শনিবার ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

নতুনের কাছে হেরে যাওয়া ৪ নায়িকার গল্প

  |   রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট

image_63760_0

ঢাকা: ঢাকাই চলচ্চিত্রে এখন ডিজিটাল যুগ চলছে। আর তাই ছোট পর্দা, র‌্যাম্প মডেলিংসহ সংস্কৃতির নানা অঙ্গন থেকে প্রতিনিয়ত নতুন মুখ এসে যোগ হচ্ছে বড় পর্দায়। এমন কি অনেকেই চলচ্চিত্রে নিয়মিত হওয়ারও ঘোষণা  দিচ্ছেন। ঢাকাই চলচ্চিত্রের এ নবযৌবন দেখে নির্মাতারাও নতুন দিনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন, একদিন বাংলা চলচ্চিত্র ছিনিয়ে আনবে অস্কারের মতো পুরস্কার।
অন্যদিকে বাংলা চলচ্চিত্রের দুঃসময়ে যারা হাল ধরে ছিলেন, ছেড়ে যাননি সাধারণ মানুষের একমাত্র বিনোদনের মাধ্যমটিকে, আজ তারাই চলে যাচ্ছেন পর্দার আড়ালে। অতীতে তাদের নিয়ে অনেক বির্তক থাকলেও, ডিজিটাল চলচ্চিত্রের শুরুতে সবকিছু ঝেড়ে ফেলে আরেকবার নতুন করে শুরু করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নতুনদের সঙ্গে তারা আর পেরে ওঠেনি।
চলচ্চিত্রে নতুনদের কাছে পুরনোদের এই পরাজয়ের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেড়িয়ে এসেছে তারকাদের জানা-অজানা নানা তথ্য। তা বাংলামেইলের পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হলো-
মুটিয়ে যাওয়াই কাল হলো শাবনূরের

নব্বইয়ের দশকের শুরুতে এহতেশাম পরিচালিত ‘চাঁদনী রাতে’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আসেন শাবনূর। তারপর জুটি বাঁধেন প্রয়াত সালমান শাহের সঙ্গে। আর তাতেই সফলতা আসে তার ঘরে। কিন্তু হঠাৎ সালমানের চলে যাওয়াতে শাবনূরের ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়ে। সেই সংকট কাটিয়ে ওঠেন রিয়াজের সঙ্গে জুটি বেঁধে। পাশাপাশি ফেরদৌস, মান্না এমন কি হালের নায়ক শাকিব খানের সঙ্গে কাজ করেও সফল হন তিনি।
কিন্তু সবকিছু উলটপালট হয়ে যায় ডিজিটাল চলচ্চিত্রের আগমনে। তখন থেকেই শাবনূরের হাতে ছবির সংখ্যা কমতে থাকে। ২০১১ সালে শাবনূর অভিনীত মাত্র দুটি ছবি মুক্তি পায়। আর তাতেই চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সেই ধারাবাহিকতায় গত বছর অস্ট্রেলিয়া নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব নেয়া সর্ম্পকে সেই সময় শাবনূর বলেন, ‘চলচ্চিত্র ছাড়ছি না। অস্ট্রেলিয়াতে বছরে মাত্র তিন মাস থাকবো তাও ভাই-বোনদের জন্যে।’
তবে শাবনূর মুখে যাই বলুক না কেন, চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের মতে, মুটিয়ে যাওয়ার কারণে তাকে আর দর্শকরা গ্রহণ করছিলেন না। পাশাপাশি নতুন নায়িকাদের গ্লামারের কাছেও হার মানতে হচ্ছিল তাকে।
সম্প্রতি শাবনূর অভিনীত, মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘কিছু আশা কিছু ভালোবাসা’ ছবিটি মুক্তি পায়। এই ছবিতে শাবনূর পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন। একই পরিচালকের আরো একটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন, কিন্তু নানা কারণে ছবিটি আর করা হয়ে ওঠেনি।
সংসারেই হারালেন পূর্ণিমা

১৯৯৮ সালে জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘এ জীবন তোমার আমার’ ছবির মাধ্যমে নায়িকা হিসেবে পথচলা শুরু করেন পূর্ণিমা। এর আগে স্বপন চৌধুরী পরিচালিত ‘শত্রু ঘায়েল’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন শিশুশিল্পী হিসেবে।
প্রথম ছবিতে সাফল্য দেখাতে না পারলেও পরবর্তীতে নিজেকে শীর্ষ নায়িকার পর্যায়ে নিয়ে যান পূর্ণিমা। অভিনয় করেন শতাধিক ছবিতে। নিজ গুণেই দর্শক, ভক্ত আর চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের মন জয় করেছিলেন। কিন্তু বিয়ের পর হঠাৎ করেই সংসার জীবন নিয়ে ঝামেলা শুরু হয়। আর তাতেই হারাতে হয় এই নায়িকাকে। শেষ পযর্ন্ত চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন তিনি। পূর্ণিমার ঘনিষ্ঠজন এমনটাই জানান।
তবে শুধু কি স্বামী সংসারের জন্যেই চলচ্চিত্র ছেড়েছেন তিনি। না, এমনটি নয়। শেষদিকে পছন্দমতো গল্প আর চরিত্র না পাওয়াটা ছিল সবচেয়ে কষ্টের। পাশাপাশি নতুনদের প্রতি র্নিমাতাদের আকর্ষণও পূর্ণিমার চলে যাওয়ার পেছনে দায়ী। নতুন বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন পূর্ণিমা। কিন্তু খুব সাবলীলভাবে প্রস্তাবগুলো ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। আর এর কারণ হলো পছন্দ মতো গল্প না পাওয়া।
খালি মাঠে গোল দিয়ে ফিরে গেলেন রেসি

‘নীল আঁচল’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে ২০০৫ সাল থেকে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন রেসি। এরপর একে একে ‘এরই নাম ভালোবাসা’, ‘অবুঝ শিশু’, ‘চেহারা’ মতো অসংখ্য ছবিতে অভিনয় করেন নিজের অবস্থান তৈরি করেন রেসি।
ঢাকাই চলচ্চিত্রের নায়িকা সঙ্কটের মুহূর্তে রেসি নির্মাতাদের জন্যে আর্শীবাদ হয়ে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু সেই আর্শীবাদ কথা ভুলে গিয়ে প্রেমিকের হাত ধরে বিজ্ঞাপনে কাজ শুরু করেন। পাশাপাশি  চলচ্চিত্রেও টুকটাক কাজ করছিলেন। কিন্তু সেই প্রেমিককে বেশি দিন ধরে রাখতে পারেননি রেসি।
তাই ২০০৯ সালে ডিপজলের ছবিতে কাজ শুরু করেন। আর এর মাধ্যমেই নিজের ক্যারিয়ারের কফিনে শেষ পেরেকটি মারেন তিনি। চলচ্চিত্র থেকে দূরে সরে যান। সবশেষে গত বছর হঠাৎ করেই এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করে সংসার জীবন শুরু করেন। চলচ্চিত্র থেকে চলে যাওয়া প্রসঙ্গে রেসি বাংলামেইলকে বলেন, ‘কারো জন্য আমি চলচ্চিত্র থেকে চলে আসিনি। সাংসারিক ব্যস্ততার কারণেই মিডিয়া থেকে দূরে আছি। সুযোগ পেলে আবারো ভালো কাজ করবো।’
কিন্তু সমালোচকদের মতে, রেসির চলচ্চিত্রে উত্থান অনেকটা খালি মাঠে গোল দেয়ার মতো। কারণ রেসি যখন চলচ্চিত্রে আসেন তখন নায়িকা সংকট চরমে। আর তাই র্নিমাতার রেসিকে নিয়ে কাজ করতে বাধ্য ছিলেন। অন্যদিকে যখনই চলচ্চিত্রে সুবাতাস বইতে শুরু করেছে, তখন অনেক নতুন নায়িকা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে রেসির কপাল পুড়েছে।
শাকিবকে হারিয়ে দিশেহারা সাহারা

এক ব্যস্ত নায়িকা সাহারাও রেসির মতো অনেকটা ফাঁকা মাঠেই বল নিয়ে দৌড়েছেন। ‘রুখে দাঁড়াও’ ছবির মাধ্যমে সাহারার পথচলা শুরু। এর মধ্যে প্রায় ৫০টি ছবিতেই তার বিপরীতে ছিল শাকিব খান। আর তাই ব্যবসায়িকভাবে প্রতিটি ছবিই সফল হয়েছিল। কিন্তু যখনই নতুনদের আগমন শুরু হলো তখন থেকেই সাহারার আবেদন কমতে শুরু হলো। বর্তমানে এ নায়িকার হাতে কোনো ছবি নেই। সবশেষ উত্তম আকাশ পরিচালিত ‘ঢাকা টু বোম্বে’ ছবিতে অভিনয় করেছেন। ছবিতে তার বিপরীতে নায়ক ছিলেন শাকিব খান। আর তাই ছবিটি মোটামুটি ব্যবসা সফল হয়েছে।
বর্তমানে শাকিব খান জয়া আহসান, ববি ও মাহির সঙ্গে জুটি হয়ে একাধিক ছবিতে অভিনয়ে ব্যস্ত।
সাহারার এই দুঃসময়ে শাকিবও পাশে নেই। কারণ  শাকিব এখন জয়া আহসান, ববি কিংবা মাহির মতো নতুনদের সঙ্গে জুটিবদ্ধ হয়ে কাজ করতে বেশি আগ্রহী। পাশাপাশি নির্মাতারও নায়িকা হিসেবে সাহারাকে নিতে চাচ্ছেন না। কারণ দর্শক ডিমান্ড এখন অন্যদিকে।
এ বিষয়ে সাহারা বাংলামেইলকে বলেন, ‘অনেক ছবিরই তো প্রস্তাব আসছে। তবে সেসব ছবির গল্প নির্মাতা ভালো না লাগার কারণে করছি না। যে মানের ছবিতে আমি অভিনয় করেছি তা না পেলে চলচ্চিত্র ছেড়ে দেবো।’ অর্থ্যাৎ সাহারা ক্যারিয়ারের এখানেই সমাপ্তি ঘটেছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ২২:০৮ | রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৩

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com