প্রথমবার সিনেমা প্রযোজনা করে বাজিমাত করেছেন অভিনয়শিল্পী জয়া আহসান। মুক্তির আগে থেকে তাঁর অভিনীত ও প্রযোজিত ছবি ‘দেবী’-এর প্রচারণা আর বিপণনে নতুন এক ভেলকি দেখেছেন দর্শকেরা। মুক্তির পর প্রশংসা কুড়িয়েছে ছবিটি, ব্যবসায়িক সফলতাও পেয়েছে। চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, এ বছরের অন্যতম আলোচিত ও ব্যবসাসফল সিনেমা ‘দেবী’।
সেই সাফল্যের রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন ছবির নাম ঘোষণা করলেন জয়া আহসান। গুণী এই অভিনয়শিল্পীর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সি-তে সিনেমা থেকে এবার নির্মিত হবে ‘ফুড়ুৎ’। আজ শনিবার তেমনটাই জানালেন জয়া আহসান।
প্রথম ছবিটি কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ‘দেবী’ উপন্যাস অবলম্বনে বানিয়েছিলেন জয়া। তবে এবার তিনি একেবারে মৌলিক গল্পের পথে হাঁটছেন। ‘ফুড়ুৎ’ সিনেমার প্রি-প্রোডাকশনের কাজ শুরু হয়েছে। অভিনয়শিল্পী, গল্প, পরিচালক, কলাকুশলীসহ অনেক কিছু নির্ধারণ হয়ে গেলেও এসবের কিছুই এখন বলতে চাইলেন না জয়া। তবে ইঙ্গিত দিয়েছেন, নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নতুন ছবিতে অভিনয় করতে চাইছেন না তিনি। জয়া বললেন, ‘আমি না থাকার চেষ্টা করছি। ছবির গল্পের সঙ্গে মানানসই কাউকে পেলে আমি থাকব না। গল্পের কথা মাথায় রেখে কয়েকজন অভিনয়শিল্পীর সঙ্গে কথা বলেছি। কথাবার্তা চালিয়ে যেতে হচ্ছে। কাউকে চূড়ান্ত করিনি বলে এখনই কিছু বলতে চাচ্ছি না।’
জয়া আহসান মনে করছেন, একটি ছবির শুটিং শুরুর আগে প্রি-প্রোডাকশন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই সেদিকটায় বেশি মনোযোগী তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিদেশে কাজ করে দেখেছি, প্রি-প্রোডাকশনকে তাঁরা অনেক গুরুত্ব দেন। একটি ছবির শুটিং শুরুর আগে প্রি-প্রোডাকশনেই অনেক বেশি সময় প্রয়োজন। আপাতত কাজটা আগে মন দিয়ে করতে চাই।’
নতুন ছবির বিষয়বস্তু নিয়ে তিনি বলেন, ‘এই ছবিটি কমেডি, ড্রামা, নস্টালজিয়া, ড্রিমস কাম ট্রু—এক কথায় এটি একটি আধুনিক রূপকথা। কিন্তু মানুষগুলো আসল। এর বেশি আর কিছু এখনই বলতে চাই না।’
জয়া আহসান প্রযোজিত ‘দেবী’ এখনো দেশে ও দেশের বাইরের দুই একটি প্রেক্ষাগৃহে চলছে। ব্যবসায়িকভাবে সফল ও দর্শকপ্রিয়তার কারণেই কি এত দ্রুত নতুন ছবি প্রযোজনার সিদ্ধান্ত? জয়া বলেন, ‘নিঃসন্দেহে “দেবী” আমাকে অনেক বেশি অনুপ্রাণিত করেছে। আমি কিন্তু প্রতিটি কাজ সিরিয়াসলি করি। অভিনয় যখন করেছি, সেটা খুব মন দিয়েই করেছি। যখন প্রযোজনায় এসেছি, সেটাও সিরিয়াসলি করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। সফল হব কি না, তা আমার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে আরও দুই-তিনটা ছবি মুক্তির পর বোঝা যাবে। একটা সিনেমা দিয়ে বোঝা যাবে না, আমি সফল কি না। প্রযোজনায় এসে দেখলাম, বাংলাদেশে ছবি সফল করানো ভয়াবহ কঠিন কাজ। সেই কঠিন কাজটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। অভিনয়কে যেমন সিরিয়াসলি নিয়েছি, প্রযোজনাটাও সিরিয়াসলি করতে চাই। যদি সবার সহযোগিতা পাই, তাহলে এখানে থাকব। ইচ্ছে আছে প্রতিবছর অন্তত একটা করে সিনেমা প্রযোজনা করার।’
সাফল্য বলতে আপনি কী বোঝেন? এ প্রশ্নে জয়া বলেন, ‘সাফল্যকে দুইভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। শুধু ব্যবসাসফল ছবিই ভালো ছবি, এটা আমি বিশ্বাস করি না। ছবির শিল্পমান, গুণগত মান থাকতে হবে। কোনো কোনো ছবি শিল্পমান ও গুণগত মানসম্পন্ন, কিন্তু সেটা ব্যবসায়িকভাবে সফল হলো না, সেটাও কিন্তু আমার কাছে সফল সিনেমা। শুধু ব্যবসাসফল ছবি হলেও সেটা সফল না।’
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সংবাদ সম্মেলন করে ছবিটির বিস্তারিত তুলে ধরবেন জয়া আহসান। আগাম এতটুকুই জানিয়েছেন, এ ছবিতে আউটডোর শুটিং বেশি। তাই আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে শুটিং পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ইচ্ছে আছে গ্রীষ্মের সময় ছবিটির শুটিং শুরু করার।