নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, জনগণকে বাইরে রেখে যে বয়ান তৈরি করা হচ্ছে, সে বয়ান জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘টেইক ব্যাক বাংলাদেশ: নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এই কথা বলেন। গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে ভয়েস ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ভোটার রাইটস।
আমীর খসরু বলেন, অনির্বাচিত সরকারের সেভাবে সংস্কার করার কোনো সুযোগ নেই। যে সব বিষয়ে সবার ঐক্যমত আছে, সেটা তারা সংস্কার করতে পারে। আমাদের বিএনপির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সেভাবে কোনো আপত্তিও নেই। একমাত্র সে কয়টি সংস্কার, যার মাধ্যমে আমরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরতে পারি জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে।
বাকি সংস্কারের জন্য দেশের জনগণের কাছে ভোটের জন্য যেতে হবে উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, দলগুলো তাদের নিজস্ব প্রস্তাব নিয়ে জনগণের কাছে যাবে। জনগণ সিদ্ধান্ত দেবে, আগামী সংসদে সেগুলো পাস করবে, কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু জনগণকে বাইরে রেখে যে বয়ান তৈরি করা হচ্ছে সে বয়ান জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।
আওয়ামী লীগ একটা বয়ান দিয়ে ১৬ বছর এই দেশ শাসন করেছে উল্লেখ করে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সেই বয়ানের মাধ্যমে সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে জনগণের। জনগণকে বাইরে রেখে সে তার একটা বয়ান তৈরি করছে। এখন আমরা আশা করি, নতুন কোনো বয়ান আমাদের আর শুনতে হবে না। একমাত্র বয়ান হচ্ছে নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া। এই বয়ানের বাইরে যারা বিভিন্ন সময় দেশ শাসন করেছে, তাদের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে, বাংলাদেশ কোন পথে যাবে। তারেক রহমান (বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) সাহেব সংহতিকে ভালোভাবে ধরেছেন। তিনি কোনো দলকে চিন্তা করছেন না, পুরো দেশকে চিন্তা করছেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব উনার একটা বয়ান তৈরি করেছিলেন বাংলাদেশ কীভাবে চলবে। আবার স্বৈরাচারের একটা বয়ান ছিল। ফ্যাসিস্ট সরকার শেখ হাসিনার আরেকটা বয়ান ছিল যে, উন্নয়ন গণতন্ত্রের ঊর্ধ্বে চলে গেছে। উন্নয়ন আর গণতন্ত্র যে হাত ধরে চলে সেটা সে বিশ্বাস করে নাই। গণতন্ত্রের মাধ্যমে উন্নয়ন হবে। উন্নয়নের মাধ্যমে গণতন্ত্র হয় না। ফ্যাসিস্টরা সবসময় উন্নয়নের কথা ব্যবহার করে।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, বিএনপির জন্য সংস্কার কোনো নতুন বিষয় না। ছয় বছর আগে খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ ঘোষণা করেছেন। এক বছর আগে তারেক রহমান ৩১ দফা সংস্কার ঘোষণা করেছেন। এটা বিএনপি একা করেনি। আমাদের যুগপৎ আন্দোলনে যারা ছিল, তাদের সবাইকে নিয়ে করেছেন। বিএনপি একা তো বাংলাদেশ না, সবাইকে নিয়েই বাংলাদেশ। এটার বাইরে ছিল শুধু আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী অধ্যাপক ড. এম মুজিবুর রহমান বলেন, স্থানীয় সরকার থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় সরকার পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে যদি জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি অর্থাৎ নাগরিকদের এই প্রত্যক্ষ ভোট প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত হওয়ার মাধ্যমে প্রতিটি নাগরিকের সঙ্গে রাষ্ট্রের মালিকানার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। যখন একটি রাষ্ট্রে এটি প্রমাণিত হবে যে, কোনোভাবেই নাগরিকের ভোট ছাড়া জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়া সম্ভব নয় তখন বোঝা যাবে নাগরিকদের সঙ্গে রাষ্ট্রের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ভয়েস ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ভোটার রাইটসের আহ্বায়ক সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদারের সভাপতিত্বে ও সংগঠনের সদস্য সচিব হুমায়ুন কবির বেপারীর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
Posted ১৬:৩৯ | মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain