স্বাধীনদেশ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : বিএনপি বেশি ফাউল করে ফেলেছে তাই আগামী ডিসেম্বরেই তাদের জনগণ লাল কার্ড দেখাবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শনিবার (১২ নভেম্বর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে উদ্বোধকের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।  ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে নিহতদের স্মরণ করে কাদের। পরে জাতীয় চার নেতাসহ সকল শহীদদের স্মরণ করে বক্তব্য দেন।  তিনি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাস্টারমাইন্ড হিসেবে বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কথা উল্লেখ করেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১৫ আগস্টের মাস্টারমাইন্ড জিয়াউর রহমান, আর ২১ আগস্টের মাস্টারমাইন্ড হাওয়া ভবনের যুবরাজ তারেক রহমান। এরা বঙ্গবন্ধু পরিবারকে এই পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চেয়েছিল।’ তারা একেকটা দেয়াল তুলে দিয়েছে একেকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়ে। পঁচাত্তরের পর ১৭ আগস্ট, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার কুশীলব বলেও এ সময় বিএনপিকে উল্লেখ করেন কাদের। ফরিদপুর আওয়ামী লীগের ঘাঁটি উল্লেখ করে কাদের অভিযোগ করেন, সেখানে বিএনপি এখন থেকেই এমপি-মন্ত্রী বানাতে টাকার খেলায় মেতেছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ফরিদপুরে আকাশে-বাতাসে টাকা ওড়ে। কে ওড়ায়, ফখরুল। এখনই শুরু হয়েছে কাকে মনোনয়ন দেবে এ নিয়ে এখনই বাণিজ্য শুরু করে দিয়েছে। খেলা হবে এই বাণিজ্যের বিরুদ্ধে খেলা হবে। কাকে এমপি বানাইবো, কাকে মন্ত্রী বানাইবো তার কথা বলে বস্তায় বস্তায় টাকা নিচ্ছে। ফরিদপুরে এখন টাকা উড়ছে। খেলা হবে এই বাণিজ্যের বিরুদ্ধে।’ তিনি এসময় বলেন, ‘তারেক রহমান অর্থপাচারকারী। এফবিআই এসে তদন্ত করে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। তারেক রহমান অর্থপাচারকারী, ধরা খেয়েছে সিঙ্গাপুরে, ধরা খেয়েছে আমেরিকায়। তিনি মুচলেকা দিয়ে বিদেশে চলে গেছেন, বলেছে আর রাজনীতি করব না। চলে গেলেন লন্ডনে। দেশে দেশে ব্যবসা। সেই তারেক রহমানের বিরুদ্ধেও খেলা হবে।’ কাদের বলেন, ‘পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন তারা। খেলা হবে সেসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে। খেলা হবে।

সামনে ডিসেম্বর, শেখ হাসিনার ডাকে। ঢাকা সিটিতে আমাদের নাকি রেডকার্ড দেখাবে জনগণ। বিএনপিকেই রেড কার্ড দেখাবে জনগণ। খেলা হবে। খেলায় কী হয়? বেশি ফাউল করলে লাল কার্ড। বিএনপি বেশি লাফালাফি করছে, বেশি ফাউল করছে। তাদের বিরুদ্ধে লাল কার্ড কে দেখাবে, বাংলাদেশের জনগণ।’  সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৬ সালে রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকতে বিএনপি বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। বাংলাদেশ বিশ্বে দুর্নীতিতে পরপর পাঁচবার এক নম্বর রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, তারা দেশকে জঙ্গিবাদের দেশ বানিয়েছিল। এখন বিএনপি নেতারা বলছে- টেক ব্যাক বাংলাদেশ। তারা বাংলাদেশকে আবারও জঙ্গিবাদের রাষ্ট্রের দিকে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু বাংলাদেশকে পিছনে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ বিএনপির নেতৃত্বে অন্ধকারের দিকে যেতে চায় না। শেখ হাসিনা অন্ধকারে তলিয়ে যাওয়া দেশকে আলোয় উদ্ভাসিত করেছেন। শতভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছেন। দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছেন। বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও গত ১০ মাসে ৩৬ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি হয়েছে। সংকট মেকাবিলা করে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।’ ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি।  সম্মেলন উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদীর চৌধুরী এমপির সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আব্দুস সবুর ও কেন্দ্রীয় সদস্য পারভীন সুলতানা কল্পনা।  এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সংসদ সদস্য ক্যাপ্টেন অবসরপ্রাপ্ত এবি তাজুল ইসলাম, বি এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম, এবাদুল করিম বুলবুল ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম এমপি।  সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার।

স্বাধীনদেশ/ও ক