| বৃহস্পতিবার, ০৩ এপ্রিল ২০১৪ | প্রিন্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিচারাধীন একটি মামলার নথি খুঁজতে বরিশালে গিয়েছেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। বুধবার বরিশালে গিয়ে জেলা জজ আদালতের রেকর্ড রুমে দিনভর কাটিয়েছেন। তবে নথি গায়েব হয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হন এ্যাটর্নি জেনারেল।
বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম জাহাঙ্গির বলেন, সম্ভবত সাঈদীর মামলার কোনো রেকর্ড খুঁজছেন তিনি। বুধবার সকালে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জেলা জজ আদালতের রেকর্ড রুমে প্রবেশ করেন। সেখানে তিনি দীর্ঘক্ষণ ছিলেন। এরপর কিছুক্ষণ আইনজীবীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে আবারও রেকর্ড রুমে যান। শেষ বিকেল পর্যন্ত তিনি নানা তথ্য ঘাটেন এমনটাই জানালেন রেকর্ড কিপার মিয়া সালাউদ্দিন।
জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী শান্তি কমিটির সদস্য এবং রাজাকারদের বিরুদ্ধে ১৯৭২ সালে দালাল আইনে মামলা করেছিল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যগণ। ওই মামলার সঙ্গে যোগসুত্র থাকতে পারে ভেবে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিচারাধীন মামলার তথ্য খুঁজছেন এ্যাটর্নি জেনারেল। যে কারণে এর আগে গত সপ্তাহে তিনি পিরোজপুরেও সাঈদীর মামলার বিষয়ে নানা তথ্য খুজেছেন বলে জানাগেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের ৮ মে পিরোজপুরের পাড়েরহাটের ব্রিজের উপর পাকসেনাদের সহায়তায় সাঈদীর নির্দেশে ইব্রাহিম কুট্টি হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এবং এই অভিযোগেই তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
তবে ইব্রাহীম কুট্টির হত্যার ঘটনায় স্বাধীনতার ঠিক পরপরই স্ত্রী মমতাজ বেগম ১৯৭২ সালের জুলাই মাসে তার স্বামী হত্যার দ্বায়ে পিরোজপুর থানায় একটি মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় হত্যার তারিখ দেখানো হয়েছে ১ অক্টোবর ১৯৭১ এবং ঘটনাস্থল হল নলবুনিয়া ইব্রাহীমের শ্বশুর বাড়ি যা প্রসিকিউশনের আনীত অভিযোগের সম্পূর্ণ বিপরীত।
মামলার আসামি হিসেবে অথবা পরিকল্পনাকারী হিসেবে স্বামী ইব্রাহীম কুট্টির হত্যার জন্য স্ত্রী মমতাজ বেগমের করা মামলার এজহারের কোথাও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নাম নেই। পিরোজপুর থানায় করা সেই মামলার নম্বর হল ৯। মমতাজ বেগমের করা ঐ মামলায় অন্ততঃ ৪ আসামি বিভিন্ন মেয়াদে জেল খেটেছেন। পিরোজপুর আদালত থেকে মামলাটি পরবর্তীতে বরিশাল আদালতে স্থানান্তরিত হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে সেই মামলার পরবর্তী নথিপত্র খুঁজতে বরিশালে গিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
আদালতের একাধিক তথ্যমতে, বুধবার ও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলা জজের সেশন কক্ষে অপেক্ষা করেন। তবে নথি না পেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর তিনি ক্ষুব্ধ হন বলে সূত্র জানিয়েছে। নথি গায়েব হয়ে যাওয়ায় বিস্ময় প্রকাশও করেন তিনি। যদিও মাওলানা সাঈদীর পক্ষের আইনজীবীগণ মমতাজ বেগমের করা মামলার এজাহারের সার্টিফাইড কপি বহু আগে ট্রাইব্যুনালেই জমা দিয়েছিলেন।
এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের বরিশাল সফরের বিষয়ে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন কাবুল জানান, মামলার তথ্যের কাজে স্যার (এ্যাটর্নি জেনারেল) এসেছেন। তবে কোন মামলার তথ্য সে বিষয়ে স্যারই ভালো বলতে পারবেন।
এ ব্যাপারে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, তিনি বরিশালে এসেছেন মালার তথ্যের কাজে। কিন্তু কোন তথ্য তা বলা যাবে না। পেয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাও বলা যাবে না।
Posted ১২:৪২ | বৃহস্পতিবার, ০৩ এপ্রিল ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin