নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ১০ ডিসেম্বর ঢাকার বিভাগীয় গণসমাবেশকে নিয়ে সরকার যেন বেসামাল হয়ে পড়েছে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার, মিথ্যা কাহিনি সাজিয়ে পাইকারিহারে মামলা, গভীর রাতে নেতাকর্মীদের বাড়িতে ডাকাতের মতো হানা দেওয়া, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার চরম মাত্রায় শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নয়াপল্টন দলের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, মনে হয় পুলিশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে শপথ গ্রহণ করেছে যেভাবেই হোক ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে হবে। সরকারের নির্দেশে পুলিশ এই মূহুর্তে যা কিছুই করছে সেটি এক গভীর চক্রান্ত। গতকাল পুলিশ সদর দফতর থেকে ‘বিশেষ অভিযান পরিচালনা’ প্রসঙ্গে যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে তা দূরভিসন্ধিমূলক।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ইতোমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ ঢাকা মহানগর এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। সারাদেশে মিথ্যা মামলার হিড়িক চলছে। মনে হয় শেখ হাসিনা জনআতঙ্কে ভুগছে। তাই ঢাকায় গণসমাবেশের কথা শুনেই তিনি দিশেহারা হয়ে দমনের নিষ্ঠুর পথ অবলম্বন করেছেন।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, বাংলাদেশে আইনের উৎস হচ্ছে শেখ হাসিনার ইচ্ছা। প্রকৃত আইন, সুবিচার এবং গণতন্ত্রে বিরোধী দলের অধিকারের যবনিকা টানা হয়েছে। সরকারের নির্দেশে পুলিশ এই মূহুর্তে যা কিছুই করছে সেটি এক গভীর চক্রান্ত।
পুলিশ সদর দফতর থেকে ‘বিশেষ অভিযান পরিচালনা’র জারির বিষয়ে তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করার জন্যই আজ থেকে আবাসিক হোটেল, মেস, হোস্টেল, প্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটি সেন্টারে নিয়মিত তল্লাশি চালানোর কথা বলা হয়েছে। এটা দিবালোকের মতো সত্য যে, গণসমাবেশকে নিয়েই পুলিশের এই অশুভ তৎপরতা। নেতাকর্মীদের হয়রানী এবং জনমনে ভীতি তৈরি করাই এর উদ্দেশ্য।
পুলিশের মিথ্যা মামলা এবং মিথ্যা ককটেল বিস্ফোরণের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পর গতকাল নারায়ণগঞ্জে মশাল মিছিল করে ককটেল বিস্ফোরণ এবং মুন্সিগঞ্জে সিএনজিতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এই ঘটনা একের পর এক চক্রান্তের ধারাবাহিকতা। গোয়েন্দা সংস্থা ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের আগুন সন্ত্রাস মঞ্চস্থ করার যৌথ মহড়া। এই চক্রান্তগুলো শুরু হয়েছে ঢাকা জেলা আদালত থেকে দুই জঙ্গি পলায়নের নাটক থেকে। গত আন্দোলনের মতোই ঘটনা নিজেরা ঘটিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর দায় চাপানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু জনগণের কাছে অতীতের মতো এসব ঘটনাও বিশ্বাসযোগ্য হবে না। নাটক-ফাটক করে গণতান্ত্রিক আন্দোলন রোধ করা যাবে না। কর্তৃত্ববাদী সরকার যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, তারা টিকে থাকার স্বার্থে মনুষ্যত্বহীন যেকোনো অপকর্ম করতে দ্বিধা করবে না।
রিজভী বলেন, বিএনপি’র গণসমাবেশকে নানাভাবে বিতর্কিত ও প্রতিহত করার জন্যই দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে সরকারের বিভিন্ন এজেন্সি এবং আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্তরা। পাইকারী হারে গ্রেফতার করার পরেও ফ্যাসিস্ট সরকার নিশ্চিত হতে পারছে না জনগণের বাঁধভাঙা ঢল আটকাতে পারবে কিনা।
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, আওয়ামী কর্তৃত্ববাদী সরকারের উত্থান এই মূহুর্তেই প্রতিহত করতে হবে। মানুষের মানবাধিকার রক্ষার স্বার্থেই অবৈধ আওয়ামী দুঃশাসনের অবসান ঘটাতে হবে। অবাধ-স্বচ্ছ নির্বাচন, প্রকৃত গণতন্ত্র, শান্তি ও স্থিতিশীলতা এবং সর্বোপরি ‘গণতন্ত্রের মাতা’ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে গণতন্ত্রকামী মানুষের যে আন্দোলন তা দমানো যাবে না।
সংবাদ সম্মেলনে আবুল খায়ের ভুইয়া, খায়রুল কবির থোকন, আব্দুস সালাম, মীর শরাফত আলী সপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Posted ১৬:১২ | বৃহস্পতিবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain