| বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট ২০২২ | প্রিন্ট
স্বাধীনদেশ অনলাইন : দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা বরগুনায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পুলিশের লাঠিচার্জ আর স্থানীয় সংসদ সদস্যের সাথে অসদাচরণের অভিযোগ নিয়ে সরকার ও সরকারি দলের মধ্যে সমালোচনা চলছেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘটনাটিতে বাড়াবাড়ি হয়েছে উল্লেখ করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকে বরগুনা থেকে চট্টগ্রাম রেঞ্জে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
অথচ এ ঘটনার মাত্র ১৫ দিন আগে দক্ষিণাঞ্চলের আরেক জেলা ভোলায় একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে পুলিশের গুলিতে দু’জন নিহত (একজন ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আর অন্যজন পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান) হওয়ার ঘটনাতেও পুলিশের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা দেখা যায়নি।এ দুটি মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিরোধী দল প্রশ্ন তুললেও সরকার বা ক্ষমতাসীন দলের কোনো পর্যায় থেকে কোনো সমালোচনা তো নয়ই, বরং পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা এ ঘটনার জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেই উচ্ছৃঙ্খল আচরণের অভিযোগ করেছিলেন।
বাংলাদেশের বিরোধী দল ও মানবাধিকার সংগঠকরা বরাবরই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা দেয়া, লাঠিচার্জ করা কিংবা নির্দয় দমন-পীড়নের অভিযোগ করে থাকেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের দিক থেকে বরগুনার ঘটনার পর পুলিশের বিরুদ্ধে এমন সমালোচনাকে বিরল বলছেন মানবাধিকার সংগঠক নূর খান লিটন। ‘এখন সমালোচনা করছেন সরকারি দলের সমর্থকরাই। তারাই সামাজিক মাধ্যমে শোরগোল তুলেছেন কারণ তাদের ধারণাই হলো পুলিশ মারবে বিরোধীদের আর ক্ষমতাসীনদের অংশ হয়ে কাজ করবে। হুট করে সেটার ব্যত্যয় হওয়ায় তারা মেনে নিতে পারছে না,’ বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
বরগুনায় আসলে কী হয়েছিল?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন সাংবাদিক বলছিলেন, বরগুনায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে। ছাত্রলীগের সম্প্রতি হওয়া কমিটিকে গ্রহণ করেনি স্থানীয় এমপি ও আওয়ামী লীগের একাংশ। এসব নিয়েই কোন্দল ছিল চরমে, যার বহিঃপ্রকাশ হয়েছে ১৫ আগস্ট শোক দিবসের অনুষ্ঠানে। ওই অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে একপর্যায়ে নির্বিচারে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। লাঠিচার্জের বেশকিছু ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায় ইউনিফর্ম ছাড়া একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ পুলিশ সদস্যরা সামনে যাকে পাচ্ছেন তাকেই বেধড়ক মারছেন। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। তার সামনেই ছাত্রলীগের দু’গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছিল।
পরে পুলিশের লাঠিচার্জ আর একজন পুলিশ কর্মকর্তা শম্ভুর সামনে কথা বলার ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে এলে এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু করেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা। পরে দেশজুড়ে তাদের অনুসারীরা ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারণা শুরু করেন। যদিও ঘটনার পর স্থানীয় ছাত্রলীগ সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশের পক্ষেই বক্তব্য দিয়েছিল। তবে ওই ঘটনায় বাড়াবাড়ি ছিল বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে তিনি বলেছেন, তদন্ত হলেই বোঝা যাবে কারা বাড়াবাড়ি করেছে। বিষয়টি নিয়ে এখন তদন্ত করছে পুলিশ।
Posted ১২:৫২ | বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin