| বুধবার, ২৮ মে ২০১৪ | প্রিন্ট
ডাঃ এ এম শাহজাহান
১৯৮৭ সালে কেনিয়ার নাইরোবিতে নিরাপদ মাতৃত্বের প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিশ্বব্যাপী মাতৃ অসুস্থতা ও মৃত্যুর ভয়াবহতা উপলব্ধি করে (বিশেষকরে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে) এসব মৃত্যু এবং অসুস্থতার হার কমিয়ে আনার উপর জোর দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে কায়রোতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক জনসংখ্যা উন্নয়ন শীর্ষক সম্মেলনের পর অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশও এতে সাড়া দেয় এবং এক্ষেত্রে বিভিন্ন কর্মসূচীর উপর জোর দেয়। কিন্তু সকল প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এক্ষেত্রে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়নি এবং এখনো বাংলাদেশে মাতৃত্ব আশানুরূপ পর্যায়ে নিরাপদ নয়।
নিরাপদ মাতৃত্ব প্রতিটি নারীর জন্মগত অধিকার। তাই অধিকারগত প্রশ্নেই প্রতিটি মা তার প্রয়োজনে নিরাপদ প্রসূতিসেবা পাওয়ার দাবি রাখেন।
বাংলাদেশে প্রতি বছর ২৮ মে “আন্তর্জাতিক নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস” পালন করা হয়। এই দিবসটি সরকার, ওজিএসবি ও অন্যান্য এনজিওগুলো বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে পালন করে থাকে। ২০১৩ সালে “নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস” – এ প্রতিপাদ্য হচ্ছে-
মাতৃমৃত্যু
গর্ভকালীন, প্রসবকালীন বা প্রসবের ৪২ দিনের মধ্যে গর্ভজনিত কারণে একজন মহিলার মৃত্যু হলে তাকে মাতৃমৃত্যু বলে। গর্ভের স্থানের (জরায়ুর ভিতরে বা বাহিরে) সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। তবে এই সময় কোন দুর্ঘটনাজনিত কারণে মৃত্যু ঘটলে তাকে মাতৃমৃত্যু ধরা হয় না। এই মৃত্যু সরাসরি গর্ভের কারণে অথবা গর্ভের কারণে কোন অবস্থার সৃষ্টি হয়ে বা জটিল হয়ে অথবা গর্ভের অভ্যাস্থাপনার কারণে হতে পারে।
“নিরাপদ মাতৃত্ব” হলো একটি পরিবেশ সৃষ্টি করা যেখানে একজন মহিলা-
– গর্ভবতী হবেন কিনা সে বিষয়ে নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন; এবং
– যদি তিনি গর্ভবতী হন তবে নিুলিখিত সেবাসমূহ নিশ্চিতভাবে পাবেন –
– গর্ভসংক্রান্ত জটিলতা প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে গর্ভকালীন সেবা ও প্রয়োজনে চিকিৎসা সুবিধা,
– প্রসবের সময় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীর সেবা,
– প্রয়োজনে অনতিবিলম্বে জরুরি প্রসূতিসেবা এবং
– প্রসব পরবর্তী প্রয়োজনীয় সেবা।
মাতৃমৃত্যু হার;
২০১০ সালে প্রতি ১০০,০০০ জীবিত শিশু জন্মের বিপরীতে ১৯৪ জন মা মারা যায় এবং ২০১০ সালে মাতৃমৃত্যুর হার -এর দিক থেকে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৪৫ তম।
বর্তমানে বাংলাদেশের মাতৃমৃত্যুরহার ১.৯৪/১০০০ জীবিত জন্ম।
মাতৃমৃত্যুর কারণসমূহ:
– রক্তক্ষরণ (Hemorrhage) – ৩১%
– একলাম্পশিয়া (Eclampsia) – ২০%
– বাধাগ্রস্থ প্রসব (Obstructive labour)- ৭%
– অনিরাপদ গর্ভপাত (Unsafe Abortion) – ১%
– অন্যান্য প্রত্যক্ষ কারণ (Other direct) – ৫%
– অন্যান্য অচিহ্নিত কারণ (Undetermined) – ১%
– পরোক্ষ কারণ (Indirect) – ৩৫%
প্রসব সংক্রান্ত কারণে মায়েদের দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা
১. তলপেটে প্রদাহ (PID)
২. রক্তস্বল্পতা
৩. পেরিনিয়াম ছিঁড়ে যাওয়া
৪. জরায়ু নেমে যাওয়া (Genital Prolapse)
৫. যোনিপথের সঙ্গে মুত্রথলির সংযোগ হয়ে যাওয়া (ভেসিকো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা – – VVF)
৬. যোনিপথের সঙ্গে মল/পায়ুপথের সংযোগ হয়ে যাওয়া (রেকটো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা – RVF)
৭. বন্ধ্যাত্ব ইত্যাদি।
Posted ১৭:০৫ | বুধবার, ২৮ মে ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin