| শুক্রবার, ২৪ আগস্ট ২০১৮ | প্রিন্ট
ডেস্ক রিপোর্ট : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় আইনি লড়াইয়ে হেরে এই মুহূর্তে কারাগারে রয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। পৃথক দু’টি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রয়েছেন নির্বাসনে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। আর এ নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে যাচ্ছেন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান এবং প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি।
ঈদ উপলক্ষে এই মুহূর্তে ঢাকায় অবস্থান করছেন শর্মিলা রহমান সিঁথি। এরইমধ্যে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে মিটিং করেছেন তিনি। ঈদের দিন ছোট মেয়েকে নিয়ে কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গেও দেখা করে এসেছেন সিঁথি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতি বুঝে দেশে ফিরবেন ডা. জুবাইদা রহমান— আপাতত এমনটিই পরিকল্পনা বিএনপির।
জানা গেছ, গত ১৮ আগস্ট গুলশানের একটি অভিজাত হোটেলে বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন শর্মিলা রহমান সিঁথি। ওই বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, বিএনপির নীতিনির্ধারকরা ধরেই নিয়েছেন হার্ডলাইনে থাকা সরকার নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেবে না। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও দেশে ফিরতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে জিয়া পরিবারের সম্পৃক্ততা ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ বিএনপির ভেতরে নানা প্রশ্নের জন্ম দেবে। তৃণমূল ও মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মনে সন্দেহ তৈরি হবে।
নেতাকর্মীদের এই সন্দেহ সংশয় দূর করার জন্যই জিয়া পরিবারের প্রতিনিধি হিসেবে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ও প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথিকে নির্বাচনের মাঠে নামাতে চান বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
জানা গেছে, দলের শীর্ষ নেতাদের এই সিদ্ধান্তের প্রতি পূর্ণ সমর্থন আছে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের। সে কারণেই ঈদুল আজহার কয়েকদিন আগে দেশে ফিরে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে রাজনৈতিক তালিম নিয়েছেন শর্মিলা রহমান সিঁথি। নিজের কিছু পরিকল্পনাও শেয়ার করেছেন তাদের সঙ্গে।
তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন— এমন গুঞ্জন গত কয়েক বছর ধরেই রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে ভেসে বেরিয়েছে। কিন্তু বরাবরই এই গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছেন খালেদা জিয়া। যখন তার কাছে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক সহকর্মীরা জানতে চেয়েছে, তখনিই তিনি বলেছেন, আমার পুত্রবধূ রাজনীতিতে সক্রিয় হবে— সেটা আমি জানি না, জানে অন্য লোক!
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, এবার খালেদা জিয়া নিজেই চাচ্ছেন জিয়া পরিবারের প্রতিনিধি হিসেবে ডা. জুবাইদা রহমান এবং শর্মিলা রহমান সিঁথি রাজনীতিতে সক্রিয় হোক। রাজনীতির ময়দানে তাদের নিয়ে কোনো বিতর্ক না থাকায় আগামী নির্বাচনে সাধারণ ভোটার ও দলের নেতাকর্মীর কাছে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে তারা সমাদৃত হবেন।
তাছাড়া সাধারণ ভোটার ও দেশবাসীর কাছে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি তুলে ধরার জন্য তার দুই পুত্রবধূ সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে বলে মনে করছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। ভোটাদের আবেগ কাজে লাগিয়ে এক দিকে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া, অন্যদিকে খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে জনমত তৈরির কাজে খালেদা জিয়ার দুই পুত্রবধূকে সম্পৃক্ত করতে চান বিএনপি নেতারা।
অবশ্য বিষয়টি নিয়ে এখনই খোলা-মেলা কথা বলতে নারাজ বিএনপির শীর্ষ নেতারা। তারা বিষয়টিকে সরাসরি স্বীকার করতে চাচ্ছেন না। তবে খালেদা জিয়ার দুই পুত্রবধূ যে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন, সে বিষয়টি প্রকারান্তরে স্বীকার করে নিচ্ছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রবীণ সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের কথা পরিষ্কার, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে তার নেতৃত্বেই আমরা নির্বাচনে যাব এবং সেই নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। আর বিএনপি নির্বাচনে গেলে নির্বাচনী প্রচারণায় সবাই অংশ নেবে।’ সূত্র : সারাবাংলা
Posted ২২:২২ | শুক্রবার, ২৪ আগস্ট ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain