সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিআরটিএ’র অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে লাইসেন্স পাচ্ছে অপরাধীরা

  |   বুধবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | প্রিন্ট

বিআরটিএ’র অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে লাইসেন্স পাচ্ছে অপরাধীরা

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে অভিজ্ঞতা ছাড়াই মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে আসল ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি করতো একটি চক্র। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে এমন অসাধু কাজ করে আসছিল। সম্প্রতি এমনই এক দালাল চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

 

গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ স্কুলের আড়ালে অপরাধীরা কোনো ধরনের পুলিশ ভেরিফিকেশন ও ডোপ টেস্ট ছাড়াই দালালদের মাধ্যমে লাইসেন্স সংগ্রহ করছেন। বৈধ লাইসেন্স ব্যবহার করে অনভিজ্ঞ চালকদের হাতে সড়ক দুর্ঘটনা, বিভিন্ন চক্র খাদ্য ও গার্মেন্টস পণ্য চুরি এবং সড়কে দুর্ধর্ষ ডাকাতি করছে।

এরই ধারাবাহিকতায় সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি সড়ক দুর্ঘটনা ও ডাকাতির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে দালাল চক্রের সদস্যদের সন্ধান পায় গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগ।

 

গ্রেফতার দালাল সদস্যরা হলেন- লিটন পাইক (৪০), সুজন পাইক (২৯), হাসান শেখ ওরফে আকচান (৪১), মোহাম্মদ আলী ওরফে মিস্টার (৫১), হুমায়ুন কবির (৩৮), আব্দুল খালেক (৩১), আব্দুল্লাহ রনি (২৩), সোহেল রানা (২৩), সোহাগ (২৩), মো. নুরনবী (৩৮) ও মো. হুমায়ুন কবির।

 

বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এসব তথ্য জানান।

 

তিনি বলেন, সম্প্রতি কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ও চুরি, ডাকাতির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে দালালের মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহের তথ্য বের হয়ে আসে। পরে রাজধানীর মিরপুরের মাজার রোড এলাকায় একটি বাড়ির সন্ধান পাওয়া যায়। সেখানে কয়েকজন দালাল নিজেরাই বিআরটিএ অফিস খুলে বসেছেন। এই অফিসে বসে তারা ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদনের পুলিশ ভেরিফিকেশন, ডোপ টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করে জমা দিতেন। আর এসব ভুয়া নথি দিয়েই দালালরা টাকার বিনিময়ে বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স বানিয়ে নিতেন।

হাফিজ আক্তার আরও বলেন, এসব লাইসেন্স আসল হলেও ব্যবহারকারীর ঠিকানা ও অন্যান্য তথ্য ছিল ভুয়া। ফলে তারা সড়কে গাড়ি চালানোর নাম করে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে যেতেন। এই দালাল চক্রের মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পায় গোয়েন্দা পুলিশ।

,m

লালবাগ গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) রাজীব আল মাসুদের নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হাসান আরাফাতের তত্ত্বাবধানে সহকারী কমিশনার (এসি) মধুসূদন দাসের নেতৃত্বে অভিযানে দালালদের কাছ থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদনের প্রায় দুই শতাধিক ফরম উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা ফরমের আবেদনকারীদের ছবি সংবলিত তথ্য ও বিআরটিএ’র মোটরযান পরিদর্শক আব্দুল মান্নান, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা নাঈমা বেগম, এনামুল হক ইমন নামের কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর ও সিলমোহরের সিল রয়েছে। এসব গুরুত্বপূর্ণ ভুয়া নথি তৈরিতে ব্যবহৃত কম্পিউটার, প্রিন্টার ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

 

গ্রেফতার দালাল সদস্যরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গোয়েন্দা পুলিশকে জানান, তারা বিআরটিএ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সিলমোহরযুক্ত ও স্বাক্ষরিত পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট তৈরি করে সেগুলো দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি করে আসছিলেন। সারা দেশে ১৪২টি ড্রাইভিং লাইসেন্স স্কুল আছে এবং এদের অধিকাংশ এ ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত।

 

এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, নিয়মকে অনিয়মে পরিণত করে এই দালাল চক্র। বিআরটিএ’র কিছু অসাধু কর্মকতার সঙ্গে যোগসাজশ করে কোনো প্রকার ট্রেনিং ছাড়াই অদক্ষ ড্রাইভারদের লাইসেন্স তৈরি করে দিতো। এর ফলে লাইসেন্স পাচ্ছেন অদক্ষ ড্রাইভার, দিন দিন বাড়ছে দুর্ঘটনা।

 

এক প্রশ্নের জবাবে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ড্রাইভিং স্কুলগুলো প্রশিক্ষণের প্যাকেজ হিসেবে অনেক সময় লাইসেন্স করে দেওয়ার চুক্তি করে। এই সুযোগে বিভিন্ন অপরাধীচক্র লাইসেন্স করে নিচ্ছে। এর প্রমাণ আমরা পেয়েছি।

বিআরটিএ’র কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কয়েকজন কর্মকর্তার নাম আমরা পেয়েছি। তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং বিআরটিএ’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হবে। সূএ:জাগো নিউজ

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৯:৫০ | বুধবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com