| সোমবার, ২৬ অক্টোবর ২০২০ | প্রিন্ট
মহামারি করোনা ভাইরাসের বিষাক্ত ছোবলে গত মার্চ থেকেই বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এরই ধারাবাহিকতায় শিক্ষার্থীদের এই মরণ ভাইরাসের সংক্রমণমুক্ত রাখতে কয়েক দফায় বাড়িয়ে ছুটি আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় এ ছুটি আরও বাড়তে পারে। এমনকি চলতি বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন দায়িত্বশীলরা।
তবে আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের। সেজন্য শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে অনিশ্চয়তাও কাটছে। এখন পুরোদমে চলছে নতুন বই ছাপার কাজ।
সূত্র জানায়, মুজিববর্ষ উপলক্ষে বইয়ের প্রচ্ছদে বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন ও সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের স্থিরচিত্র ক্যাপশনসহ ছাপানো হবে। সেজন্য কিছু ছবি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
মুদ্রণকারীদের জন্য বাড়তি অর্থের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রাথমিকের ১০ কোটি নতুন বইয়ের মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ বিভিন্ন উপজেলায় পাঠানো হয়েছে। নভেম্বরের মধ্যে বাকি বইও পাঠানো হবে।
আর মাধ্যমিকের ২৫ কোটির বেশি বই পাঠানো শিগগিরই শুরু হবে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ও মুদ্রণ ব্যবসায়ীরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে এনসিটিবি চেয়ারম্যান প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘পুরোদমে চলছে বই ছাপার কাজ।
জটিলতার কারণে একটু দেরি হলেও ডিসেম্বরের মধ্যে বই বিভিন্ন উপজেলায় পৌঁছানো হবে। কাগজ নিয়ে একটু জটিলতা তৈরি হয়েছে।
তবে তা সমাধানে কাজ করছে এনসিটিবি। আশা করি নির্ধারিত সময়ের আগেই বই দিতে পারবে তারা।’
এ দিকে, আগামী ১ জানুয়ারি থেকেই নতুন ক্লাস শুরু পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিসহ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীলরা এ বিষয়ে কথা বলেছেন।
শিক্ষামন্ত্রী সম্প্রতি বলেছেন, ‘করোনার কারণে সামনের দিনগুলোয় কি হবে সেটা আমরা জানি না। তবে জানুয়ারিতে নতুন ক্লাস শুরু করার পরিকল্পনা নিয়ে আমরা এগোচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সবগুলো বিষয় বিবেচনায় রাখছি। এখনো শিক্ষাবর্ষ বাড়ানোর কথা বলছি না। কারণ সামনে কি হবে সেটা আমরা বলতে পারছি না। আমরা এখনও ধরে নিচ্ছি জানুয়ারি থেকেই নতুন শিক্ষাবর্ষ চালু হবে।
জানুয়ারিতে নতুন ক্লাস শুরুর পরিকল্পনা নিয়ে আমরা এগোচ্ছি। জানুয়ারি থেকেই ক্লাসে যাবে শিক্ষার্থীরা।’
এনসিটিবি সূত্র জানায়, চলতি বছর নতুন বইয়ের কাগজের মানে পরিবর্তন এসেছে। বাস্টিং ফ্যাক্টর (বিএফ) ১৪ থেকে ১৬ করায় টনপ্রতি কাগজের দাম ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা বেড়েছে।
এতে মিলগুলোর কাছে মুদ্রণকারীরা নিম্নমানের কাগজ চাইলেও তারা দিতে রাজি হচ্ছে না। কারণ নিম্নমানের কাগজের ছাড়পত্র নেই। মিলগুলো সঠিক মাপের কাগজ না নিলে বিক্রি করছে না। এ নিয়েই জটিলতা তৈরি হয়েছে। এর সমাধান হলে আর প্রতিবন্ধকতা থাকবে না।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০ কোটি ২৫ লাখ ও মাধ্যমিকের জন্য ২৪ কোটি ৩৩ লাখ ৩৪ হাজার কপি নতুন বই ছাপা হবে। বই ছাপার জন্য মুদ্রণকারীরা প্রাথমিকে ৯৮ দিন ও মাধ্যমিকে ৬০ দিন সময় পাবে।
নির্ধারিত সময়ের আগেই বই ছাপানো শেষ হবে বলে জানিয়েছেন মুদ্রণকারীরা। এবার বইয়ের মান ঠিক রাখতে ‘ইনডিপেনডেন্ট ইন্সপেকশন’ ৫২টি প্রেসে মনিটরিং করতে ৫২ জন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে।
জানা গেছে, তাদের কাজ হবে প্রেসে নিম্নমানের কাগজ-আর্টপেপার যাতে না ঢুকতে পারে তা নিশ্চিত করা। এছাড়া ছাপা বইয়ের মান চেক করে ডেলিভারির অনুমতি দেবেন।
এরপর উপজেলায় বই পৌঁছানোর পর স্যাম্পল নিয়ে আবার তা পরীক্ষা করবেন। আগে প্রেসে সার্বক্ষণিক লোক রাখার কাজ করা হয়নি। এতে কাগজ বদলে গভীর রাতে নিম্নমানের কাগজে বই ছাপানো হতো। সেটা ঠেকাতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
Posted ১৪:৩১ | সোমবার, ২৬ অক্টোবর ২০২০
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain