| বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট
পদত্যাগের পরও মন্ত্রীদের দায়িত্ব পালন, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও আর্থিক সুবিধা প্রদান কেন বন্ধ করা হবে না তা জানতে চেয়ে মন্ত্রীপরিষদ সচিব মো. মোশারাফ হোসাইন ভূঁইঞাসহ ৪৯ জন পদত্যাগী মন্ত্রীকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন বিশিষ্ট সংবিধান ও আইন বিশেষজ্ঞ ড. তুহিন মালিক।
বুধবার তার পক্ষে সুপ্রীমকোটের্র আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ফ্যাক্স যোগে এ নোটিস পাঠান। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এ নোটিসের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কাছে মন্ত্রীরা একযোগে পদত্যাগ পত্র জমা দেন। পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার পরও মন্ত্রীরা নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ে দাপ্তরিক কাজ পরিচালনা করছেন। কিন্তু সংবিধানের ৫৮ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, মন্ত্রীরা রাষ্ট্রপতির হাতে পদত্যাগপত্র দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দিলে ওই পদ শূন্য হবে।
সংবিধান অনুযায়ী এখন আর তারা মন্ত্রী নন। কিন্তু তারপরও তারা প্রটোকলসহ সব ধরনের সরকারি সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করছেন। এটা অসাংবিধানিক ও বেআইনী বলেও উল্লেখ করা হয়।
নোটিশে সংবিধানের ৭ এর ক অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ দায়িত্ব পালন অসাংবিধানিক ও রাষ্ট্রদ্রোহিতা।
তিনি জানান, পদত্যাগের পর মন্ত্রীরা দায়িত্ব পালন করলে সংবিধানের ৭ক (১) ও খ অনুযায়ী তা হবে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ। একই সঙ্গে যারা অবৈধ মন্ত্রীদের নির্দেশ পালন করবেন সংবিধান অনুযায়ী তারাও অপরাধী হবেন। সংবিধানের ৭ক (১) ধারায় বলা হয়েছে, “কোন ব্যক্তি শক্তি প্রদর্শন বা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বা অন্য কোন পন্থায়-এই সংবিধান বা ই্হার কোন অনুচ্ছেদ রদ, রহিত বা বাতিল বা স্থগিত করিলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করিলে; কিংবা (খ) এই সংবিধান বা উহার কোন বিধানের প্রতি নাগরিকের আস্থা, বিশ্বাস বা প্রত্যয় পরাহত করিলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করিলে তাহার এই কার্য রাষ্ট্রদ্রোহিতা হইবে এবং ওই ব্যক্তি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে দোষী হইবে।
(২) কোন ব্যক্তি (১) দফায় বর্ণিত-(ক) কোন কার্য করিতে সহযোগিতা বা উস্কানি প্রদান করিলে; কিংবা কার্য অনুমোদন, মার্জনা, সমর্থন বা অনুসমর্থন করিলে -তাহার এইরূপ কার্যও একই অপরাধ হইবে।”
সংবিধানের ওই অনুচ্ছেদে মন্ত্রীদের পদত্যাগের বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের ওয়েব সাইটে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের নাম এখনো দেখা যাচ্ছে। অবিলম্বে ওই ওয়েবসাইট থেকে তাদের নাম সরিয়ে ফেলার জন্য নোটিশে বলা হয়েছে।
নোটিস পাওয়ার পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে হাইকোর্টে রিট করা হবে বলে নোটিসে বলা হয়েছে।
এদিকে একই বিষয়ে মঙ্গলবার আরেকজন আইনজীবী জুলফিকার আলী জুনু উকিল নোটিশ পাঠান।
প্রসঙ্গত, সোমবার মন্ত্রীসভার বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগের পর মঙ্গলবার মন্ত্রীদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন নিয়ে সাংবিধানিক প্রশ্নের মুখে পড়ে সরকার। আইনজ্ঞ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন মন্ত্রীরা পদত্যাগ করা মাত্রই তা কার্যকর হবে। পদত্যাগপত্র গ্রহণ বা নাকচ নিয়ে দায়িত্ব পালনের কোন সুযোগ সংবিধানে নেই। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই পদত্যাগ একটি আনুষ্ঠানিকতা। এটি সাংবিধানিক পদত্যাগ নয়।
অপরদিকে কয়েকজন মন্ত্রী দাবি করেছেন, পদত্যাগপত্রে তারা তারিখ উল্লেখ করেন নি। যে কারণে পদত্যাগপত্র সাংবিধানিকভাবে গ্রহণ না করা পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
Posted ০২:১৩ | বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০১৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin