত ফারম্নক, বাংলাদেশ ওলামা-মাশায়েখ যুক্তরাজ্যের সভাপতি মাওলানা শামসুল হক, লেবার পার্টির এমপি প্রার্থী ব্যারিস্টার আনোয়ার বাবুল মিয়া, বিশিষ্ট চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট মুসাব্বির হোসেইন, প্রভাষক আলীয়ার রহমান প্রমুখ।
Posted ০৯:৫০ | বুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin